মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপনের মধ্যে অন্যান্য কাজের মতোই ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তারদের মতে, একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক আট ঘণ্টা ঘুমের দরকার। অনেকে আছেন রাতে টেলিভিশন দেখে, গল্প-গুজব করে ঘুমাতে যান দেরি করে। অনেকে মনে করেন কয়েক ঘণ্টা ঘুমিয়েও তো দিনে ভালোভাবে কাজ করা যায়, তাহলে এতো ঘুমানোর কী দরকার।
তবে অপর্যাপ্ত ঘুমের প্রভাবে আমাদের বেশ কিছু সমস্যা হয়। এই সমস্যাগুলো কিন্তু এক বা দুই দিনের অপর্যাপ্ত ঘুমের জন্য খুব একটা বোঝা যায় না। তবে আপনি যদি রাতের পর রাত অপর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান। তাহলে প্যারানোয়া, হ্যালুসিনেশন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ইন্দ্রিয়গত সমস্যা দেখা দিবে। সবথেকে বড় কথা রাতে একটি ভালো ঘুমের দরকার তা নতুন করে বোঝানোর মতো কিছু নেই। আসুন জেনে নেয় যাক ভালো
প্রচণ্ড ক্ষিপ্ততা :
অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে আপনার মানসিক বেশ একটা পরিবর্তন দেখা যাবে। মনে হতে পারে ঘুমানো দরকার বা কারো সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছা করবে না। কিন্তু যখনই কোনো কাজ আপনার মনের মতো হবে না তখন আপনি হঠাৎ করে অনেক শক্তি পেয়ে যাবেন এবং ক্ষিপ্ত হয়ে উঠবেন। এটা মূলত অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে হয়। এই ক্ষিপ্ততা চরম পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে যদি আপনি নিয়মিত কম ঘুমান।
মস্তিষ্কের কোষের মৃত্যু :
সারা দিনের ব্যস্ততার প্রভাব রাতে ঘুমের ক্ষেত্রেও পড়তে পারে। বিছানায় শুয়ে শুয়ে অনেকে কাজের পরিকল্পনা করতে থাকেন। যা আপনার মস্তিষ্ককে ধীরে ধীরে অকেজো করে দিচ্ছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটি প্রমাণিত যে, দীর্ঘদিন ধরে অপর্যাপ্ত ঘুমের ফলে মস্তিষ্কের প্রায় ২০% অকেজো হয়ে পড়ে। বা প্রায় ২০ শতাংশ মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
খাদ্যাভ্যাস :
অপর্যাপ্ত ঘুমের ফলে দিনের বেলা তন্দ্রা আসতে থাকে। এই তন্দ্রার ওপর আমাদের একপ্রকার নিয়ন্ত্রণ থাকে। তখন এই তন্দ্রা এড়ানোর জন্য আমরা বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করি। কেউ অনিয়মিত খাবার গ্রহণ করেন। কেউ বেশি বেশি সিগারেট খেতে থাকেন, যাতে করে ঘুমের তন্দ্রা না আসে। মূলত, এটি একটি বাজে খাদ্যাভ্যাস তৈরি করে।
ঝুঁকিপূর্ণ অনুভূতি :
অপর্যাপ্ত ঘুম কি মানুষের অনুভূতিকে প্রভাবিত করে? হ্যাঁ, করে। এবং খুব খারাপভাবে অপর্যাপ্ত ঘুম আমাদের অনুভূতিকে প্রভাবিত করে। একটি গবেষণার মাধ্যমে এটি প্রমাণিত যে, নিয়মিত অপর্যাপ্ত ঘুমের ফলে মানুষের অনুভূতির সংবেদনশীলতা কমে যায়।
দুর্ঘটনা :
অপর্যাপ্ত ঘুমের ফলে সকালে যখন আপনি গাড়ি বা বাইক চালিয়ে অফিসে যান, তখন ঘুমের তন্দ্রা আসতে পারে এবং যা থেকে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। যা অনেক সময় আপনার মৃত্যুর কারণও হয়ে উঠতে পারে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান।
পরিকল্পনাহীনতা :
প্রায় ৩৬ ঘণ্টা যদি আপনি না ঘুমিয়ে কাটান তাহলে আপনার মস্তিষ্ক কোনো কিছু পরিকল্পনা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। যেমন কাজের ক্ষেত্রে বারবার থেমে যেতে হয় এবং বেশ সময় নিয়ে চিন্তা করতে হয় যে, ঠিক কীভাবে কাজটা করবেন। কারণ আপনার মস্তিষ্ক দ্রুত পরিকল্পনা করতে ব্যর্থ হয়। এতে অনেক সময় জানা জিনিসও ঠিকভাবে করা যায় না।
স্মৃতিশক্তির বিলুপ্তি :
অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে স্মৃতিশক্তির বিলুপ্তি ঘটতে পারে। খুব সহজেই বা অল্প সময়ে আপনি অনেক প্রয়োজনীয় সব তথ্য ভুলে যেতে পারেন।
মনোযোগ হারিয়ে ফেলা :
দীর্ঘদিন ধরে অপর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে থাকলে আপনার যেসব মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে তার মধ্যে মনোযোগ হারিয়ে ফেলা অন্যতম। কোনো কাজ করতে করতে হঠাৎ অন্য কথা মনে পড়তে পারে বা অনেক সময় ধরে একই কাজ করছেন কিন্তু কী কাজ করছেন তা ভুলে যেতে পারেন।
দুর্বল মস্তিষ্ক :
কাজের জন্য আপনাকে কম ঘুমাতে হচ্ছে। কিন্তু এটি জেনে আপনি খুব হতাশ হবেন যে, আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে কম ঘুমের কারণে কম দক্ষ হয়ে যাচ্ছে। কাজের সময় খুব অল্পতে আপনার মধ্যে ক্লান্তি, গ্লানি দেখা দিতে পারে কম ঘুমের কারণে। আপনি কাজে খুব দক্ষ হতেই পারেন কিন্তু কম ঘুমের কারণে দুর্বল মস্তিষ্ক আপনার কাজের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।
সূত্রঃ বিডি লাইভ
Tag: ঘুম কমের কারণে যে ক্ষতি গুলো হয় – online bangla health news earning point, bangla news 24, bangladesh news, online news