একজন মেয়ের অনুভূতির কথা বলতে গেলে আমরা প্রায়ই তার কষ্টের কথা আগে শুনতে পাই। মেয়েরা যতটা আবেগী ততটা ধৈর্যশীল ও বটে।
একদিকে, মেয়ে এক দেশ, এক সমাজ, এক পরিবারকে গড়ে তুলতে নিজের স্বার্থ ত্যাগ করতে পারে। তার অন্যদিকে সমাজের বিভিন্ন লাঞ্ছনা-বঞ্চনা শিকার হতে হয় তাকে।
কেন এক মেয়েকে এক ছেলের সাথে তুলনা করতে ছেলেকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয় আর মেয়েকে অবহেলা করা হয়? হায়রে স্বার্থপর দুনিয়ার মানুষ। তার থেকেও বেশি স্বার্থপর কিছু কিছু বাবা-মা যারা নিজের মেয়ের মনের কথা বুঝতে ব্যর্থ হয়। তাদের জীবনটাই এমন, পরিবারের খুশির জন্য নিজের স্বার্থ, নিজের খুশি ত্যাগ করলেও তাদের মনে হয় সে কিছুই করেনি তাদের জন্য। বিয়ের আগে বাবার ঘর, বাবার সম্মান রক্ষা করে চলতে হয়। আর বিয়ের পর স্বামীর ঘরে স্বামীর সম্মান, তার পরিবারের সম্মান নিয়ে ভাবতে হয়। নিজেকে সময় দিতে পারে না। আর অন্য দিকে পৃথিবীতে নারীকে সম্মান দেয়ার জায়গায় কেন তাকে নির্যাতন, শাসন, ভক্ষণ করা হয়? কেন এক মেয়ের চুপ থাকলে তাকে দুর্বল ভেবে তার সাথে অন্যায় করা হয়? এক মিনিট জীবনে কোনো সফলতা ঘটলে তার সফলতার কৃতিত্ব উপসর্গ করে তার বাবা-মাকে। বাবা-মা যতই কঠোর হোক না কেন মেয়ে তার বাবা-মাকে ভীষণ ভালোবাসে। তার জীবনে কোন ছেলে আসলে পুরো দুনিয়া তাকে খারাপ মনে করা শুরু করে দেয়। মেয়ে কোন ছেলেকে ভালোবেসে বিয়ে করতে চাইলেও যখন বাবা-মা অসমর্থ জানায় সে শত চেষ্টা করেও তাদের খুশির চিন্তা করে নিজের মনের সাথে, ইচ্ছার সাথে ছলনা করতে বাধ্য হয়। আজ পৃথিবীর পৃথিবীর মানুষের ধারণা ক্রমান্বয়ে উন্নত হলেও কিছু কিছু কুসংস্কারের জন্য কিছু কিছু মেয়েদেরকে তার কুফলের সম্মুখীন হতে হয়। উদাহরণস্বরূপ শিক্ষার দিক থেকে দেশ উন্নত হলেও নারীদের শিক্ষিত করার বিষয়ে এখনো অসচেতন। অনেকের মতে মেয়েদের বেশি পড়ালেখা করে কি হবে? বিয়ে করে তো স্বামীর ঘরে রান্নাবান্নাই করতে হবে। মেয়েদের অপরিনত বয়সে বিয়ে দেওয়ার ফলে, না কেবল শারীরিক ও মানসিকভাবে বেড়ে উঠতে অক্ষম হয় বরং তাদের স্বপ্ন নিমেষেই ভেঙে যায়
কোন ছেলে যদি ভুল করে, অন্যায় করে তাকে দোষী ভাবা হয় না বরং ক্ষমা করে দেয়া হয় তাকে। যখন কোনো মেয়ে যদি ভুল করে ক্ষমাও চায়, তবুও তাকে ক্ষমা করা হয় না। সুযোগ দেয়া হয় না অনুতাপ স্বীকার করতে। অন্যের ভালোর জন্য যদি সে মিথ্যা বলে কারো সহায়তা করতে চায়, তবে তাকেই অন্যের কাছে স্বার্থপর, বেইমান, বিশ্বাসঘাতক হিসেবে গণ্য হতে হয়। যদি এক মেয়ে পরিবারের কাউকে কোন সারপ্রাইজ গিফট দেওয়ার জন্য লুকিয়ে লুকিয়ে কিছু করে, মিথ্যা বলে বাইরে যায়, তবে তাকে খারাপ ভাবা শুরু হয়ে যায়। সে খারাপ কিছুতে জড়িত হয়েছে নাকি। কিন্তু যদি কোন ছেলে এমন করে কেউ জানতেও চায় না সে কি করছে ভুল ভাবা তো দূরে থাক।