আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন তা জিজ্ঞাসা করছি না। রোগ বালাইয়ের এই অস্বাভাবিক পরিবেশে ভালো ও সুস্থ থাকাটা মৌলিক প্রয়োজন হয়ে দাড়িয়েছে। আশা রাখছি ভালো আছেন।
প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে আমাদের আশেপাশের যে পরিবেশ, আবহাওয়া, বায়ু এসবের সাথে আমরা নিজেদের খাপ খাইয়ে নিচ্ছি তা মোটেও বিশুদ্ধ নয়। শত শত ভাইরাস ও জীবাণু আমাদের শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে তাল মিলিয়ে ঢুকছে। যার ফল হিসেবে বিভিন্ন ধরনের রোগের জন্ম দিচ্ছি আমরা। এ পর্যন্ত প্রায় ১০০০০০ রকমের রোগ আবিষ্কৃত হয়েছে পৃথিবীতে। যার বেশিরভাগেরই জন্ম আফ্রিকায়। কিন্তু এই নতুন বছরে দূর্ভাগ্যবশত আবারো জীবন ফিরে পেয়েছে এক রোগ।
করোনাভাইরাস।
অত্যন্ত আক্রমণাত্মক এ রোগের জন্ম চিনে। চলুন এ রোগটি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেনে নেওয়া যাক।
করোনাভাইরাস ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শুরুতে হানা করেছিলো চিনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে। সেখানকার ৪০ জন লোক প্রথমে তাদের মধ্যে কোনো কারন ছাড়াই নিউমোনিয়া আবিষ্কার করলে শীঘ্রই করোনাভাইরাসের মুখোশ উন্মোচন হয়। একের পর এক এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে থাকে। এভাবে সংখ্যাটি হাজার ছাড়িয়ে যায়।
করোনাভাইরাস মূলত এমন একটি ভাইরাস যেটি কিনা পশুপাখির শরীরের মাধ্যমে ট্রান্সফার হয়। কোনো মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো পশুপাখির কাছাকাছি আসলে ভাইরাসটি মানুষের নিকট ট্রান্সফার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটি মূলত সপ্তম বারের মত মানুষকে আক্রমন করছে। তাই এটির নাম রাখা হয়েছে নোভেল করোনাভাইরাস (১৯-২০)। বলাই বাহুল্য যে এটি পূর্বের ছয় বারের থেকে আরো শক্তিশালী।
করোনাভাইরাসের ফলে চিনে অস্বাভাবিক হারে মৃত্যুর হার বাড়ছে। ইতোমধ্যেই ৪২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে চিনে। এছাড়াও হংকং, ফিলিপাইন এসব জায়গাতেও বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা।
লক্ষন
নিম্নোক্ত লক্ষণগুলি যদি কোনো ব্যাক্তির মধ্যে উপস্থিত হয় তবে অবশ্যই বুঝে নিতে হবে ভাইরাসটি আক্রমণ করেছে।
১। পাতলা সর্দি
২। কফ
৩। গলা ভাঙা
৪। জ্বর আসা
৫। মাথা ব্যাথা
৬। শারীরিকভাবে অসুস্থতা বোধ করা।
তাছাড়াও এ ভাইরাস মানুষের শ্বসন তন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে। এ ভাইরাসে সাধারনত বাচ্চারা বেশি আক্রমিত হয়৷
প্রতিরোধ
করোনাভাইরাস থেকে রেহাই পাওয়ার মতো তেমন কোনো ঔষুধ এখনো তৈরি হয় নি। যেহেতু করোনা ভাইরাসের প্রথম লক্ষন গুলোর ভেতর জ্বর, মাথাব্যাথা রয়েছে তাই প্রাথমিক কাজ হবে এসব সারানো।
এজন্য-
১। জ্বর কমাতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ঔষুধ নিতে হবে। ডাক্তার দেখাতে হবে।
২। বেশি করে পানি খেতে হবে।
৩। প্রচুর বিশ্রাম নিতে হবে।
৪। শরীরে অতিরিক্ত চাপ ফেলা যাবে না৷
যদি করোনাভাইরাস আক্রমণের স্বীকার হয়েই যান তবে আপনার দায়িত্ব থাকবে অন্যের থেকে দূরে থাকা। এতে অন্যরাও ভাইরাসটির ছড়িয়ে যাওয়া থেকে পরিত্রাণ পাবে।
এজন্য-
১। রুমাল ব্যবহার করতে হবে।
২। যেখানে সেখানে কফ, থুতু ফেলা যাবে না।
৩। বেশি করে হাত ধুতে হবে।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলাঃ
যেহেতু করোনাভাইরাসের নির্দিষ্ট কোনো ভ্যাক্সিন কিংবা ঔষুধ নেই তাই এটিকে সামলানো অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মতে যেকোনো সময়ই করোনা বাংলাদেশকে আক্রমণ করতে পারে। সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তিনি আরো বলেছেন রাস্তায় আবর্জনা লাগানো কুকুর, বেড়াল এসবের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে করোনা। তাই যথাসম্ভব এসব থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব অবলম্বন করতে হবে।
চিনের এই দুর্দিনে তাদের সহ্য করতে হচ্ছে এক করুন যন্ত্রনা। মৃত্যুর কোলে ঢলে পরছে হাজারো জনতা। প্রার্থনা থাকছে মহান আল্লাহর নিকট যাতে এই দুর্দিন আমাদের না দেখতে হয়। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ।