রমজানের শেষ ১০ দিনে রাসুল (সা:) এর আমল কেমন ছিলঃ
বছরের ১২টি মাসের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত বরকতময় মাস হচ্ছে রামাদান। এই মাসে একটি নফল অন্য মাসের একটি ফরজের সমতুল্য। এই মাসের একটি ফরজ অন্য মাসের ৭০টি ফরজের সমান সাওয়াব। এই মাসে একটি নেক আমল করলে তার সাওয়াব ১০ গুন থেকে বাড়িয়ে ৭০০ গুন পর্যন্ত করা হয়। এই মাসে এমন একটি রাত রয়েছে, যে এক রাতে ইবাদত করলে হাজার মাস বা ৮৩ বছর ৪ মাস ইবাদতের সাওয়াব পাওয়া যায়। রমজান মাসের কেন এত মরতবা। এর একটাই কারণ- এই মাসেই নাযিল হয়েছে পবিত্র কুরআন মজিদ। পবিত্র কুরআনের কারনেই এই মাসের এত মাহাত্ব। আর এই কুরআন নাযিল হয়েছে লাইলাতুল কদরের রাতে। লাইলাতুল কদর রয়েছে রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের কোন এক বিজোড় রাতে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআন পাকে ঘোষনা করেছেন- “ নিশ্চয়ই আমি কুরআনকে কদরের রাত্রিতে নাযিল করেছি। কদরের রাত্র হচ্ছে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।” (সুরা কদর)
আমাদের সামনে রমজানের সেই শেষ ১০ দিন উপস্থিত। সুতরাং আমাদের জেনে নেয়া উচিত রমজানের শেষ ১০ দিনে আমাদের প্রিয় নবী (সা:) এর আমল কেমন ছিল। আর সে অনুযায়ী আমাদেরও আমল করার চেষ্টা করা উচিত।
১. রাসুল (সা:) রমজানের শেষ ১০ দিনে এত বেশী বেশী ইবাদত করেছেন যা অন্য কোন সময় করেননি। তিনি এই ১০ দিনে বেশী বেশী নফল নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত ও যিকির আযকার করেছেন।
২. তিনি এই শেষ ১০ দিনের রাতে ঘুমাতেন না। হযরত আয়শা (রা:) বলেন, রাসুল (সা:) এই ১০ দিনে বালিশ থেকে দুরে থাকতেন।
৩. তিনি ইবাদতের জন্য পরিবারের লোকদের ডেকে নিতেন। নফল ইবাদত তিনি সবসময় একা একা করতেন। কখনও নফল ইবাদতের জন্য পরিবারের সদস্যদের ডাকতেন না। কিন্ত রমজানের এই শেষ ১০ দিন তিনি নফল ইবাদতের জন্য পরিবারের সদস্যদের ডেকে নিতেন।
৪. তিনি কোমর বেধে নিতেন। কোমর বাধার বিষয়ে ২টি ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। কেউ কেউ বলেছেন, কোমর বেধে নিতেন মানে তিনি স্ত্রীর কাছ থেকে দুরে থাকতেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, কোমর বাধা মানে হচ্ছে, তিনি ইবাদতের জন্য সর্বাত্নক প্রস্তুতি নেয়া।
৫. এতেকাফ করা। হযরত আয়েশা (রা:) বলেন, রাসুল (সা:) সাওম ফরজ হওয়ার পর প্রতি বছর রমজানের শেষ ১০ দিন এতেকাফ করেছেন। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) বলেন, রাসুল (সা:) প্রতি বছর রমজানের শেষ ১০ দিন এতেকাফ করেছেন আর শেষ বছর এতেকাফ করেছেন ২০ দিন।
রাসুল (সা:) এর রমজানের শেষ ১০ দিনের আমল দেখে দেখে আমাদের ইবাদত বন্দেগী করা উচিত। একটি ব্যাপার খুবই লক্ষ্যনীয় রাসুল (সা:) প্রতি বছর এতেকাফ করেছেন, আর আমাদের অধিকাংশই এক বছরও এতেকাফ করিনি। সুতরাং সময় চলে যাচ্ছে। আজ ২০ শে রজমান, অর্থাৎ ২১ তম রাত্রি। আজকে থেকেই আমাদের লাইলাতুল কদরের জন্য ইবাদত করা উচিত। যেই এক রাত ইবাদত করলে হাজার মাসের চেয়ে বেশী ইবাদতের সাওয়াব পাওয়া যায়। লাইলাতুল কদরের সম্ভাবনা শেষ ১০ দিনের বিজোড় রাত্রি- অর্থাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তম রমজান।