শীতের সবজির ভেতর টমেটো অন্যতম। বাংলাদেশের ভৌগলিক পরিবেশে টমেটো চাষের জন্য উত্তোম। তবে ইদানিং পাকা টমেটো থেকে কাঁচা টমেটোর বাজারমূল্য অত্যধিক। কারণ টমেটো কৃষি জমিতে পাকতে পাকতে বাজার পরে যায়।
এইজন্য পাকা টমেটো থেকে কাঁচা টমেটোর চাহিদাই বাজারে ভোক্তাদের কাছে অনেক বেশী। শীত ও গরম দুই ঋতুতেই টমেটো পাওয়া যায়। তবে টমেটোর ফলন শীতকালে ভালো হওয়াই টমেটোকে বাংলাদেশের শীতকালীন সবজি বলা হয়েছে। শীতে সারাদেশে হেক্টর হেক্টর বিস্তীর্ণ চাষের জমিতে টমেটোর চাষাবাদ হয়ে থাকে। টমেটো বাজারজাতকরণ করে প্রতিবছর কৃষকেরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে থাকেন। বাংলাদেশের আবহাওয়া হচ্ছে নাতিষীতোষ্ম এবং মৌসুমি বায়ুর অবস্থানে ভৌগলিকভাবে চাষাবাদে কৃষকেরা লাভবান হয়ে থাকেন।
ভৌগলিকভাবে রাজশাহী জেলাতে টমেটোর উৎপাদন খুব বেশী হয় এবং টমেটো চাষ করে কৃষকেরা আর্থিকভাবে খুবই লাভবান হয়ে থাকেন। রাজশাহী জেলা থেকে রাজধানীসহ সারা দেশেই টমেটোর সরবারহ করা হয়ে থাকে। রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলায় অধিকাংশ কৃষিজমিতেই চাষাবাদ হয়ে থাকে এবং এর ভেতর ৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ হয়ে থাকে। রাজশাহীর কৃষকের উপর দোষারোপ করা হয়েছিল যে তারা হরমোন ব্যবহার করে কাঁচা টমেটোকে দ্রুত পাঁকিয়ে বাজারে সরবারহ করে থাকে। তবে বাজার গবেষণা করার পর এমন কোন তথ্য তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়নি। কৃষকেরা বলেন যে, ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে ও বাজার ধরতে কৃষকেরা কাঁচা টমেটো বাজারে সরবারহ করে থাকে।
এবছর রাজশাহী জেলাতে টমেটো সরবারহের সর্বমোট টার্গেট হচ্ছে ৭৬ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন। কৃষকেরা সোরাদেশে টমেটো সরবারহের মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশা করছে। এছাড়াও ভোক্তারা হরমোন দিয়ে পাকা টমেটো থেকে কাঁচা টমেটো খেতেই বেশী পছন্দ করে। কাঁচা টমেটো দিয়ে সালাত তৈরী করা হত এবং বর্তমানে টমেটো দিয়ে সালাত সহ সবজির চাহিদাও পূরণ করা হয়ে থাকে। রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপশহরের কদমশহর এলাকায় প্রতিদিন বাজারে ১০০ থেকে ২০০ মন টমেটো রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পাঠানো হয় এবং ট্রাকে বস্তা ভরা টমেটোগুলো সবই কাঁচা এবং ভোক্তাদের চাহিদা পূরণের জন্যই এই টমেটো রাজধানী ঢাকাতে সরবারহ করা হয়ে থাকে। টমেটোর বাজারমূল্য শুরুর দিকে অনেক বেশী থাকে এবং কৃষকেরা চাহিদা পূরণের জন্য রৌদে শুঁকানো কাঁচা টমেটো ট্রাকে বস্তায় করে ঢাকাতে সরবারহ করে থাকে।
রৌদে শুকানো কাঁচা টমেটোতে ভিটামিন ও পুষ্টির পরিমাণ খুবই কম থাকে যার কারণে টমেটোর গুণগতমান ভোক্তারা গ্রহন করতে পারে না। এইজন্য কাঁচা টমেটোর চাহিদা ভোক্তাদের কাছে বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু রাজশাহী নই, টমেটোর চাহিদা ও বাজারজাতকরণ পুরো দেশেই বিস্তীর্ণ এবং কৃষকেরা ভবিষ্যতে টমেটো বাজারজাতকরণ করে লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।
সূত্র: প্রথমআলো