সব মানুষই নিজের দায়িত্ব নিয়ে সচেতন থাকেন। এই যেমন একজন শিক্ষকের দায়িত্ব সঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছে ছাত্রদের শিক্ষা দেয়া। কিন্তু যদি তার যাতায়াত পথ উন্নত না হয়? কথায় বলে ইচ্ছা থাকিলে উপায় হয়। আর এ কথারই বাস্তবিক প্রমাণ দেখালেন ভারতের কেরালার একজন শিক্ষক।
পরিবহন ব্যবস্থার সুবিধা না থাকায় বাসে করে স্কুলে পৌঁছাতে অনেক দেরি হয়ে যায়। কিন্তু নিজের দায়িত্বের ব্যাপারে বেশ সচেতন তিনি। আর সময়মত বিদ্যালয়ে পৌঁছার জন্য তিনি যে অবলম্বন করেন, তা অনেককেই অবাক করতে বাধ্য করে।
কেরালার মালাপ্পুরমের বাসিন্দা আবদুল মালিক। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনরত রয়েছেন ছেচল্লিশ বছরেরর এই ব্যাক্তি। বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব কেবল ১২ কিলোমিটার। বাস বা ট্রেনে যেতে এটুকু রাস্তায় কতখানি বা সময় লাগতে পারে? কিন্তু আবদুল মালিকের সেই রাস্তা যেতে প্রায় ২-৩ ঘন্টা সময় লেগে যায়। এর কারণ রাজ্যের দূর্বল পরিবহন ব্যাবস্থা।
সময় নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি স্কুলে পৌঁছাতে অনেক দেরি হয়ে যায়। কিন্তু নিজের দায়িত্ব পালন করতে হলে তাকে যে সময়মত স্কুলে পৌঁছাতেই হবে। সবমিলিয়ে তিনি ভুগছিলেন বিবেকের দংশনে। তাই তিনি স্কুলে সময়মত পৌঁছানোর জন্য একটি বিকল্প পথ খুঁজে বের করেন। নদী পার হয়ে স্কুলে যাওয়ার সিদ্ধার্ত নেন তিনি।
অনেকেই ভাঁবছেন যে নৌকা দিয়ে যাবেন স্কুলে, আসলে না, অবাক করা হলেও সত্যি যে তিনি প্রতিদিন সাঁতার কেটে স্কুলে যান। রোজ সকাল ৯ টায় বাড়ি থেকে বের হন তিনি। এরপর নিজের পোশাক ,জুতা আর অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে নেন একটি প্লাস্টিকের মধ্যে নিয়ে নিজের কাঁধে তুলে নেন।
কোমরে টায়ার জরিয়ে সাঁতার কেটে নদী পার হন। নদী পার হবার পর নিজের পোশাক পরিবর্তন করে নেন। তারপর ধীরে সুস্থে পাহাড়ের পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যান।
এভাবে টানা বিশ বছর ধরে স্কুলে যান তিনি। এরকমভাবে স্কুলে যেতে তার কোন ক্লান্তি নেই বরং সল্প সময়ে আর যাতায়াত খরচ বেচে যাওয়ায় খুব খুশি এই স্কুল শিক্ষক।
আবদুল মালিকের এমন সময়ানুবর্তীতা দেখে তার সহকর্মীরা সবাই মুগ্ধ হণ। এমন শিক্ষকের কাছে পড়ার জন্য ছাত্ররাও অনেক গর্বিত।