Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

অবশেষে অবহেলিত স্ত্রীর প্রতিশোধ-৩

শহরে আসার পর অমিত একটা ট্রাভেলিং গ্রুপে যোগ দিয়েছিল। গ্রুপটার সবাই ভ্রমন পিয়াসু ছিল। প্রকৃতি তাদের টানতো। গাছপালা, সবুজ প্রকৃতির মাঝে সবাই হারিয়ে যেত। মাঝে মাঝে পায়ে হেঁটে পাহাড়ে আরোহন করতো। গ্রুপে তাদের মতোই তরুণ দম্পতিরা ছিল। বছরে এক-দুইবার তারা দুরে কোন এক অজানা জায়গায় দল বেঁধে চলে যেত গ্রুপের সবাই মিলে। সেখানে তারা পায়ে হেঁটে ট্রাভেল করতা। এবার তারা পাহাড় দেখতে এসেছে। আবহাওয়া ঠান্ডা, কোথাও কোথাও বৃষ্টিও হয়েছে।

দলটিতে অমিত-বীণার মতো তরুণ দম্পতিরাও ছিল, যাদের কেউ কেউ সদ্য বিবাহিত। গ্রুপটি ছিল হাসিখশিতে ভরপুর। গ্রুপের বেশিরভাগই প্রথম সাক্ষাতে বীণাকে পছন্দ করলেও অমিতকে ততটা পছন্দ করেনি।

অল্পক্ষণের পরিচয়ে বীণা আর অমিতের মধ্যে কেমন দাম্পত্য সম্পর্ক গ্রুপের সবাই মোটামুটি জেনে ফেলে। সবকিছু জানারপর গ্রুপের অনেকেই বীণার প্রতি করুণা আর ক্ষোভ দুটোই অনুভব করে। কিভাবে অমিতের মতো জংলী অভদ্রের সাথে মানিয়ে নিয়ে আছে মেয়েটা ভেবে পায়না।

গ্রুপের কেউ কেউ অবশ্য ভেবেছিল বীণাকে পরামর্শ দিবে যেন অমিতকে ছেড়ে সে নতুন করে নিজেকে নিয়ে ভাবে। অতিত তার যোগ্য নয়। এক অযোগ্য পাষন্ড। কিন্তু এ বিষয়ে আর কেউ তেমন কিছু বলেনি। কারণ এই ভ্রমনটি ছিল সপ্তাহ খানিকের ব্যাপার মাত্র। তারপর যে যার মতো তাদের নিজের সংসারে ফিরে যাবে। তবে বেশিরভাগই অমিতকে বিরক্তিকর মনে করছিল।

গ্রুপের সবাই একটা ছোট পাহাড় আরোহন করছিল আর অন্য একটি বড় পাহাড়ে ওঠার প্লান করছিল। ওই পাহাড়ে সুন্দর মন্দিরের মতো কিছু একটা ছিল যা ওরা দেখার জন্য উদগ্রীব ছিল। কিন্তু যাওয়ার পথটি মসৃণ ছিলনা। আচমকা বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়ায় পাহাড়ের পাদদেশে তারা আশ্রয় নিল, যদিও তারা জানে বৃষ্টিটা খুব বেশিক্ষণ হবে না। হালকা ধরনের বৃষ্টি। তবু্ও এই হালকা বৃষ্টিতেও মাটি পিচ্ছিল হয়ে যাচ্ছিল বলে তাদের দলের কেউই সামনে এগুনোর ব্যাপারে রিক্স নিতে চায়নি শুধু অমিত বাদে।

“আরে ভাই, কি হলো, আসেন সবাই। আমারা কি এখানে তাঁবু খাটিয়ে তাস খেলতে আসছি নাকি? আসেন আসেন।” ততক্ষণে গ্রুপের অনেকেই তাঁবু খাটিয়ে তাস খলতে বসে গেছে। তারপরেও অমিত সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো,“আরে উঠুন উঠুন, এটা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি! এটা কোন বৃষ্টি হলো নাকি!”

“আরে অমিত ভাই, আপনি কি পাহাড়ি রাস্তা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। অল্প বৃষ্টিতেই এই রাস্তাগুলা পিচ্ছিল আর কাদা হয়ে যায়।” বলল গ্রুপের রোজী আক্তার নামের এক মহিলা যিনি তার স্বামী বাবলুর সাথে এই ভ্রমনে সঙ্গী হয়ে এসেছেন। রোজী অবশ্য অমিতকে ততটাই অপছন্দ করে যতটা সে বীণা কে পছন্দ করে।

রোজীর কথা শুনে অমিতের মন খারাপ হয়ে গেলে।

রোজীর স্বামী বাবলু বললো, “ভাই আমার এখন আর কথা বলার জো নেই। হাঁটতে হাঁটতে আমরা সবাই অনেকটা টায়ার্ড।

অমিত গ্রুপের ক্যাপ্টেনের দিকে তাকিয়ে একটু দমে গেল।

“অমিত, আমারও মনে হয় ওরা ঠিকই বলছে। বৃষ্টি থামা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারি। তারপর বৃষ্টি থামলে পাহাড়ে উঠবো না হয়।” বীণা বলল।

সকলকে হতবাক করে দিয়ে অমিত ঘুরে বীণার মুখে কষে একটা থাপ্পড় মারল। বীণার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি গড়ে পড়লো। তারপরেও বীণা নিজেকে স্থির রাখে।

“তোমার কাছে কি আমি কোন পরামর্শ চেয়েছি?”  অমিত বলেই সোজা পাহাড়ের উপরে উঠতে লাগলো কাউকে কিছু না বলে।

বাবলু এগিয়ে গেলেন অমিতের দিকে, কিন্তু আবার থেমেও গেলেন যখন বীণা তার মাথা নাড়লো। তারপর বীণা জোর করে মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলে তার স্বামীর পিছন পিছন পাহাড়ে উঠতে লাগলো।

“আপনি কোথায় যাচ্ছেন?” দলনেতা দেবশীর্ষ অমিত কে ডাকলেন।

“মন্দিরের দিকে” অমিত উত্তর দিল।

“আরে ভাই অমিত….” দেবার্শীষ পিছু ডাকলো। কিন্তু সবাই জানতো অমিত কারো কথা শুনবে না।

গ্রুপের মধ্যে অমিত একরোখা চাষাড়ে আর ব্যবহার ছিল ষাঁড়ের মতো। বীণার জন্য গ্রুপের সবার করুণা হয়। এই পৃথিবীর অসংখ্য স্ত্রীর মতো সেও স্বামীকে অনুসরণ করে; যারা স্ত্রী নামের যৌন দাসী হয়ে অমিতের মতো স্বামীদের সাথে নিজের জীবন পার করে দেয় বীণাও তাদের মধ্যে একজন।  …….(চলবে)

Related Posts

29 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No