“মৃত্যূ যখন মাথায় হাত রাখে, তখন বাদশাহ ফকির উভয়ে এক হয়ে যায়। কাউকে পার্থক্য করা যায় না” – পারস্যের বিখ্যাত কবি শেখ সাদী (রঃ) এর এই বানী থেকে আমরা জীবন সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারনা লাভ করতে পারি।
আপনার চোখ, কান যদি খোলা থাকে, তবে আপনার জীবনের সকল পরিস্থিতিতেই কিছু না কিছু শিখতে পারবেন৷ আপনি যদি কোন কিছু শিখার জন্য ক্ষুধিত হন, আপনার সাথে দেখা হওয়া সকল মানুষের কাছ থেকে শিখতে পারবেন। Emerson বলেছেন, “আমার সাথে দেখা হওয়া, প্রতিটা মানুষ কোন না কোন দিক দিয়ে আমার থেকে ভাল এবং আমি তাদের কাছ থেকে শিখি”।
জীবন চলার পথে আমরা এমন সব পরিস্থিতির শিকার হই কিংবা এমন কোন কথা শুনি অথবা এমন ঘটনা ঘটতে দেখি যা সারাটা জীবনের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকে। আজ এমনই কিছু কথা, কিছু ঘটনা আপনাদের জন্য উপস্থাপন করতে যাচ্ছি।
তিনটি উপদেশ মূলক বার্তা যা প্রথমে আমার জন্য শিক্ষা তারপর অন্যদের জন্য উপদেশ –
১. প্রতিদান পাওয়ার আশায় কারোও কোন উপকার করবো না। উপকার হবে সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থ।
২. কারো উপকার করতে না পারলেও জীবনে কারো ক্ষতি করবো না।
৩. কাউকে ভালবাসতে না পারলেও সে কষ্ট পায় এমন কাজ করবো না।
তিনটি উপদেশ মেনে চলতে পারলে আমি মনে করি সমাজে আমার অবস্থান কখনোই নিন্ম স্তরে হবে না।
১। শিক্ষা কখনো ভিক্ষা করতে শেখায়না।
২। স্বর্গের দাসত্বের থেকে নরকের রাজত্ব ভালো।
৩। স্বাধীনতা কেউ কাউকে দেয় না, স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে হয়।
এবার একটা গল্প শুনুন –
একদা মক্কা নগরীতে একজন নাপিত একজনের চুল কেটে দিচ্ছিল, ঠিক তখন সুফি সাধক জুনায়েদ (রঃ) নাপিতের কাছে আসলেন। তিনি বললেন –
ঃ আল্লাহ্র নামে আপনি কি আমাকে একটু শেভ করে দিবেন?
নাপিত যখন আল্লাহ্ শব্দটি শুনতে পেল, সে যার চুল কাটছিলো তাকে বলল,
ঃ বন্ধু আমাকে ক্ষমা কর। আমি তোমার চুল এখন কাটতে পারব না। আমার কাছে আমার আল্লাহ্ তায়ালা সবচেয়ে বড় ভালবাসা তারপর তার বন্ধুদের ভালবাসা।
অতঃপর সে সম্মান এর সাথে জুনায়েদ (রঃ) কে শেভ করে দিল। তারপর সুফি সাহেব চলে গেলেন। কিছু দিন পর, সুফি সাহেব যখন কিছু টাকা পেলেন, তিনি নাপিতের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে আসলেন। কিন্তু নাপিত তার টাকা গ্রহণ করল না। নাপিত বলল,
ঃ আপনি কি আমাকে লজ্জিত করছেন না? আপনি আমাকে আল্লাহ্র নামে শেভ করে দিতে বলেছেন, টাকার জন্য না!
সুফিসাহেব তার জীবনের বাকি দিন গুলোতে তার সঙ্গীদের অনেক বার বলেছেন,
ঃ “সৃষ্টিকর্তার প্রতি নিঃস্বার্থ ভালবাসা আমি একজন নাপিতের কাছ থেকে শিখেছি”।
সকলের জীবন আনন্দময় হোক, এই প্রত্যাশায়,
আল্লাহ্ হাফিজ।