আসসালামু আলাইকুম।
আশা করি সবাই সুস্থ আছেন।
আজ আমি অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক টপিক নিয়ে আলোচনা করব। সবাই এই পোস্টটি পড়ে আপনাদের বাড়িতে এবং বাড়ির আশেপাশে কোনো পরিচিত গর্ভবতী নারী থাকলে তাদেরকে এই সম্পর্কে জানাবেন।
গর্ভাবস্থা সময়টি একজন নারী ও তার পরিবারের সকলের জন্য অতি উত্তেজনা ও প্রত্যাশাপূর্ণ হয়ে থাকে।
কিন্তু বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়ে চলছে করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব। তাই এই গর্ভাবস্থা সময়টি একজন মায়ের জন্য ভয়, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তায় ভরে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে নারীরা যেভাবে নিজের ও তার নবজাতক শিশুটিকে সুরক্ষিত রাখতে পারে সেটি নিচে বর্ণনা করা হল-
গর্ভাবস্থায় একজন নারীর দেহ ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসে। এসকল কারণে গর্ভাবস্থার শেষের দিকের মাসগুলোতে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মেনে চলা অতি গুরুত্বপূর্ণ।
>করোনা ভাইরাস রোগের (কোভিড-১৯) লক্ষণ আছে এমন কারো সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
>সম্ভব হলে বাড়িতে থেকেই মোবাইল ফোন, মেসেজ বা অনলাইনের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করুন।
> অতি প্রয়োজন হলে কোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা হাসপাতালে যাওয়ার ক্ষেত্রে গণপরিবহন এড়িয়ে চলুন।
> বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শারীরিক স্পর্শ পরিহার করুন।
> আপনার ধাত্রী, প্রসূতিরোগ বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবাদাতার সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করুন।
> কোভিড-১৯ এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো লক্ষণ নিজের মাঝে দেখা যাচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা এবং লক্ষণ থাকলে শুরুতেই স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সেবা গ্রহণ করুন।
> প্রসবপূর্ব সকল চেকআপ চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু যতটা সম্ভব বাড়ির বাইরে না যাওয়া উত্তম। কেননা এতে গর্ভবতী নারীর কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত হওয়ার ঝু্ঁকি অনেকাংশেই বেড়ে যায়।
> বর্তমান পরিস্থিতিতে সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিক বা অন্যান্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্বাচন না করাই উত্তম। এক্ষেত্রে প্রসবকালীন সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে নিজের ঘরে সন্তান জন্মদানের বিষয়টি অনেক নিরাপদ। তবে পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হলে অবশ্যই হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্বাচন করতে হবে।
> সন্তান জন্মদানের সময় গর্ভবতী নারীকে সাহস যোগানোর জন্য কোভিড-১৯ এর সকল পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা (হাত পরিষ্কার রাখা, মাস্ক পরা ইত্যাদি) গ্রহণ করে অন্তত একজন (যেমন- স্বামী বা নারীর পছন্দের কেউ) নারীর পাশে থাকা উচিত।
> গর্ভবতী নারী নিজে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হলেও তার নবজাতক শিশুর আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ কম।
কেননা ভ্যাজাইনাল ফ্লুইড, গর্ভনালী, অ্যামনিওটিক ফ্লুইড, গর্ভফুল বা মায়ের বুকের দুধে এখনও পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়নি। তবে এক্ষত্রে অবশ্যই সন্তান জন্মদানের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
> সন্তান জন্ম দেওয়ার পরে যতটা সম্ভব কম মানুষ নবজাতক শিশু ও মায়ের কাছাকাছি যাবেন। কাছে যাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
> সন্তান জন্ম দেওয়ার পরে মা ও শিশুর সামান্য অসুস্থতা বোধ করা মাত্রই প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে অনতিবিলম্বে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে হবে।
কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলা করতে হলে আমাদের সবাইকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন থাকতে হবে। আসুন আমরা সবাই আতঙ্ক নয়, সচেতন থাকার মাধ্যমেই এই পরিস্থিতিতে সু্স্থ থাকার চেষ্টা করি।