সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়গুলোর একটি হলো লেবু পানি পান করা। নিয়মিত লেবু পানি পান করলে সর্দি কাশি, বদহজমসহ আরও অনেক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়।
**লেবু পানির উপকারিতা:
১. ওজন কমাতে সাহায্য করে:
লেবুর রসের এন্টি অক্সিডেন্ট ওজন কমাতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত মেদ কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো লেবু পানি পান করা। লেবুর পেকটিন ফাইবার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে।
২. হজমে সাহায্য করে:
লেবু পানি হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে নিয়মিত পান করলে খাদ্য হজমের জন্য অন্ত্রের উপযুক্ত পরিবেশ বজায় থাকে। হজমতন্ত্রকে উন্নত করে সমস্যা দূরে রাখে এই পানীয়।
৩. এনজাইমের কার্যকারিতা বাড়ায়:
লেবু পানির ব্যবহারে লিভার দেহের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজনীয় এনজাইম তৈরি করতে পারে। ফলে দেহের আভ্যন্তরীন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে। কুসুম গরম পানির অণুগুলো সাধারণ ঠান্ডা পানির অণুর চেয়ে দ্রুত কাজ করে।
৪. দেহকে সতেজ রাখে:
পাকা লেবুতে থাকে ইলেকট্রোলাইট সময়। সকাল সকাল লেবু পানি দেহকে হাইড্রেট করে এবং যোগান দেয় পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান। সকালের এক গ্লাস লেবু পানি সারাদিন শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। দুর্বলতা দূর করে কাজের উদ্দীপনা ধরে রাখে। ফুরফুরে ও সতেজ অনুভূতি সৃষ্টি করে।
৫. ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে রক্ষা করে:
সর্দি কাশি, সাইনাসের সমস্যা ও অন্যান্য ঠান্ডাজনিত রোগে অনেকে মানুষই আক্রান্ত হয়। লেবু পানি এসব রোগ প্রতিরোধের জন্য দেহকে শক্তিশালী করে তোলে। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এই পানীয়।
৬. ত্বক ভালো রাখে:
লেবুতে আছে ভিটামিন ‘সি’। ভিটামিন ‘সি’ ত্বকের বলিরেখা দূর করে, শুষ্ক ত্বককে পক্বতা থেকে রক্ষা করে এবং সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের জন্যও দারুন কাজ করে লেবু পানি। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
৭. কিডনির পাথর প্রতিরোধ:
লেবুর সাইট্রিক এসিড কিডনির পাথর প্রতিরোধে সহায়ক। সাইট্রিক এসিডের একটি উপাদান হলো সাইট্রেট। সাইট্রেট মূত্রকে কম এসিডিয় করে এবং কিডনির ছোট পাথরকে ভেঙ্গে ফেলতে পারে।
৮. গর্ভাবস্থায় লেবু পানি:
লেবু পানি গর্ভবতী নারীদের জন্য খুবই উপকারী। শরীর ভালো রাখার পাশাপাশি গর্ভের শিশুর অনেক উপকার করে। লেবুর ভিটামিন ‘সি’ ও পটাশিয়াম শিশুর হাড়, মস্তিষ্ক ও দেহের কোষ গঠনে সাহায্য করে। মাকেও গর্ভকালে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।
৯. লেবু পানি লিভার থেকে টক্সিক উপাদান দূর করে লিভারকে পরিস্কার রাখে। পেট পরিষ্কার ও ভালো টয়লেট হতে সাহায্য করে।
১০. নার্ভাস সিস্টেমের উপর দারুন কাজ করে লেবু পানি। লেবুর পটাশিয়াম বিষন্নতা ও উৎকণ্ঠা দূর করতে সহায়ক।
১১. শরীরের পি এইচ লেভেল নিয়ন্ত্রণে লেবু পানি ভূমিকা রাখে। পি এইচ লেভেল যত উন্নত, শরীর তত ভালোভাবে রোগের সাথে লড়াই করতে পারে।
১২. হাড় জয়েন্ট ও মাংসপেশির ব্যাথা কমায় দ্রুত।
** পান করার নিয়ম:
সকাল খালি পেটে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে পাকা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। সাথে মধুও যোগ করতে পারেন।
** যাদের লেবু পানি পান করা উচিত নয়:
যাদের অতিরিক্ত এসিডিটি সমস্যা আছে তাদের জন্য লেবু পানি তেমন উপযোগী নয়। এতে এসিডিটি বাড়তে পারে।