১৯ জুন,২০০৭ সাল।রাত ১১ টা।শিমুল একজন এম্বুলেন্স ড্রাইভার একটা মেডিকেলের।প্রায় ৭/৮ বছর ধরে সে এম্বুলেন্স চালিয়ে আসছে। যাই হোক। সে খবর পেলো একটা এক্সিডেন্ট কেস আছে,তাকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার যেতে হবে লাশ রিসিভ করতে,আর নিয়ে আসতে হবে হাসপাতালে।তো সে বললো স্যার আজ আমি বাসায় ১২ টার মধ্যে যেতে চাই,আমার এই শিফট টা ক্যান্সেল হলে খুব ভালো হয়,কিন্তু কাজ হলো না,শিমুল ছাড়া সবাই যে যার নিজের নিজের কাজে বেরিয়ে পড়েছে,তো শিমুলকেই বের হতে হবে এম্বুলেন্স নিয়ে।তো আর কি করতো সে রওনা হলো লাশের উদ্দেশ্যে।সব কিছুই বরাবরের মতই নরমাল।
সে গাড়িতে জোরে গান ছাড়লো,আর সিগারেট জালিয়ে ড্রাইভ করতে লাগলো।প্রায় ৫০ কিলোমিটার চলার পর দেখলো রাস্তার পাশে থেকে ৩জন লোক লিফটের জন্য হাত তুলেছে,একটু কাছে যেতেই হেডলাইটের আলোই দেখে যে লোকগুলার সাথে একটা কফিনে মোড়ানো লাশ।সে স্বাভাবিক ভাবেই ব্রেক করে দাড়ালো আর লোক গুলো বললো ভাই আমরা বিপদে পড়েছি,লাশ টা নাকি একটা মেয়ের ২ ঘন্টা হয়েছে সে মেয়ে মারা গেছে আত্নহত্যা করে।
এখন পোষ্টমাডামের জন্য হাসপাতালে নিতে হবে।তো শিমুল বললো আচ্ছা ভাই আমি তো একটা লাশ নিতে যাচ্ছি “অমুক গ্রামে” আপনারা যদি হাসপাতালে নিতে চান তবে আমার এম্বুলেন্স এ অই লাশ রিসিভ করে একসাথে নিয়ে যেতে পারি,এক্ষেত্রে আমার সাথে যেতে হবে।তো ৩ ভদ্রলোক বললো আচ্ছা ঠিক আছে ভাই ধন্যবাদ!!শিমুল যখন লাশটা তুলতে হাত লাগালো তার শরীর ছিমছিম করে উঠে।তবে সেটাকে মাথায় না নিয়েই ড্রাইভিং এ বসে পড়ে।আর বাকি ৩জন লাশের পাশে বসলো পেছনে।
যা হোক।সে সময় দেখলো ১.২০ বেজে গেছে।গান ছেড়ে আরেকটা সিগারেট জালালো।প্রায় ১০ মিনিট গাড়ি চালানোর পরে সে দেখলো এম্বুলেন্স যেন ভারী হয়ে যাচ্ছে,যেমন ঃ- যদি এম্বুলেন্স লোড থাকলে যেমন হয় সেরকম।সে অবাক হলো,ভাবলো ইঞ্জিনের সমস্যা এটা।গিয়ার বাড়িয়ে চালাতে শুরু করলো।পেছনে একবার তাকালো দেখলো ৩ ভদ্রলোক ঝিমাচ্ছে।মুচকি হেসে আবার চলতে শুরু করলো শিমুল।আর বাকি ২০ কিলো মতো তবে সে পৌছাবে।
ঠিক ১৫ মিনিট পর এবার এম্বুলেন্স এর পেছনে থেকে একটা ঝাকি খেলো গাড়িটা।শিমুল ভাবলো ব্যাপার কি আজ!!তো সে পিছনে ফিরতেই দেখলো সব কিছুই নরমাল।বলে রাখা ভালো শিমুল অনেক অনেক সাহসী।সামান্য কিছু নিয়ে সে কিছুই ভাবেনা।বা তার কোন ধারনায় নেই যে কি হতে চলেছে।এবার সে এম্বুলেন্স দাড় করিয়ে ইঞ্জিন চেক করতে বের হয়।দেখলো সব ঠিকঠাক।তবে হচ্ছে টা কি!!এবার সে ভাবলো লাশটা তুলতে গিয়েও তার ক্যামন যেন মনে হয়েছিলো।তারপর ভাবলো কি এমন ইমার্জেন্সি ছিলো যে আজ রাতেই পোষ্টমাডাম করতে হচ্ছে।একটু অদ্ভুতই লাগলো শিমূলের।
সে আবার এসে গাড়িতে বসলো।সে পিছনে তাকিয়ে দেখলো ৩ ভদ্রলোক ঘুমাচ্ছে।লাশটাও ঠিক আছে।সে গানটা বন্ধ করলো।আর চলতে শুরু করলো।রাত ২.৪৯ বাজে,সব অন্ধকার,ঝিমঝিমে পরিবেশ কোন শব্দ নেই কোথাও পাখির কান্নার মত ডাক ছাড়া।শিমুলের ভিতরে ভিতরে ভালো লাগছে না।ক্যামনই যেন লাগছে।সে তাও কান না করে চলতে থাকলো।ঠিক ৫ কিলো মত বাকি রাস্তা।আর এই ৫ কিলো জুড়ে শসান।সেটা পার হতে হবে তবেই সে পৌছাবে।এবার হটাত আবারো এম্বুলেন্সের পেছনে অনেক জোরে কেপে উঠলো এমন অনুভব করলো।
সাথে সাথে ব্রেক করে।আর পেছনে তাকায় আবারো,কিন্তু এবার যা দেখলো তা দেখার জন্য সামান্যও প্রস্তুত ছিলোনা শিমুল। সেই ৩ ভদ্রলোক পেছনে ছিলোনা। আর সেই মেয়ের লাশটা উঠে সিটে বসে আছে আর তার দিকে ভয়ানক লাল-লাল দুটি চোখ দিয়ে তাকিয়ে আছে যেন রেগে আছে শিমুলের ওপর,লাশটার গলায় কালো স্পট ফাসি দেয়ার দাগ বোঝায় যাচ্ছে।কি এক ভয়ানক দৃশ্য।শিমুল দেখে এতই ভয় পায় যে তার গলা থেকে একটা আওয়াজ ও বের হচ্ছে না।
সে চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই আওয়াজ বের করতে পারছেনা।সে বের হতে গিয়ে দেখে এম্বলেন্সের দরজা লক।খুলতে না পেরে সে অই দৃশ্য দেখে গিয়ার দিয়ে এবার ফুল স্পিডে গাড়ি চালাতে লাগলো।২ মিনিট পরেই সে অনুভব করতে পারছিলো অনেক ঠান্ডা,ভয়ে যদিও সে ঘেমে চুপসে গেছে।সে চোখ একটু পেছোনের দিকে ঘোরাতেই দেখে লাশটি তার সামনের পাশের সিটে বসা আর অই সেই ভয়ানক চোখ।এই দৃশ্য দেখে সে আর সহ্য করতে না পেরে জোরে ব্রেক কসে আর জ্ঞান হারায় ওখানেই।