অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে সম্প্রতি মঞ্চস্থ হলো প্রয়াত নাট্যকার মনোজ মিত্রর রচনা ‘দর্পণে শরৎশশী’। গ্রামবাংলার আবহে এই নাটকের প্রদর্শনী সিডনির প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে সংস্কৃতির প্রতি এক নতুন উদ্দীপনা জাগিয়ে তুলেছে। নাটকটি উপস্থাপন করেছে সিডনির জনপ্রিয় নাট্যদল আঙ্গিক থিয়েটার, যা শহরের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী থিয়েটারচর্চাকে জীবিত রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
গ্রামীণ আবহে নতুন এক মঞ্চস্থাপনা
সিডনির উপকণ্ঠের বেলাভিস্তার একটি খামারবাড়িতে এই নাটকটির প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়। খোলা মাঠের মধ্যে টিনের চাল দিয়ে তৈরি বৈঠকখানা-ধাঁচের একটি মঞ্চে নাটকটি পরিবেশিত হয়। দর্শকেরা গোল হয়ে বসে উপভোগ করেন নাটকের প্রতিটি দৃশ্য। এমন ভিন্নধর্মী আয়োজন প্রবাসী বাঙালিদের মনে স্মৃতির ঝড় তোলে।
নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন বিশিষ্ট নাট্যকর্মী রাহুল গাঙ্গুলি। অভিনয়শিল্পী হিসেবে অংশ নেন দুই বাংলার সিডনিপ্রবাসী বাঙালিরা। স্বপ্না মজুমদার, তুষার তাসু, সৌনক মিত্র, শান্তনু, সাইমন পাল, তসলিম আহমেদসহ ২০ জনের বেশি শিল্পী এতে অংশ নেন। নাটকের ‘চুড়োমামা’ চরিত্রে বিশেষ প্রশংসা কুড়িয়েছেন সাইমন পাল।
বাংলা সংস্কৃতির প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি
সাইমন পাল বলেন, “দ্রুতগতির ইন্টারনেটের যুগে মানুষ যখন পর্দায় বন্দি, তখনও মঞ্চনাটক জীবন্ত বিনোদন হিসেবে বাঙালির হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পারে। আমরা সিডনিতে বাংলা সংস্কৃতির আলো ছড়াতে চাই এবং ভবিষ্যতে এটি আরও বড় পরিসরে নিয়ে যেতে আশাবাদী।”
নাটকটি দেখতে আসা দর্শক নাহিদ রূপসা নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, “উন্মুক্ত পরিবেশে এমন মঞ্চনাটক সত্যিই ব্যতিক্রমী। গ্রামবাংলার আবহে মঞ্চের পরিবেশ এতটাই নিখুঁত ছিল যে মুহূর্তে ভুলেই গিয়েছিলাম আমি সিডনিতে, মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের কোনো মফস্বলে বসে আছি।”
সাংস্কৃতিক জাগরণ
এই আয়োজন প্রমাণ করে, প্রবাসেও বাংলা সংস্কৃতির চর্চা থেমে নেই। সিডনির মতো শহরে এমন ভিন্নধর্মী থিয়েটারের আয়োজন প্রবাসী বাঙালিদের মাঝে সাংস্কৃতিক বন্ধন আরও দৃঢ় করছে। ‘দর্পণে শরৎশশী’-এর মতো উদ্যোগ ভবিষ্যতে বাংলা নাট্যধারাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও উজ্জ্বল করতে পারে।