প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের স্মার্টফোনগুলো। ব্যবহারকারীদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হচ্ছে উন্নত, আকর্ষনীয় এবং অসাধারন সব ফিচারের ফোন। তাই আজকে আমরা জানব এমনই কয়েকটি স্মার্টফোন সম্পর্কে যেগুলো ২০১৭-২০১৮ সালে পুরো বিশ্ব কাঁপিয়েছে/কাঁপাচ্ছে।
তো চলুন শুরু করা যাক:
১০. রেজর ফোন
তালিকার দশ নম্বরে আছে রেজার ফোন। রেজার এতদিন গেমিং নোটবুক ও এক্সেসরিজ তৈরি করে আসলেও এখন তারা ফোন তৈরিতেও মনোযোগ দিয়েছে। কোম্পানিটি যেহেতু গেমিং নিয়ে কাজ করে তাই তাদের ফোনটিও গেমিং ফোন। ডিভাইসটির বিশেষত্ব হল এর ১২০ হার্টজের গেমিং ডিসপ্লে, সাথে স্টেরিও সাউন্ড সিস্টেম। সিম্পল সলিড ব্লক শেইপের ফোনটিতে রয়েছে স্ন্যাপড্রাগন ৮৩৫ সিস্টেম-অন-চিপ। সাথে রয়েছে ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজ। ক্যামেরার ক্ষেত্রেও রেজার কার্পণ্য করেনি। ডুয়াল ১২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা সেটাপ ৪০০০ এমএএইচ ব্যাটারি রয়েছে এটিতে। রেজর ফোনের স্ক্রিন এবং গ্রাফিক্স অন্য যেকোনো ফোনের জন্য স্ট্যান্ডার্ড বলা যায়। এর দাম ৫৮,০০০ টাকার আশেপাশে।
৯. ওয়ানপ্লাস ৫টি
৮. শাওমি মি মিক্স ২এস
৭. গুগল পিক্সেল ২
সফটওয়্যার ও সার্ভিস বিজনেসের পাশাপাশি গুগলের হার্ডওয়্যার বিজনেসের অংশ হিসেবে ২০১৬তে বাজারে এসেছিল পিক্সেল ফোন। এরই ধারাবাহিকতায় পরের বছরই আসে পিক্সেল ২ ও পিক্সেল ২ এক্সএল। পিক্সেল ২ এর অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এতে গতানুগতিক ডুয়াল ক্যামেরা ছাড়াই সিঙ্গেল ক্যামেরা দিয়েই অসাধারণ শ্যালো ডেপথ অফ ফিল্ড তৈরি করা যায়, ফলে এর পোট্রেট মোডে ছবি তুললে বোকেহ ইফেক্ট পাওয়া যায়। এতেও স্ন্যাপড্রাগন ৮৩৫ চিপসেটের সাথে সর্বোচ্চ ৪ জিবি পর্যন্ত র্যাম ও ১২৮ জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ অপশন পাওয়া যাবে। ৭৮,০০০ টাকার মত।
৬. পিক্সেল ২ এক্সএল
পিক্সেল ২ এর সাথেই রিলিজ হওয়া এই ফোনটির প্রায় সব স্পেসিফিকেশন পিক্সেল ২ এর মতই। এতে ১৮:৯ রেশিও এর তুলনামূলক বড় ডিসপ্লে ও বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়েছে। গুগল পিক্সেল ২ ফোনে যত সুবিধা আছে, পিক্সেল ২ এক্সএল ফোনে তার থেকেও বেশি সুবিধা পাওয়া যায়। এতে আছে কম বেজেলের ৬ ইঞ্চি স্ক্রিন, ১২.২ মেগাপিক্সেল ব্যাক ও ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা, স্ন্যাপড্রাগন ৮৩৫ প্রসেসর, ৪ জিবি র্যাম, ৬৪/১২৮জিবি স্টোরেজ, ৩৫২০ এমএএইচ ব্যাটারি প্রভৃতি। দাম ৮৬,৫০০ টাকার আশেপাশে।
৫. আইফোন ৮ প্লাস
তালিকার পাঁচ এ অবস্থান করছে অ্যাপলের লেটেস্ট তিনটি ফ্ল্যাগশিপের একটি। এটি হল আইফোন ৮ প্লাস। কাছাকাছি স্পেসিফিকেশনের কিন্তু একটু ছোট ডিসপ্লেওয়ালা আইফোন ৮ ও আছে এর সাথে। ফোনটিতে ব্যবহৃত হয়েছে গ্লাস বডি এবং অ্যাপলের বিখ্যাত ক্রিসপি রেটিনা ডিসপ্লে। ফোনটিতে অ্যাপলের ফ্ল্যাগশিপ প্রসেসর এ১১ রয়েছে। সাথে আছে প্রফেশনাল পোট্রেট ছবি তোলার মত ডুয়াল ক্যামেরা সেটাপ। দাম ৭৭,০০০ টাকার আশেপাশে।
