ডক্টর না ইঞ্জিনিয়ার ? জন্মের আগে থেকে বাবা মা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যে তার ছেলে বা মেয়ে বড় হয়ে কি হবে। ভাবতে খারাপ লাগে, কিন্তু এটাই বাস্তব। কেউ কোনোদিন চিন্তা করেনা যে সন্তান কি চায়, তার প্রকৃত প্রতিভা কোন জাগায়। জন্ম নেওয়ার সাথে সাথে নির্ধারণ করে দেওয়া হয় তার লক্ষ্য। সেই লক্ষের দিকে এগোতে থাকলে সন্তান ভালো না হলে সে খারাপ। কেনো ? সেই সন্তানের কি দোষ ? মহান সৃষ্টিকর্তা তো সেই সন্তান কে সব গুণাবলী নাও দিতে পারেন। সেই সন্তান হয়ত রাজনীতি তে অনেক ভালো করতে পারতো বা ব্যাবসা তে অনেক উন্নতি করতে পারতো। কেনো সেই সন্তান কে তার স্বপ্ন থেকে দূরে রাখা হয় ? ডক্টর বা ইঞ্জিনিয়ার ছাড়া কি অন্য কোনো কিছু তে সম্মান নেই ? এই পৃথিবী তে সব সন্তান আশীর্বাদ, কেউ অভিশাপ না। বাবা মা এর উচিত সব সন্তান কে সেই সন্তান এর মূল প্রতিভা এর দিকে এগোতে সাহায্য করা। সেই প্রতিভা পুরোপুরি বিকাশে সাহায্য করা। কারন এভাবেই সন্তান বাবা মা কে সবচাইতে ভালো ফলাফল এনে দিতে পারবে। ছেলেমেয়ের মন বুঝে তাদের মূল প্রতিভা খুঁজে বের করতে হবে। তাদের বুঝানো উচিত বাবা মা এর উপর কোনো বন্ধু নেই। সন্তান কোনো ভুল করে থাকলে তাকে শাসন করার চেয়ে উত্তম তাকে আগে তার ভুল টা ধরিয়ে দেওয়া এবং তার ভুল টা কেনো ভুল টা বুঝানো। এতে সেই সন্তান পরবর্তী তে কোনো ভুল করলে বুঝতে পারবে এবং সত্য বলা শিখবে। সন্তান সত্য বললে তাকে কখনও এমন ভাবে শাসন করা উচিত হবেনা কেনো সে পরে ভবিষ্যতে কখনও সত্য বলার সাহস খুঁজে না পায়। সন্তান পৃথিবী তে আসে তার বাবা মা এর জন্য, নিজের ইচ্ছা তে আসেনা। পৃথিবীতে এসে ও সন্তান তার বাবা মা এর স্বপ্ন পূরণ করতে লেগে যায়। নিজের স্বপ্ন টা যখন সে বুঝতে পারে তখন অনেক দেরি হতে যায়, কিছুই করার থাকেনা। আর যারা বুঝতে পারে এবং বাবা মা এর স্বপ্ন বাদ দিয়ে নিজের স্বপ্ন এর পিছনে দৌড়ায় তারা বাবা মা এর কাছে খারাপ সন্তান হিসেবে পরিচিত হয়। মানুষ বাইরের পরিবেশে সারাদিন ঘুরে বাসায় আসে শান্তিতে একটু বিশ্রাম নিতে, কিন্তু বাবা মা এর খারাপ ব্যাবহার সেই বিশ্রাম টিও কেরে নেয় কখোনো কখোনো। না পারে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে, ন পারে বাবা মা এর স্বপ্ন পূরণ করতে। ভেঙে পরে সেই সন্তান, কোনো কিছু ভালো লাগেনা তখন আর। আর এই সময় তার সঙ্গী হতে চায় নানান রকম খারাপ কর্ম। যখন থেকে সন্তান বুঝতে শিখে তখন থেকে তাকে বাবা মার ও বুঝতে শিখে উচিত। সত্যি কথা বলতে শিখানো উচিত। বাবা মা কে ভয়ের থেকে যেনো সম্মান টা বেশি করে সেই দিকে খেয়াল রাখা উচিত। আবারও বলতে চাই, সন্তান নিজের ইচ্ছায় এই পৃথিতে আসে না। আমাদের এই বাংলাদেশের সমাজ খুবই আজব। মানুষ কি বলে না বলে তার উপর ভিত্তি করে সন্তান বড় করা হয়। কেনো? শুধু একটাই প্রশ্ন আমার, সন্তান এর দোষ টা কোথায়?
একটি শিশুর প্রথম তিন বছর বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ।
এ সময়ে শিশুর মস্তিস্ক নমনীয় থাকে এবং দ্রুত বিকশিত হয়। শিশুর ভালো ও খারাপ অভিজ্ঞতাগুলো মস্তিস্কের বৃদ্ধির ওপর কড়া প্রভাব ফেলে । এই সময়ে অবহেলা বা নির্যাতন শিশুর বুদ্ধিবৃত্তি, আচরণ ও আবেগের ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করে। কাজেই এই সময় থেকেই শিশু কে খুব সতর্কতার সাথে বড় করতে হবে। শিশুর শিক্ষাগত সাফল্যের জন্য অভিভাবকরা খুব বেশি যত্মশীল হলেও অধিকাংশই জানেন না যে, উদ্দীপনা ও নিরাপত্তার অভাব শিশুর শ্রেণিকক্ষের কর্মকাণ্ডে ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
একটি শিশু মানুষ হিসেবে কেমন হবে, তার অনেকখানি নির্ভর করে তাকে কোন পদ্ধতিতে লালন-পালন করা হচ্ছে তার ওপর। নগরভিত্তিক সমাজে শিশুরা চার দেয়ালের ভেতর বন্দি থাকে। তারা বাইরে থেকে শেখার সুযোগ খুব কম পায়, আর এ কারণেই মা-বাবার লালন-পালন পদ্ধতি শিশুর ওপর অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। শিশুটি আত্মবিশ্বাসী ও সহযোগিতার মনোভাব সম্পন্ন হবে, নাকি বিদ্রোহী অথবা প্যাসিভ হবে, তা লালন-পালনের ওপর নির্ভর করে। একটি শিশুকে শুধু মা-বাবাই লালন-পালন করেন না, পরিবারের সবাই লালন করে থাকে। তাই পরিবারের সবাইকে শিখতে হবে শিশু কোন পদ্ধতিতে লালন-পালন করতে হয়। মা-বাবাসহ পরিবারের সবাই একটি ভালো পদ্ধতি ব্যবহার করে শিশুকে লালন করতে হবে।