Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

একটি মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে অবহেলিত জীবন, ফলাফল খুবই করুণ

মেয়েটির নাম মনি। খুব শান্ত-শিষ্ট স্বভাবের মেয়ে। প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথে কথা বলতো না। এটা নিয়ে ইউনিভার্সিটির ফ্রেন্ডরা কতো কথাই না বলতো। তার অগোচরেও অনেক সমালোচনা করতো। মনি এসব শুনেও না শুনার ভান করে এড়িয়ে যেতো। ওসবে যেন তার কোন কৌতূহলই নেই। সে তার মতো ক্লাসে আসত এবং ক্লাস শেষে সোজা বাড়ি চলে যেত।

গ্রাজুয়েশন কম্পিটের পর পরই তার বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই ঠিক হয়। এক প্রকার স্বপ্নের ঘোরের মধ্যেই মনির বিয়ে হয়ে যায়। কেননা ছেলে ছিল প্রবাসি। তাই ছেলের ফেমিলি একদিনও সময় নস্ট করতে চায়নি। ওদিকে মনির ফেমিলিও ছেলের বাড়ির তেমন খোঁজ খবর নিতে পারেনি।

ছেলে যদিও মনির নানু বাড়ির দূর সম্পর্কের আত্মীয় ছিল। তারপরও খোঁজ খবর নিয়ে বিয়ে ঠিক করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ওরকম সময় মনির ফেমিলি পায়নি। মনি ছিল ফেমিলির বড় মেয়ে এবং সবার আদরের।

মনিকে দেখতে আসার ৫ম দিনেই তার বিয়ে হয়ে যায়। শ্বশুর বাড়িতেও মনি ছিল বড় বউ। সেদিক দিয়ে তার দ্বায়িত্ব ছিল অনেক। যেহেতু বিয়ের এক মাস পরে মনির হাজবেন্ড বাহিরে চলে যাবে,শ্বশুর-শাশুড়ি ছোট দেবর কে নিয়ে মনির সংসার হওয়ার কথা ছিল। এরকম ফেমিলি দেখেই মনিকে বিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর সবকিছু উল্টো হয়ে গেলো। তার চার ননদ এবং তাদের বাচ্চা-কাচ্চাও ঐ বাড়িতে থাকে। যদিও সব ননদ দের বিয়ে হয়ে গেছে কিন্তু দুজন ননদ তার ফেমিলি নিয়ে পার্মানেন্টলি ঐ বাড়িতে থাকত।

বিয়ের পরে শুরু হতে থাকলে অশান্তি। বিয়ের এক মাস পড়েই মনির বর বাহিরে চলে যায়। তারপর থেকে ওরা মনিকে কাজের লোকের থেকেও বেশি খাটাত। বোনেরা ভাইয়ের কাছে ভাবির বদনাম বলত। সাথে মনির শাশুড়ী তো আছেই। মনির বর তাদের কথা শুনে মনির সাথে বাজে ব্যবহার করতো। মনি সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করতো এই ভেবে যে, আল্লাহ তার ধৈয্যের পরিক্ষা নিচ্ছে। কিন্তু না,যতই দিন যাচ্ছে মনির উপর মেন্টালি টর্চার বেড়েই চলেছে। মনি তার ফেমিলি কে কিছু বুঝতে দেয় নি,কারণ এসব জানলে তারা খুব কষ্ট পাবে।

এক পর্যায় মনির পরিবারের সাথে মনির যোগাযোগ বন্ধ করতে তারা বাধ্য করে দেয়। তারা মনিকে ২টা অপশন দেয়। ১। সংসার ২। মনির পরিবার। পরিবারের মায় ত্যাগ করে মনি তার সংসার কেই বেছে নেয়। কিন্তু তাতেও তার শেষ রেহাই হয়নি। তারা ভাবছিল বিয়ের পর মনির মাধ্যমে তার ফেমিলি থেকে অনেক টাকা আনতে পারবে। কিন্তু যখন দেখলো,মনিকে দিয়ে এসব করানো সম্ভব না। তখন থেকেই মনি কে তাড়ানোর জন্য সবাই উঠেপড়ে লেগেছে।

কোন এক পর্যায় তারাই সফল হয়। তাদের চাক্রান্তের কাছে মনি হেরে যায়। অনেক চেষ্টা করেও যখন সবাই ব্যর্থ, তখন তারা মনিকে মারধর করা শুরু করলো। কথায় কথায় তার ননদরা তাকে মারতে আসত। মনির পক্ষে কথা বলার কেউ ছিলোনা ঐ বাড়িতে। তাও মনি মেনে নিছিল। তার হাজবেন্ড তাকে ঠিক মতো কল দিতো না। তাকে পার্সোনাল ফোন দেয় নি তারা। শাশুড়ীর ফোনে কথা বলতে হত তার হাজবেন্ডের সাথে। আস্তে আস্তে সেটাও বন্ধ হয়ে গেলো। বাড়ির কারো সাথে কথা বলতে দিত না এবং কেউ আসলে যেন মনি কথা না বলে,,,,
এসব আগেই তাকে বলে দেয়া হয়েছে। এভাবে কয়েক মাস কেটে গেল। মনিও দিন দিন ডিপ্রেশনে চলে যেতে লাগলো।

ঈদের পর অনেক কস্টে মনি তার বাবার বাড়ি যাওয়ার পারমিশন নিল। তাকে যেতে দেয়া হতোনা,কারণ তার শ্বশুর অসুস্থ ছিল। এই অজুহাত কে কাজে লাগিয়ে তারা মনিকে যেতে দিত না। সাত মাস পরে মনি তার বাবার বাড়ি বেড়াতে গেল। তা-ও এক ড্রেসে। তাকে কোন ড্রেস/কসমেটিকস কোনকিছুই সাথে নিতে দেয়নি।

বাবার বাসায় যাওয়ার পর সবাই অনেক প্রশ্ন করতে লাগলো। প্রশ্ন করাটাই স্বাভাবিক ছিল। সে হাসিমুখে সবাইকে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে বলত। তার শ্বশুর অসুস্থ এবং সে চায় পুরোপুরি সাংসারিক হতে,,,,ইত্যাদি। এজন্যই সে এ বাড়িতে আসেনা। হাসির পিছনে লুকিয়ে থাকা কষ্ট কেউ বুঝেনি। পাঁচ দিন থাকার পর আবার চলে যায় শ্বশুর বাড়ি নামক নরকে।

এবার তার উপর সবাই আরো ফোর্স করতে থাকলো। সাথে মনির হাজবেন্ডও। তার হাজবেন্ড তার থেকে মুক্তি চাইলো। মনি বুঝতেছিলো কিভাবে তার বরকে মুক্তি দিবে। অবশেষে সে নিজেকে এবং সবাইকে মুক্তি দেয়ার মাধ্যম হিসেবে আত্নহত্যাকেই বেছে নিল।

Related Posts

12 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No