আমি ইভান।ক্লাস ১০এ পড়ি।আমাদের ক্লাসে ঈশিতা নামের একটা মেয়ে আছে ।দেখতে যেমন সুন্দর ব্যাবহার আচার ভারী সুন্দর পড়াশোনাতেও খুব ভালো।স্কুলের শিক্ষক রা তাকে অনেক পছন্দ করে।এমন শান্ত সভাবের মেয়ে এখন খুব কমই দেখা যায়।আমি কেনো যে কেউ ই তার প্রেমে পড়ে যাবে। ঈশিতাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লাতে কিন্তু ওর বাবার চাকরির সুবিধার্থে ঢাকা তে থাকে ।আমি তাকে অনেক আগে থেকেই ভালবাসতাম।কিন্তু কখনো বলা হইয়ে উঠে নাই।
একদিন তাকে সাহস করে বলেই ফেললাম।সে কোনো উত্তর দিলো না।চলে গেলো না।আসলে সে এমন একটি মেয়ে যে ছেলেদের সাথে খুব কম কথা বলে।কথা বলে না এমন বললেই হয়।তারপর কিছুদিন পর আবারো তাকে বললাম কিন্তু সেদিন ও কোনো উত্তর পাইনি। তার প্রতি আমার ভালোবাসা যেনো বাড়তেই থাকলো। প্রতিদিন আমি তাকে দেখতাম।তার ওই মায়াবী চেহারা যেনো ভোলার মত না।ক্লাসে বসে বসে দেখতাম।
ফ্রী সময়ে সবাই গল্প করে মজা করে আর সে একটা বই হাতে নিয়ে পড়তে থাকে।অনেক সময় দেখি সে জানালা দিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।তার সাথে আমার কথা বলতে খুব ইচ্ছা করে।কিন্তু কিভাবে বলবো।তারপর একদিন দেখলাম সে ক্লাসের সামনের বারান্দায় একটা বেঞ্চ নিয়ে সেখানে বসে একটা বই পড়ছে।আমি তার কাছে গিয়ে বসলাম।সে আমার দিকে তাকিয়ে আবার বইয়ের দিকে তাকালো।কথার বলার প্রয়োজন মনে করলো না।
আমি তাকে বললাম এইটা কিসের বই পড়ছো।সে আমার দিকে তাকিয়ে বললো এইটা একটা বিজ্ঞানের বই যেখানে অনেক বিজ্ঞানীর দের জীবন কাহিনী আর তাদের সাফল্য তুলে ধরা হয়েছে।আমি মজা করে বললাম বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে সে গুলো পড়তে পড়তেই জীবন শেষ এবার এগুলা।
তারপর আমি তাকে বললাম তুমি কিন্তু আমার উত্তর টা এখনো দিলে না।সে বললো আমার বাবার ট্রান্সফার হইছে আগামী মাসে আমরা চলে যাবো এখান থেকে।কথাটা শুনে যেনো আমার ভিতর টা কেপে উঠলো তাকে না দেখে কীভাবে থাকবি আমি।খুব খারাপ লাগতে লাগলো।আমি বললাম তাতে কি আমরা তো ফোনে যোগাযোগ করতে পারি।সে বললো সে সম্ভব না।
জীবনে এমন অনেক মুহূর্ত আসে যেখানে কিছু করার থাকে না।হাত পা বাঁধা থাকে।আমি আর কিছু বলতে পারলাম না তবে বুঝলাম সেও মনে মনে কষ্ট পাচ্ছে।আমি তাকে একটা কথাই জিজ্ঞাসা করলাম তুমিও কি আমাকে ভালোবাসো।সে বললো জানি না।এর পর সে ওখান থেকে উঠে গেলো।নেক্সট ক্লাস শুরু হবে।আমি ওখানেই বসে রইলাম।স্কুল ছুটির পর বললাম।অনেক ভালোবাসি প্রিয় তোমায়।যেখানেই থাকো ভালো থেকো নিজের খেয়াল রেখো।
ভাগ্যে থাকলে হয়তো কোনো একদিন দেখা হবে।সে মন খারাপ করে চলে গেলো আর বললো তুমিও ভালো থেকো।