রোবট হলো কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত এমন একটি যন্ত্রমানব যা যা মানুষের পক্ষে করা কঠিন এমন কাজগুলোকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে করতে পারে। রোবটও মূলত এক ধরনের কম্পিউটার।রোবটও কম্পিউটারের মতই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় একটি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার। কোনো কোনো রোবটকে একদম মানুষের আকৃতি দেয়া হয় আবার কোনো কোনো রোবটকে অন্য প্রাণী বা বস্তুর আকৃতি দেয়া হয়।”রোবট” শব্দটি মূলত স্লাভিক শব্দ “রোবটা” থেকে এসেছে।”রোবটা” শব্দটির অর্থ “শ্রমিক”। রোবট শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহৃত হয়েছিলো ১৯৪১ সালে প্রকাশিত ‘আইজাক অসিমভ’ এর ছোট বৈজ্ঞানিক কাহিনি ‘লায়ার’ এ।রোবট বর্তমানের সবচেয়ে জনপ্রিয় কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র যদিও রোবট এখনো সর্বসাধারণের জন্য সহজলভ্য নয়।তবে খুব শীঘ্রই রোবটও সাধারণ জনগণের জন্য সহজলভ্য হবে এবং মানুষ শুধু বড় বড় জটিল কাজের জন্য ই নয় সাধারণ গৃহস্থালির কাজেও রোবট ব্যবহার করবে।আজকের দিনের অধিকাংশ রোবটই ‘বায়ো-ইন্সপায়ার্ড রোবটিক্স’ ক্ষেত্রের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে তৈরি। রোবট তিনটি নিয়ম মেনে চলে।যেমন, রোবট কখনো মানুষের জন্য ক্ষতিকর হবে না,এই নিয়ম ভঙ্গ না করে রোবট মানুষের সকল আদেশ পালন করবে এবং এই দুটি নিয়ম পালন করে অর্থাৎ এই নিয়মগুলো ভঙ্গ না করে নিজেকে রক্ষা করবে।
একটা সময় বিভিন্ন বিজ্ঞানী, দার্শনিকরা রোবট নিয়ে বিভিন্ন কল্পকাহিনী লিখতে শুরু করেন। এসব বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর পাতা থেকে বেরিয়ে প্রথম রোবট তৈরি করেন আমেরিকান উদ্ভাবক জর্জ চার্লস ডেভল।সর্বপ্রথম তৈরি বাণিজ্যিক রোবটের নাম ছিলো ‘ইউনিমেট’ যা ১৯৫০ সালে তৈরি করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন বিজ্ঞানী,গবেষকরা বিভিন্ন ধরনের রোবট আবিষ্কার নিয়ে কাজ করেন এবং অনেকে সফল ও হন।রোবট যন্ত্রমানব কিন্তু তাই বলে যে রোবট দেখতে মানুষের মতই হবে সেটা নাও হতে পারে।রোবটের আকৃতি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।রোবটের ভেতর এমন প্রোগ্রামিং করা থাকে যাতে সে ব্যবহারকারীর নির্দেশের উপর ভিত্তি করে কাজ করে।আবার কখনো কখনো কোনো কোনো রোবটকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করার জন্যও প্রোগ্রামিং করা হয়ে থাকে।রোবটের বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্য থাকে কিন্তু সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য হলোঃ
*রোবট নির্দিষ্ট নির্দেশের উপর ভিত্তি করে কাজ করে থাকে
*রোবট বিরতিহীনভাবে কাজ করতে পারে।ক্লান্তি প্রাণীর আসে। রোবট একধরনের যন্ত্র তাই রোবট কখনো ক্লান্তি বোধ করে না।যতক্ষণ ব্যাটারি আছে বা ব্যাটারিতে শক্তি আছে ততক্ষণ রোবট তার কাজ করে ই যাবে।
*রোবট যন্ত্র।রোবটের কোনো মন নেই।তাই মানবিক অনুভূতি তথা রাগ,ঘৃণা, ভালবাসা, ভালো লাগা,ভয়,বিরক্তি, একঘেয়েমি ইত্যাদি থেকে রোবট মুক্ত। কোনো ধরনের অনুভুতি না থাকায় তার কাজে কেও বাধা প্রদান করতে পারে না।
*রোবট পারিপার্শ্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তার ক্ষমতা অনুযায়ী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কাজ করে।
*রোবট যেকোনো ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ও অসহনীয় পরিস্থিতিতে শান্তভাবে কাজ করে যেতে পারে।কিন্তু মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে ভয় পেয়ে যায় এবং সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে না। রোবট হলো মানুষের তৈরি এমন এক যন্ত্র যা মানুষের হয়ে সেই সকল কাজগুলো করে দেবে যেগুলো করা মানুষের পক্ষে অসম্ভব বা কঠিন এবং যাতে মানুষের প্রানের ঝুঁকি থাকে।কলকারখানার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ যেমন, ভারী বস্তু উত্তলন, লোহা গলানো, অত্যন্ত গরম বা ঠান্ডা বস্তু উত্তলন, স্থানান্তর, বিস্ফোরক নিস্ক্রিয় করণ, ডুবে যাওয়া জাহাজের অনুসন্ধান ইত্যাদি কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়।তাছাড়া শিল্পকারখানায় ঢালাই,ভারী বস্তু স্থানান্তর ইত্যাদি কাজেও রোবট ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আবার মিলিটারি অপারেশন, সামরিক সরঞ্জামাদি বহন,ড্রোন হামলা এসবের জন্যও রোবট ব্যবহার করা হয়।গৃহের বিভিন্ন কাজ যেমন খাবার তৈরী করা,ঘর পরিস্কার করা,বাড়িতে আসা অতিথির সেবা করা ইত্যাদি কাজও রোবট করতে সক্ষম।রোবট কি ধরনের কাজ করবে সেটা তার মধ্যে দেয়া প্রোগ্রামিং নির্ধারণ করে।রোবট বিজ্ঞানের একটি আবিষ্কার। রোবট যেমন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ সম্পাদন করার জন্য ব্যবহৃত হয় তেমনি বিভিন্ন বাজে, অনৈতিক ও অন্যায় কাজেও রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে আজকাল।যা কখনোই কাম্য নয়।বৈজ্ঞানিক আবিস্কার মানুষের কল্যাণের জন্য। অনৈতিক কাজে সেগুলো ব্যবহার করার জন্য না।আমাদের এই বিষয়ে সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত।এবং সকলের ঈ সচেতন থাকা উচিত।
মানুষের চোখ দুইটির বদলে একটি থাকলে কি সমস্যা হত?
উত্তরঃ মানুষের চোখ যদি একটি থাকতো তবে আমরা আমাদের দেখা দুটি বস্তুর মধ্যে আপেক্ষিক দূরত্ব বুঝতে পারতাম না। ব্যাপার টা...