রোববার সচিবালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো: নাহিদ ইসলাম দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিকের সাথে বৈঠকে দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নিরাপদ, স্থিতিশীল, ও কার্যকর ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বিশেষ করে বিনিয়োগ আকর্ষণের মাধ্যমে দেশের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দেয়া হয়েছে।
নাহিদ ইসলাম জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হলো বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগের প্রসার ঘটিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। তিনি বলেন, দেশে চলমান রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে অর্থনৈতিক সংস্কারও বাস্তবায়ন করা হবে। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার কর কাঠামোসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করবে।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক জানান, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে চতুর্থ বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ। স্যামসাং ও এলজি’র মতো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো ইতিমধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে, তবে উৎপাদন খরচের কারণে তারা কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। কর কমানো হলে দেশীয় উৎপাদন খরচ কমে আসবে এবং বিনিয়োগকারীদের স্বস্তি ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে বলে তার মত।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (NEIR) কার্যকর হলে অবৈধ মোবাইল ফোনের প্রবেশ ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে, যা দেশীয় প্রযুক্তি খাতের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। রাষ্ট্রদূত যৌথ বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এই উদ্যোগগুলো দেশীয় শিল্পের বিকাশে অবদান রাখতে পারে বলে তিনি আশা করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “কর কমানোর বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত। অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রক্রিয়ায় কর কমানোর বিষয়টি বিবেচনায় আনা হবে যাতে কর্মসংস্থান এবং দেশীয় শিল্প উভয়েরই উন্নয়ন সাধিত হয়।”
তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, সরকার স্থানীয় প্রস্তুতকারক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছে। এর ফলে অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদন এবং রপ্তানির জন্য একটি সমৃদ্ধ পরিবেশ গড়ে উঠবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মুশফিকুর রহমান দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতকে সরকারি প্রতিষ্ঠান টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস) লিমিটেডে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশের প্রযুক্তি খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে ও দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সরকারি পর্যায়ের এই উদ্যোগগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এ বৈঠক উভয় দেশের জন্য ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও মজবুত করার পাশাপাশি একটি নতুন যুগের সূচনা করতে সহায়তা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।