৪. আইফোন টেন
তালিকার চার নম্বরে আছে অ্যাপলের সবচেয়ে হাইপড মডেল আইফোন X (পড়ুন আইফোন টেন)। অ্যাপলের ১০ বছর পূর্তিতে রিলিজ পাওয়া বেজেললেস এই ফোনটিতে কোম্পানিটির চিরাচরিত টাচ আইডি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর নেই। তার বদলে আছে ফেইস রিকগনিশন ফিচার। বেজেললেস হলেও উপরের দিকে ক্যামেরা মডিউল এর জন্য রয়েছে নচ। অ্যাপলের এ১১ বায়োনিক এসওসি নিয়ে ফোনটি অত্যন্ত দ্রুতগতির। সাথে রয়েছে মূল ডুয়াল ক্যামেরা সেটাপ। দাম ৯৪,০০০ টাকার কাছাকাছি।
৩. হুয়াওয়ে পি২০ প্রো
দুঃখিত আইফোন ফ্যানস। আইফোন ১০ এর আগে স্থান পাবে সদ্য রিলিজ হওয়া হুয়াওয়ে এর ফ্ল্যাগশিপ পি২০ প্রো। তাদের পি সিরিজটি ক্যামেরা ফোন হিসেবেই পরিচিত। ব্যতিক্রম নেই পি ২০প্রো’তেও। এতে একটি নয়, দুইটি নয়, রয়েছে তিন তিনটি রিয়ার ক্যামেরা। সাথে রয়েছে বেজেললেস নচ ওয়ালা স্টাইলিশ ডিজাইন এবং স্ন্যাপড্রাগনের পাওয়ারফুল ৮৪৫ সিস্টেম অন চিপ। এর একটি লাইট ভার্সনও আছে যেটি পি ২০ নামে পরিচিত। হুয়াওয়ে পি২০ প্রো এর দাম ৯২,০০০ টাকার কাছাকাছি।
২. স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৯
স্যামসাং এর ফ্ল্যাগশিপ নিয়ে সবারই একটা অন্যরকম আগ্রহ থাকে। ফোনটিতে গ্যালাক্সি এস৮ এর মতই তাদের ইনফিনিটি ডিসপ্লে ব্যবহৃত হয়েছে। এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফিচার হল এর ভ্যারিয়েবল এপারচার ক্যামেরা যা লো-লাইটে খুব ভাল ছবি তুলতে পারে। সাথে আছে ৯৬০ এফপিএস-এ সুপার স্লো মোশনে ভিডিও রেকর্ড করার সুবিধা। এতে পাওয়ার দিচ্ছে স্ন্যাপড্রাগনের ৮৪৫ চিপসেট আর রয়েছে ১২৮ জিবি পর্যন্ত ইন্টারনাল স্টোরেজ। দাম ৯০,০০০ টাকার আশেপাশে।
১. স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৯+
চলে এলাম আমাদের ২০১৮ এর সেরা ফোনে। এটি হল স্যামসাং এর গ্যালাক্সি এস ৯+ । এর স্পেসিফিকেশন ও ফিচার অনেকটা এস ৯ এর মতই। শুধু ব্যতিক্রম হিসেবে এতে রয়েছে একটু বড় ডিসপ্লে, বড় ব্যাটারি আর প্রফেশনাল পোট্রেট ফটোগ্রাফির জন্য ডুয়াল ক্যামেরা সেটআপ। দাম ১০৫,৯০০ টাকার মত। স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৯+ এর স্পেসিফিকেশন নিম্নরূপঃ
- স্ন্যাপড্রাগন ৮৪৫ (যুক্তরাষ্ট্রের জন্য)/অন্যত্র এক্সাইনস ৯৮১০ প্রসেসর
- ৬.২ ইঞ্চি কিউএইচডি (২৯৬০ x ১৪৪০পি) সুপার অ্যামোলেড স্ক্রিন
- ৬জিবি র্যাম, ৬৪জিবি স্টোরেজ, মাইক্রোএসডি কার্ড স্লট
- এন্ড্রয়েড ৮ ওরিও অপারেটিং সিস্টেম
- পেছনের দিকে ২টি ক্যামেরা, ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা
- ভ্যারিয়েবল অ্যাপার্চার, ৯৬০ ফ্রেম/সেকেন্ড সুপার স্লো মোশন ভিডিও
- আইপি৬৮ ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স, ডলবি অ্যাটমস সাউন্ড
- ব্লুটুথ ৫.০, এআর ইমোজি, হেডফোন জ্যাক
- পেছনের ক্যামেরার নিচে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার (স্ক্রিনের ওপর নয় কিন্তু!)
- ৩৫০০ এমএএইচ ব্যাটারি, ডুয়াল সিম, ফোরজি
- রঙঃ পার্পল, ব্ল্যাক, ব্লু, গ্রে।