নিজের বাড়িকে নিজের মতো করে সুন্দর করে সাজানোর স্বপ্ন তো আমরা সবাই দেখি। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সবাই তা করে উঠতে পারি না। তবে বাংলাদেশেই একজন মানুষ আছেন যিনি নিজ বাড়িকে নিজের স্বপ্নের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বিলাসবহুল বাড়ি। বাড়িটি সিলেটে অবস্থিত। এর নাম “কাজি ক্যাসেল”। বাংলাদেশের শিল্পপতি নাসির এই বাড়িটি নির্মাণ করেছেন। এই বাড়িটি দেখলে মুগ্ধ হতে হয় সবাইকে। প্রায় আড়াইশ শ্রমিকের আট বছর সময় লেগেছে বাড়িটি নির্মাণ করতে। বাড়িটি সিলেটের কারো কাছে “প্রাসাদ” আবার কারো কাছে “স্বর্গপুরী” এর তুল্য মনে হয়। ২০০৮সালে বাড়ির কাজ শুরু করা হয়েছে। তিনতলা এই বাড়িটি নিয়ে মানুষের কৌতুহলের অন্ত নেই। প্রায় আট একর জমির উপর বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই বাড়ির নির্মাণ ব্যয় সম্পর্কে কেউ কেউ বলেন, এটি নির্মাণ করতে ৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলেন ৫০০ কোটি। শিল্পপতি নাসিরকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন এর ব্যয় তিনি কখনো হিসাব করেননি।তিনি বলেন, ব্যবসার বিষয় হলে হয়তো তিনি হিসাব করে রাখতেন। যখনই যা লেগেছে তাই তিনি খরচ করেছেন। তিনি আরও বলেন, বিলাসিতা দেখানোর জন্য নয় বরং একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একসাথে বাস করার জন্যই এই ব্যবস্থা। সবাই যেন যেকোনো উৎসবে একত্রিত হতে পারে। তিনতলা এই বাড়িটিতে রয়েছে হেলিপ্যাড, সুইমিং পুল, অত্যাধুনিক স্নানাগারসহ আরো অনেক কিছু। এছাড়াও টেনিসসহ অন্যান্য খেলার জন্য জায়গা আছে এ বাড়িতে।
বাড়িটিতে ২৯ টি মাস্টারবেড আছে। এগুলো একেক দেশের সংস্কৃতিকে ধারণ করে। এছাড়া ১৩টি ড্রইং, ১৪টি ডাইনিং রুম আছে এখানে। বাড়ির ডিজাইনের জন্য ৪টি দেশের মানুষ কাজ করেন। দেশগুলো যথাক্রমে দুবাই, ফ্রান্স, লেবানন, জার্মানি। বাড়িটির সব জায়গাতেই চোখে পড়বে মার্বেল পাথরের অসাধারণ কারুকাজ। এছাড়াও সেখানে সুন্দর করে সাজানো রয়েছে কাবা শরিফের দরজার প্রিন্ট। এই বাড়িটিতে ৫০০০ জনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করার ব্যবস্থা রয়েছে। বাড়ির প্রতিটি কোণায় রয়েছে আভিজাত্যের আভাস। এসবই তার মার্জিত রুচির বহিঃপ্রকাশ।তার বাড়ির সকল আসবাবপত্র দেখলে সকল মানুষের চোখ ধাঁধিয়ে যায়। দিনের বেলা বাড়িটি একরকম, আবার রাতের বেলা আরেকরকম। রাতের আঁধারে এই বাড়িটির রং বদলাতে থাকে। সে যেন মায়ায় আচ্ছন্ন এক পরিবেশ। এটি এমন একটি পরিবেশ যেটি সবাইকে কাছে টেনে নিয়ে আসে।
শিল্পপতি নাসির একজন সফল ব্যবসায়ী। তিনি দেশে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স দিয়েছেন। তিনি জানান, তাঁর এই বাড়িটি কোনোভাবেই লোক দেখানোর জন্য নয়। বরং সবাই মিলে একসাথে থাকার জন্য তিনি এই বাড়িটি নির্মাণ করেছেন। সিলেটের মানুষের কাছে এই বাড়িটি যেন এক বিস্ময়!