মানুষ সামাজিক প্রাণী। সমাজ ছাড়া কেউই বাঁচতে পারে না।আর এই সমাজের বুনিয়াদেই তৈরি হয় একটি রাষ্ট্র। তাই সমাজ একজন মানুষের ব্যাক্তিত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
অনেকগুলো পরিবার,তাতে হয় একটি সমাজ। আবার অনেকগুলো মানুষকে ঘিরে একটি পরিবার। তাহলে পরিবারের মূল তত্ত্ব কি? মূল তত্ত্ব/উপাদান যা-ই বলি না কেন, সম্পর্কই হচ্ছে আসল বিষয়।
পারিবারিক জীবনে সম্পর্কের শেষ নেই। একজন মানুষের বাবার দিক থেকে দাদা-দাদি, চাচা-ফুপু যেমন রয়েছেন; তেমনি মায়ের দিক থেকে রয়েছেন নানা-নানি, মামা-খালা শ্রেনীয় আত্মীয় স্বজন। এসকল মাধ্যমেই কেবল আত্মীয় হয় না। একজন মানুষ জীবনের বিভিন্ন স্তরে চলতে ফিরতে পরিচিত হয় হাজার মানুষের সাথে। তৈরি হয় নতুন সম্পর্ক। আবার বিয়ের মাধ্যমেও নতুন পরিবারে যোগ দিয়ে নতুন সম্পর্কে যুক্ত হয়।
সম্পর্ক কি কেবলই আত্মীয়তা রক্ষার্থের জন্য নাকি কেবলই নিজের স্বার্থরক্ষা? জীবনে থাকা প্রত্যেকটা মানুষের সাথে সম্পর্ক মূল্যবান। তাই সম্পর্ককে করতে হয় পরিচর্যা। আমরা যেমন বাগান করতে গিয়ে বীজ মাটিতে পুঁতে চারা হবার আশায় থাকি,আবার চারা হলে তাকে যত্ন-আত্তি করে বড় করে তা থেকে ফুল-ফল হলে আনন্দ লাভ করি; মানবিক সম্পর্কগুলো এমনই।
ইতিবাচকতা সম্পর্ক অটুট রাখার একটি অন্যতম উপায়। এ কারণে সম্পর্কে ভুল করলেও তাকে ঠিক করার একটা রাস্তা পাওয়া যায়। প্রতিটি সম্পর্কে সম্মানের স্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বয়স বা শ্রেনীভেদে সম্মান দেখাতে কার্পণ্য করা ঠিক নয়,তাতে দূরত্ব বাড়ে। অথচ একজন মানুষ অন্য মানুষকে সম্মান করার মাধ্যমে নিজের উদার মনের প্রকাশ ঘটিয়ে থাকে।
অহংকার বা হীনমন্যতা কেবল সম্পর্কের অবনতিই ঘটাতে পারে। সম্পর্ক নস্ট হয়ে যাওয়ার মতো তিক্ততা আর কোন কিছুতেই ঠিক করা সম্ভব হয় না। এতে একপক্ষ যেমন কস্ট পায়,অন্য পক্ষের ভিতর ঘৃণার সৃস্টি হয়। তাতে কেউই ভালো থাকতে পারে না। জীবনে নেমে আসে চরম অশান্তি। এতে করে সেই মানুষগুলো তাদের জীবনের অন্যান্য সম্পর্কগুলোকে অবহেলা করতে শুরু করে।
মানুষের জীবন খুব ছোট। সেই ছোট এক জীবনে ছোট ছোট সম্পর্কগুলোকে বেঁধে রাখতে হবে মায়ার বাঁধনে। তবে সেই সম্পর্ক টেনে রেখে কোনই লাভ নেই,যা থাকার নয়। কেননা সেই সম্পর্ক কেবল কস্টই দিতে পারে। তাই যে কারো সাথে, যেকোন সম্পর্কের মূল্য নিজেদের বুঝতে হবে। তাতেই নিজের জীবনের সুখ, সমাজ তথা পারিবারিক জীবনে নিজেই তৈরি করতে ও ধরে রাখতে পারবে।
সবাই সুখী থাকুন।নিজে ভালো থাকুন এবং অন্যকে ভালো রাখুন; এটাই হোক আমাদের জীবনের সকল সম্পর্ক সুন্দর রাখার মূলমন্ত্র।