আমাদের ছোট বেলা
শৈশবে বৃষ্টির দিনে স্কুলে যাওয়ার সময়,ইচ্ছে করেই ছাতা নিতাম না।তার উপর কাঠের হাতাওয়ালা ছাতা।তাও আবার এক বেলা আমার,একবেলা দাদার।
আর কোন রকম যদি একটা কোনা ছুটে গেল তো,কত কথা!আমি ছাতাটা ধরলেই নাকি ভেঙে ফেলি!মনে হয় ঘি আর মাখনের ছাতা যত্তসব!এর চাইতে পলিথিনে জামা কাপড় আর বই এক সাথে ঢুকিয়ে দে দৌড়!
এমনিতেই আমাদের সহপাঠীরা একে অপরকে জুতা ব্যবহার করতে দিতাম না।
কেউ যদি জুতা নিয়ে স্কুলে আসে,তবে তার ফিতা না ছেড়া পর্যন্ত নাছোড়বান্দা হয়ে লেগে থাকতাম! না দেখার ভান করে পা মেরে দিতাম,ব্যাস এবার পায়ের জুতা বগলে নেও!
এই বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি জমে যেতো।মেয়েরা সারা বছর ছাতা ব্যবহার করতো।রোদ বৃষ্টি আর কাকের পায়খানা থেকে বাঁচার জন্য হয়ত।নইলে সারাবছর কেউ ছাতা ব্যবহার করে?
ইচ্ছে করেই সবাই সবাইকে পানি মারতাম।
ক্লাসের সব চাইতে রাগি মেয়েটিকেও ছাড় দিতাম না। কেউ কেউ বলে উঠতো,ওরে বাবা রে জোঁক!!
মিছে ভয় দেখানো।
এসবের মধ্য ছিল অনেক আনন্দ”
কে কাকে পানি দিচ্ছে ধুলায় অন্ধকার!
এই বর্ষায় কদম ফুলের খেলাটাও ছিল চমৎকার।কোন কোন বন্ধু বানরের মত ঝুলে ঝুলে কদম ফুল পেরে দিত।
আর গাছে উঠতে পারার গর্ভে তাদের বুক ভরে যেতো।
স্কুল ছুটির পর বৃষ্টি নামলে ফুটবল খেলা হতো।ফুটবল না থাকলে পলিথিনের বল নিয়েই খেলা শুরু হতো।
আমাদের পরিপূর্ন একটা বৃষ্টিভেজা শৈশব ছিল।
বর্ষাকালে স্কুল জীবনটা ছিল বেশ স্মৃতিময়।
আমরা কি পারবো বা পারছি,আমাদের সন্তানদের এমন শৈশব উপহার দিতে?
তারা শুধু বইপোকা হয়ে কীটপতঙ্গের মত বেড়ে উঠছে!
না আছে শৈশব,না আছে বর্ষা!
না আছে স্মৃতি!পোস্ট গুলো লিখতে কস্ট হয়,কিন্তু কেউ যখন এই পোস্ট দিয়ে কিছু জানতে পারে তাহলেই এই কস্টো থাকে না,
আর শেয়ার করে অন্যকেও পড়ার সুজোগ করে দিন।