এখন সর্বত্র শুধু একটাই শব্দ, সবার মুখে একটি কথাই ঘুরেফিরে পাওয়া যাচ্ছে, তা হলো করোনাভাইরাস। বলতে গেলে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসটি কেড়ে নিচ্ছে অসংখ্য মানুষের প্রাণ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই শহরের পর শহরকে অকেজো করে ফেলছে এই ভাইরাস। এ সময় মানুষের কাছ থেকে মানুষ যত দূরে থাকবে, ততই নিরাপদে থাকা সম্ভব। কারণ সামান্য স্পর্শ থেকেও প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি বাসা বাধতে পারে আপনার সম্পূর্ণ সুস্থ শরীরে।
কোভিড-১৯ এর সবথেকে শক্তিশালী দিকটি হলো, এর বিস্তার পাওয়ার ধরণ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও এই ভাইরাস বহনকারীর সরাসরি সংস্পর্শে আসলে বহনকারীর কাছ থেকে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস। সেই সাথে তার হাঁচি, কাশি, থুথু থেকেও বিস্তার লাভ করে এই ভাইরাস। খুব স্বাভাবিকভাবেই মাথায় আসবে একটি কথা, খাবারের মাধ্যমেও কি করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে? প্রতিদিন আমরা যে সকল খাবার খাচ্ছি, সেগুলো থেকেও কি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে কি না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফেব্রুয়ারির ২৭ তারিখে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, খাবার ও খাবারের প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে কোভিড-১৯ তথা করোনাভাইরাস ছড়ানোর কোন প্রমাণ এখনো মেলেনি। এফডিএ’র সাথে একই রকম তথ্য জানিয়েছে ফুড সেফটি অথরিটি অব আয়ারল্যান্ড। মার্চের ৭ তারিখ এক বিবৃতিতে সেখান থেকেও বলা হয়েছে, খাবারের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়ানোর কোন প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
তবে উভয় প্রতিষ্ঠান থেকেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে খাবার প্রস্তুতের সময় খুব ভালো করে (২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে) হাত সাবানের সাহায্যে ধোয়ার জন্য। কাঁচা খাবার ভালোভাবে পরিষ্কার করার পর সম্পূর্ণ সিদ্ধ করে তবেই খাওয়া উচিত। আধা-সিদ্ধ ধরনের খাবার গ্রহণ থেকে এ সময়ে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে বলা হয়েছে। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অবশ্যই এ সময়ে ঘরে তৈরি সাধারণ ও পুষ্টিকর খাবারই ভরসা এবং এতেই জোর দেওয়া হবে সবচেয়ে নিরাপদ ও সঠিক সিদ্ধান্ত।
আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মাধ্যম থেকে করোনা সম্পর্কিত নানান ধরণের খবর দেখছি। ফলে আমাদের মনের মধ্যে একটা অদৃশ্য আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে। যার দরুণ আমরা সেগুলো আবার অন্যান্য মানুষদের সাথে শেয়ার করছি। পরবর্তীতে তারাও আতঙ্কিত হচ্ছে। এই কাজ গুলো না করে আমরা যদি আশেপাশের মানুষদেরকে বলি কিভাবে সচেতন থাকা যায়, কি কি কাজ করলে আমরা এই ভাইরাস থেকে মুক্ত হতে পারবো, ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে যদি নিজেরা একটু সামান্য দায়িত্ব নিয়ে কাজটি করি তাহলে আমাদের অনেক জনের ভালো উদ্যোগের ফলে অনেক মানুষদের আমরা সচেতন করতে পারবো। এবং আমাদের যাদের সামর্থ্য আছে তারা কিছু আর্থিক সহযোগিতা দিয়েও গরিব ও অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে পারি। তাহলে দেখবেন আমাদের প্রবল প্রচেষ্টার ফলে আমরা ধীরে ধীরে এই ভাইরাস থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হতে পারবো।