পারিবারিক শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা
*নিমন রুদ্র
• প্রতিটি সমাজেই পরিবার হলো শিশুদের সামাজিকভাবে গড়ে উঠার প্রাথমিক এবং প্রধান শিক্ষালয়।একটি মূল প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিবার শিশুদেরকে সুষ্ঠুভাবে লালন পালন,তাদের সুন্দর অভ্যাস গঠন তাদের আচার আচরণে নৈতিক মানবিক মূল্যবোধ তৈরী করার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।নিজ পরিবারের সদস্য অর্থাৎ বাবা-মা,ভাই-বোন ও অন্যান্য নিকটাত্মীয়ের সাথে শিশুর ব্যবহার ও আচরণ কেমন হবে তা পারিবারিক পরিবেশই শিশুরা শিখে থাকে। এছাড়া পরিবারের বাইরের আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সাথে সাথে সম্পর্ক পড়ে তোলার ক্ষেত্রেও পরিবার মূখ্য ভূমিকা পালন করে। শিশুদের শিক্ষার হাতেখড়ি হয় পরিবার থেকেই।বিদ্যালয়ে যাবার পূর্ব পর্যন্ত-শিশু নিজ গৃহেই প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে শিখে ফেলে। শিশুর কৌতুহলী মন যা দেখে সেটা সম্পর্কে জানতে চায়। স্বাভাবিকভাবে তার মধ্যে জানার ও চেনার আগ্রহ সৃষ্টি হয়।অভিবাবকগণকে অনেক ধৈর্য্যের সাথে শিশুকে তার প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়।তবে কোন ভূল উত্তর শিশুর মনে ভূল ধারণার সৃষ্টি করতে পারে। এভাবে শিশুরা পরিবারে প্রয়োজনীয় অনেক বিষয়ে সচেতনতা লাভ করে এবং একটি শিশু সামাজিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে। প্রত্যেক সমাজই শিশুর নৈতিক চরিত্র গঠন ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সচেষ্ট। নৈতিক শিক্ষা পারিবারিক শিক্ষার একটি বড় দিক।নৈতিক শিক্ষা শিশুর মধ্যে সৎ গুণাবলির সঞ্চার করে। এসব সৎ গুণ শিশুর ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর করে তোলে।তখম সে সমাজ,দেশ ও জাতিকে অনেক ভাল কিছু উপহার দিতে সক্ষম হয়,মানবতা তার দ্বারা উপকৃত হয়।
• সামাজিক জীব হিসেবে মানুষ কিভাবে বসবাস করবে নৈতিক শিক্ষা তাকে সেই জ্ঞানই দেয়। প্রতিটি সমাজেরই একটি নীতিবোধ রয়েছে। অভিভাবকগণ সেই নীতিবোধকে শিশুদের মাঝে প্রজ্বলিত করে দেন।শিশুরা যখন পরিবারের গন্ডীর বাইরে বিদ্যালয়ে যাতায়াত শুরু করে তখন শিক্ষকগণ সেই দায়িত্ব পালন করেন। নৈতিক শিক্ষা যখন ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে তখন তা সহনশীলতা ও ন্যায়বোধের দ্বারা পরিচালিত হতে হবে যাতে অন্য সম্প্রাদায়ের নীতিবোধে আঘাত না লাগে। কোনটা ভাল কোনটা মন্দ তা শেখানোর জন্য শিশুদেরকে নৈতিক শিক্ষাদান প্রয়োজন।এই শিক্ষা শিশুদের বিবেকবোধকে জাগ্রত করে। সত্যকথন, পরোপকার, দয়া,দানশীলতা,স্নেহ-মমতা,ধৈর্য, সম্প্রীতি ও ভালবাসা,বিনয়,সুন্দর আচরণ এরকম আরো অনেক নৈতিক গুণ আছে। ধর্মীয় অনুশাসন বিশেষ করে বিশ্ব স্রষ্টাকে জানা ও তার প্রতি প্রেম ভালবাসা, ভক্তি,শ্রদ্ধা ও সৎকাজ দ্বারা সন্ত্তষ্টি অর্জন ও মন্দ দ্বারা বিরাগভাজন প্রভৃতি বিষয়গুলো শিশু তার পরিবার থেকেই শিক্ষা লাভ করতে শুরু করে। এভাবেই পারিবারিক শিক্ষা শিশুকে ভবিষ্যতে একজন পূর্নাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ভূমিকা পালন করে।