যুগ যুগ ধরেই মাদক পাচারে সবচেয়ে নিরাপদ রুট বা মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে ট্রেন। দেশের ট্রেনস্টেশনগুলোতে বডি কিংবা লাগেজ স্ক্যানার না থাকায় চেকিং ছাড়াই অবাধে আনা নেওয়া করা হচেছ মাদকদ্রব্য,আগ্নেয়াস্ত্রসহ অবৈধ পণ্য। কেবলমাত্র পূর্বে পাওয়া ইনফরমেশনের ভিত্তিতে কিছু মাদক কারবারি পুলিশের কাছে ধরা পরলেও তা শতকরা ১০ ভাগেরও কম। দেশে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ লোক ট্রেনে যাতায়াত করে থাকে। এতো লোকের ভীড়ে কারা চোরকারবারি আর কারা সাধারণ যাত্রী তা বোঝা মুশকিল হয়ে যায় আইনশৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে। যেহেতু স্টেশনগুলোতে কোনো আধুনিক সরঞ্জাম নেই। নেই উন্নত চেকিংয়ের ব্যবস্থা তাই বিনা বাধায় চোরাকারবাারিরা ট্রেনের মাধ্যমে মাদক আনানেওয়ার কাজটি করতে পারছে। সাধারণ যাত্রীবেশে শরীরের বিভিন্ন স্থানে, পেটের ভিতর, তরুণী কিংবা মহিলাদের স্পর্শকাতর স্থানে, এমনকি পায়ুপথে ঢুকিয়েও হিরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য আনানেওয়া করছে এসব মাদক কারবারিরা। দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চল থেকে ট্রেনযোগে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহরে ঢুকছে মরণফাঁদ এই মাদক। তারপর বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন হাত ঘুরে এগুলো পোঁছে যাচ্ছে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছে। বিশেষ করে সমাজের উঠতি তরুণ, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা আসক্ত হয়ে পড়ছে এই মরণনেশার দিকে। জানা যায় দেশের পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল হতে ট্রেনযোগে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য একরকম বিনা বাধায় ঢুকে পড়ছে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে। তবে ঢাকাতেই সবচেয়ে বেশি চালান প্রবেশ করে। রেল সংশ্লিষ্টরা জানান দেশের কোনো স্টেশনেই বডি কিংবা লাগেজ স্ক্যানার নেই। বহু আগে থেকেই এ বিষয়ে দাবি জানানোর পরও এই বাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। তাছাড়া লক্ষ লক্ষ লোকের এই যাতায়াত মনিটরিং করতে যে পরিমাণ রেল পুলিশ বা অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে তা একেবারেই অপ্রতুল। এই সামান্য সংখ্যক পুলিশ দিয়ে কোনোভাবেই এত লোকের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তাছাড়া আগে থেকে কোনো গোপন সংবাদ না থাকলে সবাইকেতো আর শুধু শুধু দাঁড় করিয়ে চেকিং করা সম্ভব নয়। যেহেতু কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই তাই এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র গোপন সংবাদের উপর ভিত্তি করেই কিছু কিছু মাদক ও চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করছে আইনশৃুঙ্খলা বাহিনী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় রাজধানী ঢাকার কমলাপুর, টঙ্গি, বিমানবন্দর স্টেশনগুলোতে প্রতিদিন প্রায় দুই লক্ষ লোক উঠানামা করে। এদের মধ্যে যারা মাদক কারবারি তারা কোনো রকম বাধা ছাড়াই তাদের ব্যাগ কিংবা লাগেজ নিয়ে স্টেশন অতিক্রম করে। তাছাড়া টঙ্গি হতে কমলাপুর আসার সময় ট্রেনগুলো খুব ধীরে ধীরে চলাচল করে। ফলে মাঝখানে তেজগাঁও রেলওয়ে বস্তি, খিলগাঁও বস্তি ইত্যাদি স্থানে মাদক কারবারীরা নেমে পড়ে কিংবা পূর্বে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির কাছে মাদকের চালান পোঁছে দেয়। ঠিক এসব কারণে অনেক সময় পুলিশের কাছে তথ্য থাকা সত্ত্বেও তারা অপরাধী ধরতে ব্যর্থ হয়। আর এভাবেই ট্রেনকে নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করে সারা দেশে নির্বিঘেœ মাদকের বিস্তার করে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন দ্রুত দেশের প্রধান প্রধান রেলস্টেশনগুলোতে বডি ও লাগেজ স্ক্যানারসহ চেকিংয়ের আধুনিক সরঞ্জামের ব্যবস্থা না করলে মাদক ব্যবসায়ীদের এ অপতৎপরতা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। আর মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করা যাবে না দেশের তরুণ প্রজন্মকে।
Measures to go out in Bogra without any reason: Deputy Commissioner
Strict restrictions have been imposed across the country from 6 am on Friday (July 23) for 14 days to prevent...