আমরা অনেকেই আছি যারা একদমই জানি না,
যে কোনটা আমাদের স্কিনটোন আর কোনটাই বা
আমাদের আন্ডারটোন।
এই বিষয়টা নিয়ে অনেকের মধ্যেই অনেক রকম
চিন্তা কাজ করে।
আবার অনেকেই রয়েছে এই বিষয়টা নিয়ে তাদের
তেমন কোনো গুরুত্বই দেয় না। তার প্রধান কারণ
হচ্ছে এই বিষয়টা সম্পর্কে চারদিকে খুব বেশি
একটা আলোচনা আমরা কারো মুখে শুনতে পাই
না।
তাই এই বিষয়টা নিয়ে জানার কৌতুহল ও
আমাদের মধ্যে তেমন একটা সৃষ্টি হয় না।
কিন্তু এই বিষয়টা সম্পর্কে জ্ঞান থাকাটা খুব বেশিই
প্রয়োজন।
এই বিষয়টা সম্পর্কে জানা থাকলে, পোষাক ও
মেকআপ এর ক্ষেত্রে কোন রং আপনার জন্য
প্রযোজ্য?
কোনটিতে আপনাকে ভালো মানাবে?
পোশাক ও মেকআপের ক্ষেত্রে কোন রঙটি আপনি
আপনার জন্য নির্বাচন করবেন?
তা নির্ণয় করা আপনার জন্য একদমই সহজলভ্য
একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।
অনেক সময়ই হয়তো ব্যাপারটা আপনারা লক্ষ্য
করেছেন?
পোশাক ও মেকআপের ক্ষেত্রে কিছু এমন রঙ
আছে যেগুলোতে বেশ চমৎকার ভাবে মানিয়ে যায়
আপনাকে।
আবার কিছু রঙ তো এমন হয়, সেইগুলো তে
কিছুতেই যেনো আপনাকে মানাতেই চায় না।
এর মূল কারণ হচ্ছে স্কিনটোন ও আন্ডারটোন।
আসলে আমাদের গায়ের রং হচ্ছে স্কিনটোন ও
আন্ডারটোন এই দুটির সংমিশ্রণ।
তাই পোশাক ও মেকআপ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে
স্কিনটোন ও আন্ডারটোন সম্পর্কে জ্ঞান থাকাটা
খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।
স্কিনটোন কি?
আমাদের ত্বকের উপরিভাগটি যে রং দিয়ে আবৃত
সেইটিই হচ্ছে আমাদের স্কিনটোন।
স্কিনটোন মূলত চার ধরনের:
১. ফর্সা,
এই টোনটির অধিকারীদের ত্বকে মেলানিনের
পরিমাণ সবচেয়ে কম থাকে।
২. উজ্জল,
এই রঙটি হালকা হলেও কিছুটা রঙের ছটা থাকে।
৩. শ্যামলা,
এই টোনের অধিকারীদের ত্বকে মেলানিনের
পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে বেশি থাকে।
ফলে রঙের ঘনত্ব ও কিছুটা ঘারো হয়ে থাকে।
৪. কালো,
এই টোনের অধিকারীদের ত্বকে মেলানিনের
পরিমাণ ও রঙের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
মনে রাখবেন: এই স্কিনটোন কিন্তু রোদে পোড়ার
প্রভাবে বা যেকোনো চর্ম রোগের ফলে পরিবর্তন
হতে পারে।
স্কিনটোন নির্ণয়ের উপায়:
প্রথমে মুখটি ভালো করে পরিষ্কার করে নিবেন।
এরপর দিনের আলোয় আয়নার দিকে তাকিয়ে
আপনি আপনার স্কিনটোন নির্ণয় করুন।
তবে সরাসরি সূর্যের আলো বা কৃত্রিম আলোয়
স্কিনটোন নির্ণয় করা যাবে না।
এবং মনে রাখবেন মুখে যেনো কোন রকম
প্রসাধনী না থাকে।
আন্ডারটোন কি?
আমাদের ত্বকের অভ্যন্তরীণে যে রং থাকে, এবং
ত্বকের ভিতর থেকে যেই রং বাহিরের দিকে
প্রতিফলিত হয় তাকে আন্ডারটোন বলে।
আন্ডারটোন মূলত তিন প্রকার:
১. শীতল (লাল গোলাপি ও নীলাভ রঙের)।
২. উষ্ণ (হলুদ সোনালী বা কমলা রঙের)।
৩. নিরপেক্ষ (উপরের রঙের গুলোর সংমিশ্রণ)।
আন্ডারটোন নির্ণয় করার উপায়:
তিনটি ধাপে মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার
আন্ডারটোন নির্ণয় করতে পারে।
প্রথম ধাপ:
প্রথমে আপনি আপনার হাতের কব্জির শিরাটিকে
পানি দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। এইবার
শিরাটির দিকে লক্ষ্য করুন।
১. যদি আপনার শিরাটি নীল বা বেগুনি রঙের হয়,
তাহলে আপনার শীতল আন্ডারটোন।
২. সবুজ বা জলপাই রঙের হলে, উষ্ণ
আন্ডারটোন।
৩. যদি উপরের বলা রং গুলোর মিশ্রন দেখা যায়
বা সঠিক রঙ বুঝতে কোনো সমস্যা হয়,
তাহলে বুঝতে হবে এটি নিরপেক্ষ আন্ডারটোন।
দ্বিতীয় ধাপ:
আপনি একটা সাদা রঙের পোশাক পরে নিন।
বা একটা সাদা কাগজ আপনার গলার ও বুকের
উপরিভাগ পর্যন্ত ধরুন।
১. যদি কাগজের তুলনায় আপনার গায়ের রং
গোলাপি বা লালচে দেখায় তাহলে, আপনার
আন্ডারটোনটি হচ্ছে শীতল।
২. যদি কাগজের তুলনায় হলুদ বা সোনালী দেখায়
তাহলে,
আপনার আন্ডারটোনটি হচ্ছে উষ্ণ।
৩. আর যদি তুলনা করা কঠিন হয় বা উপরের রঙ
গুলোর সংমিশ্রণ দেখতে পান।
তাহলে বুঝবেন, আপনার
আন্ডারটোনটি হচ্ছে নিরপেক্ষ ।
তৃতীয় ধাপ:
১. যদি স্বর্ণের জুয়েলারিতে আপনাকে বেশি মানায়
তাহলে বুঝতে হবে উষ্ণ আন্ডারটোনের অধিকারী
আপনি।
২. যদি রুপার জুয়েলারিতে আপনাকে স্বর্ণের
থেকেও বেশি আকর্ষণীয় লাগে তাহলে বুঝতে হবে
আপনি শীতল আন্ডারটেনের অধিকারী।
৩. আর যদি দুটোতেই আপনাকে সমানভাবে
মানায় তাহলে বুঝতে হবে আপনি নিরপেক্ষ
আন্ডারটোনের অধিকারী।
লিখেছেন – ফারিসতা ফারহা