বিশ্ববিখ্যাত স্টিফেন হকিং বলেছিলেন-এলিয়েন আছে,অবশ্যই আছে।
নাসার কেপলার টেলিস্কোপের সাহায্যে প্রায় ২০ গ্রহ আবিষ্কার করেছে যেখানে প্রাণ থাকার সম্ভাবনা আছে।নাসার প্রথম সারির কিছু জ্যেতির বিজ্ঞানীর দাবি এলিয়েনদের থেকে নাসা বেশি দূরে নেয়,হয়ত কয়েক বছরের মধ্যেই নাসা এলিয়েনদের কাছে পৌঁছে যাবে।
স্টিফেন হকিং এবং নাসার বিজ্ঞানীদের বক্তব্যে জল ঢেলে এক বিজ্ঞানী দাবি করেন মানুষই ভিনগ্রহী বা এলিয়েন।তার এই চাঞ্চল্যকর মতবাদ নিয়ে ঝড় উঠেছে বিজ্ঞান প্রেমীদের মধ্যে,কিন্তু বিজ্ঞান বলেছিল ১৮ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকা সৃষ্টি হয়েঠছিল প্রথম মানব প্রজাতি হোমো ইরেক্টাস।
আমেরিকার প্রখ্যাত ইকোলজিস্ট ডঃএলিস সিলবার, তিনি তার “হিউম্যান আর নট ফ্রম আর্থ এ সায়েন্টিফিক ইভ্যালুয়েশন অফ দ্যা এভিডেন্স বইটিতে রীতিমতো যুক্তি দিয়ে বুঝিয়েছেন মানুষ পৃথিবীর প্রাণী নয়।
বহুদিন ধরে গবেষণা করার পর উনি সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে পৃথিবী অন্য প্রাণীদের জন্য মানুষের জন্য নয়।
ডঃএলিস সিলবার বলেনঃ মানুষের শরীরে থাকা অনেক ত্রুটি বুঝিয়ে দেয় পৃথিবী মানুষের জন্য না।উন্নত প্রাণীদের সাথে মানুষের এতো পার্থক্য কেন?
এই প্রশ্নটির উপরেই দাড়িয়ে আছে উনার সব মতবাদ।
ডঃএলিস এর চাঞ্চল্যকর থিউরি-
●উনি মনে করেন পৃথিবীতে মানুষ ছাড়া থাকা সব প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী পরিবেশ থেকেই সরাসরি তাদের প্রয়োজন মিটিয়ে নেয়। উদ্ভিদ তার গায়ে এসে পড়া সূর্যালোক, বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড আর মাটি থেকে জল নিয়ে নিজের খাবার তৈরি করে নেয়। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীরা সরাসরি উদ্ভিদকে খেয়ে, বা অনান্য প্রাণীকে খেয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকে। কিন্তু মানুষ প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে পাওয়া বা গজিয়ে ওঠা খাবার সরাসরি খেতে অপছন্দ করে কেন!
উনার মতে সরাসরি পরিবেশ থেকে নেওয়া খাবার হজম করতে পারে না একমাত্র মানুষই। তাই সে অন্যভাবে তার খাদ্যের প্রয়োজন মেটায়। মানুষ যদি পৃথিবীরই জীব হতো, তাহলে সে বাকি প্রাণীদের মতোই পরিবেশ থেকে পাওয়া খাবার সরাসরি খেয়ে হজম করতে পারত।
● মানুষকে এই গ্রহের সবচেয়ে উন্নত প্রাণী বলে মনে করা হয় কিন্তু ডঃ সিলভারের মতে মানুষই হলো পৃথিবীর সবচেয়ে খাপছাড়া জীব। মানুষই হল পৃথিবীর জলবায়ুতে টিকে থাকার পক্ষে সবচেয়ে অনুপযুক্ত জীব। কারণ, পৃথিবীর বাকি সব জীব সারাজীবন খোলা আকাশের নীচে, প্রখর রৌদ্র, তুমুল ঝড় বৃষ্টি সহ্য করে বেঁচে থাকতে পারে। মানুষ কেন পৃথিবীর বাকি সব প্রাণীর মতো বৃষ্টিতে ঘন্টার পর ঘন্টা ভিজতে পারে না! কয়েকঘন্টার বেশি সূর্য্যের প্রখর রৌদ্রে থাকলে একমাত্র মানুষেরই কেন ‘সান স্ট্রোক’ হয়! সূর্য্যের আলোয় বেশিক্ষণ থাকলে আমাদের ত্বকের চামড়া কালো হয়ে যায় কেন! ! কেন সূর্যের আলোয় মানুষেরই চোখ ধাঁধিয়ে যায়! অন্য প্রাণীদের তো তা হয় না। এগুলি কি প্রমাণ করেনা সূর্য রশ্মি মানুষের পক্ষে উপযুক্ত নয় এবং মানুষ থাকত কোনও নরম আলোয় ভরা গ্রহতে।
