আজ থেকে প্রায় ৩ বছর আগের ঘটনা এটি। আমি সর্বদা লেখালেখি করতে ভালোবাসি।আমার লেখার বিষয়টা হয়ে থাকে বেশিরভাগই ভৌতিক বা অলৌকিক ঘটনা নিয়ে। কেননা এইগুলো লেখা পড়ার ও লেখার ভিতর এক প্রকার মাদকতা আছে। যার জন্য বেশিরভাগ মানুষই ছুটে আসে এইরকম ঘটনা পড়তে।
যা বলছিলাম, আজ থেকে ৩ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালের কোনো এক গ্রামে আমি গিয়েছিলাম । সেইখানে এক বন্ধুর বাবার বিশাল এক প্রকার বাংলো রয়েছে। তারা দেশে থাকে না। স্বপরিবারে তারা দেশের বাহিরে থাকেন। আমি ভাবলাম ওই গ্রামে গিয়ে তাদের সেই বাংলোতে উঠবো। যেই ভাবা সেই কাজ।
ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে রওয়ানা দিলাম গ্রামে। সেইখানে পৌছাতে প্রায় সন্ধ্যা ৭টার মত বেজে গেলো।
গ্রামে সন্ধ্যা ৭ টা মানে বেশ রাত। তার উপরে সেইখানে এখনো বিদ্যুৎ আসেনি। তার উপর আকাশটাও মেঘলা হয়ে আছে। যে কোনো সময় বৃষ্টি আসতে পারে।
আমি কাচা রাস্তা দিয়ে হাটতে লাগলাম। মাঝে মাঝে বাতাসের জন্য আশেপাশের গাছগুলো কেঁপে উঠছে।
আমি শহরের মানুষ। আমার ভিতর কখনো ভুত-প্রেত এইসব এর ভয় বাসা বাধেনি।
হাঁটতে হাঁটতে প্রায় বাংলোর কাছে পৌঁছে গেলাম।
সেইখানে গিয়ে দেখি আগে থেকে দুজন লোক হাতে হারিকেন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমার জন্য। আমি কাছে যেতেই তারা বললো ” বাবু মশাই তাহলে এসে গিয়েছেন, আমরা ভাবলুম আপনাকে গিয়ে নিয়ে আসি”।
আমি হাসি দিয়ে বললাম, আরে না আমি একাই চলে আসতে পারবো, তাই কারো অপেক্ষা করিনি।
তা তোমরা নিশ্চয় এই বাড়িটা পাহাড়া দাও ? তারা দুজন বললো ” আজ্ঞে হ্যা বাবু মশাই, সারাদিন আমরা এইখানে পাহাড়া দিয়ে থাকি আর সন্ধ্যার আগেই চলি যায়”।
ব্যাপারটা আমার কাছে কেমন জানি ঠেকলো !!
আমি এত মাত্যহা না ঘামিয়ে বাংলোর ভিতরে প্রবেশ করলাম। চারিদিকে শুধু হারিকেনের আলোতে দেখলাম বিশাল এক প্রকার হল রুমের মতো করিডোর।
দেখেই বোঝা যাচ্ছে কেউ এখনো বোধহয় আসেনি, যার জন্য কেমন এক প্রকার ভ্যাপসা গন্ধ আমার নাকে এসে ঠেকছে। তারপর কাছে এগিয়ে যেতেই দেখলাম একটা বড় পেইন্টিং সামনে ঝুলে আছে। আমি ওদের জিজ্ঞেস করলাম যে, এইটা কার ছবি? তারা উত্তর দিলো ” আজ্ঞে বাবু ইনি এই বাসার আসল কর্তা, তার কথামতো সবসময় এই বাসায় সকল কাজ চলতো”।
তারপর তারা বললো, “বাবু আপনে উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসুন, আমরা আপনার জন্যি খাবার পরিবেশন কচ্চি”।
আমি আর দেরি না করে উপরে চলে গেলাম। কেননা আমার পেটে তখন ইঁদুর দৌড়াচ্ছে খিদের চোটে।
পর্ব- ০১
(চলবে)