আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি। আজকের বিষয়ঃ গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা । তো আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা
গর্ভাবস্থায় সব সময় পুষ্টিকর খাবার দাবার খাওয়া প্রয়োজন। গর্ভবতী মা এবং গর্ভের সন্তানকে সুস্থ রাখতে পুষ্টিকর খাবারের ভূমিকা অপরিসীম। গর্ভাবস্থায় প্রথম মাস থেকেই খাবারের একটি তালিকা করে নেওয়া উচিত এবং সেই তালিকা অনুযায়ী কোন মাসে কোন ধরনের খাবার খেলে গর্ভের সন্তান সুস্থ থাকবে, বিকাশ ঘটবে সেই অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করা উচিত।
আমরা জানি, গর্ভের প্রথম তিন মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে যেমন প্রেসারের সমস্যা, ব্লিডিং ইত্যাদি।
গর্ভের প্রথম তিন মাস শর্করা জাতীয় খাবার, ফাস্টফুড ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে। গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস লবণাক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা কারণ লবণাক্ত খাবারে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ক্যাফেইন যুক্ত খাবার যেমন চা-কফি ইত্যাদি শরীরে আয়রন শোষণে বাধা দেয় তাই গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস এগুলো থেকে বিরত থাকা উচিত।
১ম মাস- গর্ভের প্রথম মাসে প্রচুর পরিমাণে ফল ও শাকসবজি খাওয়া উচিত। এছাড়াও দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ফলিক এসিড শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের যথাযথ বিকাশ সাধন করে।
ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবারগুলো হল- বিভিন্ন প্রকার গাঢ় সবুজ শাকসবজি, পালংশাক, বাঁধাকপি, মটরশুটি, মসুর ডাল, শতমূলী ইত্যাদি। এছাড়াও শিশুর স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি ও উন্নয়নে কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি খাওয়া উচিত।
২য় ও ৩য় মাস
গর্ভের দ্বিতীয় ও তৃতীয় মাসে ভ্রুণের যথাযথ বৃদ্ধির জন্য হাস ও মুরগির ডিম, মাংস, মাছ, রঙ্গীন সবজি, বিভিন্ন প্রকার বীজ ও বাদাম প্রভৃতি খাওয়া উচিত। হাঁস ও মুরগির ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন এ, বি২, বি৫, বি১২,ডি, ই, কে, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম এবং জিংক ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে।
মাংসে ভিটামিন বি, প্রোটিন, জিংক ও লৌহ থাকে। তাই লৌহের অভাব পূরণের জন্য গর্ভাবস্থায় মাংস খাওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় পুষ্টির জন্য মাছ একটি অন্যতম খাবার। মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন বি 2, ডি ও ই এবং পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, আয়োডিন, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস।
মাছের মধ্যে বিদ্যমান ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড গর্ভের সন্তানের মস্তিষ্ক ও চোখের পুষ্টি জোগায়। গর্ভের সন্তানের রক্ত গাঢ় করতে চর্বিহীন মাংস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শস্য জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন এবং ভিটামিন পাওয়া যায় তাই গর্ভাবস্থায় ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত কারণ এ সময়ে রক্তের পরিমাণ 45 শতাংশ বেড়ে যায় তাই শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা একান্ত প্রয়োজন।
এছাড়াও গর্ভের প্রথম তিন মাস প্রচুর পরিমাণ ঘুম দরকার কারণ এ সময় প্রচুর শারীরিক পরিবর্তন ঘটে তাই পরিমিত পরিমাণে ঘুম না হলে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়।
পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।