● মানুষের মধ্যেই প্রচুর দীর্ঘস্থায়ী রোগ বা ক্রনিক ডিজিজ দেখা দেয় কেন! ডঃ সিলভারের মতে ব্যাক পেন (back ache) হল মানুষের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী রোগ। পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ এই রোগে ভোগেন। কারণ মানুষ পৃথিবীর অনান্য প্রাণীর মতো চারপায়ে হাঁটে না। ফলে হাঁটা চলা ও বিভিন্ন কাজে মাধ্যাকর্ষণের সাহায্য পায় না। পৃথিবীর বাকি প্রাণীদের কি ঘাড়ে, পিঠে, কোমরে ব্যাথা হয়! মানুষের এই ‘ব্যাক পেন’ রোগটিই প্রমাণ করে, মানুষের দেহ অন্য কোনও গ্রহে বসবাসের উপযুক্ত হয়ে সৃষ্টি হয়েছিল। যে গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ ছিল পৃথিবীর তুলনায় অনেক কমজোরি।
● পৃথিবীতে থাকা কিছু দীর্ঘজীবী প্রাণী, যেমন আফ্রিকার হাতি, অ্যালডাবরা ও গ্যালাপাগোস কচ্ছপ, বো-হেড তিমি, গ্রেটার ফ্লেমিঙ্গো, গ্রিন-উইং ম্যাকাওদের চোখেও কি চল্লিশের পর চালসে (হাইপার মেট্রোপিয়া) পড়ে! বয়েসের সঙ্গে সঙ্গে তাদের শ্রবণক্ষমতা কমে যায়!
● পৃথিবীর কোনও মানুষই ১০০% সুস্থ নয় কেন! প্রত্যেকেই এক বা একাধিক রোগে ভোগে কেন!
● মানব শিশুর মাথা বড় হওয়ার জন্য নারীদের স্বাভাবিক উপায়ে প্রসব করতে প্রবল যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। প্রসব করতে গিয়ে আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মা ও শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মানুষ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনও প্রজাতির লক্ষ লক্ষ স্ত্রী প্রাণী ও শাবক প্রসবকালে মারা গিয়েছে কি? মানব শিশু জন্মের পরেই পৃথিবীর উন্নত প্রাণীগুলির শাবকদের মতো হাঁটতে শেখে না কেন?
● মানুষের দেহে কেন ২২৩টি অতিরিক্ত জিন আছে! পৃথিবীর অনান্য প্রাণীদের দেহে অতিরিক্ত জিন নেই কেন!
● মানুষের ঘুম নিয়ে গবেষণা করে গবেষকরা বলছেন পৃথিবীতে দিন ২৪ ঘন্টার, কিন্তু আমাদের দেহের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি (body clock) বলছে, আমাদের দিন হওয়া উচিত ছিল ২৫ ঘন্টার। মানবজাতির সৃষ্টিলগ্ন থেকেই দেহঘড়িতে একটি দিনের জন্য কেন ২৫ ঘন্টা বরাদ্দ করা হয়েছিল!
বিভিন্ন বিজ্ঞানী ডঃ সিলভারের থিওরিটির বিস্তর সমালোচনা করেছেন। কিন্তু অনেকে আবার তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা বলেছেন ডঃ সিলভার যে যুক্তিগুলি হাজির করেছেন, সেগুলি কিন্তু একেবারেই ফেলে দেওয়ার মতো নয়। সত্যিই তো পৃথিবীর অনান্য প্রজাতির জীবের চেয়ে আমরাই কেন আলাদা হলাম। সত্যিই কি আমরা পৃথিবীর প্রাণী! নাকি আমরা ভিনগ্রহের প্রাণী হয়ে পৃথিবীকে শাসন করছি!
ধর্মীয় গ্রন্থ গুলোতেও উল্লেখ পাওয়া যায় যে, মানুষ এই গ্রহের প্রানী নয়।
তাহলে বলেন ঘটনা কোন দিকে মোড় নিচ্ছে। নাসা ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করে এলিয়েন খুজে বেরাচ্ছে, সেখানে আমরাই কি এলিয়েন নই?