ইমরান ও শিউলি দুজন দুজনকে ভিষন ভালোবাসে তারা তাদের বাকি জীবন একি ছাদের নিচে কাটাতে চায় । কিন্তু তাদের এই ভালোবাসার মধ্যে সবথেকে বড় বাধা শিউলির বাব, মা । তারা চায় না শিউলির সাথে উমরানের কোন সম্পর্ক থাকুক । ইমরান যেন শিউলির সাথে কোন রকম সম্পর্ক না রাখে তাঁর জন্য তারা ইমরানকে নানা ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে । চরম এ পরিস্থিতিতে ইমরান ও শিউলির জীবন একসাথে কাটাতে হুমকির সম্মুখীন হয়ে পরেছে । তাঁর দুজনেই চিন্তা করতে থাকে কিভাবে এই সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়া যাবে ।
অনেক চিন্তা ভাবনার পর তারা সিদ্ধান্ত নেয় তারা তাদের পিতা-মাতাকে না জানিয়ে তাদের বিবাহ সম্পর্ন করবে । কিন্তু কিভাবে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে বিবাহ করতে হয় তা তাদের জানা নেই । তাই বিশষয়টি জানতে একজন আইনজীবির কাছে গেলো পরামর্শ নিতে ।
তো চলুন দেখি তারা সেখানে গিয়ে কি পরামর্শ পেলেন ।
কোর্ট ম্যারিজ বাংলাদেশে একটি প্রচুল ব্যবহৃত শব্দ । সাধারনত দেখা যায় যে, কোনো পাত্র-পাত্রী যদি পরিবারের অমতে নিজেরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে সেক্ষেত্রে তারা নিকটস্থ কোর্টে গিয়ে বিয়ে করে আর এটাকেই আমরা সবাই সাধারণভাবে ‘কোর্ট ম্যারিজ’ বলে থাকি । কিন্তু মজার ব্যবপার হল কোর্টে কখনও কোন বিবাহ সম্পাদন করা হয় না । বিবাহ করানোর দায়িত্ব হল কাজীদের কোর্টের না । এখন প্রশ্ন হল যদি কাজীদের মাধ্যমে বিবাহ করাতে হয় তাহলে কোর্টে গিয়ে মানুষ কি করে । আসলে কোর্টে গিয়ে ঐ সব পাত্র-পাত্রী মূলত প্রথম শ্রেনীর ম্যাজিষ্ট্রেটের কার্যালয়ে এক ধরনের হলফনামা করে । প্রশ্ন হল এই হলফ নামাটি কেন করে । সাধারণত দেখা যায় যে, যখন কোন দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়ে নিজেদের পরিবারের অমতে গিয়ে নিজেরাই বিয়ে করে তখন তাদের অভিবাবকগন তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন । এ ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণত দেখা যায় যে, মেয়ের বাবা পাত্রের বিরুদ্ধে অপহরন ও ধর্ষনের মামলা করে’ পাত্র এবং পাত্রের পিতামাতাকে নানাভাবে হয়রানী করে থাকে । এই ধরনের থমথমে পরিস্থিতিতে এই হলফ নামাটি থাকলে আইনগত ভাবে নানা সহযোগীতা লাভ করে বিধায় পাত্র-পাত্রী উভয়ই এই হলফনামাটি সম্পাদন করেন । আর এ জন্যই এই হলফনামাটির এত কদর ।
তো চলুন এখন দেখি ইমরান ও শিউলি কিভাবে কোর্ট ম্যারিজের মাধ্যমে তাদের বিবাহ সম্পাদন করবেন ।
এক্ষেত্রে তারা দুজনেই যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হয় অর্থাৎ ছেলে ২১ মেয়ে ১৮ বছরের হয় তাহলে দুজনেই নিকটস্থ কোর্টে গিয়ে প্রথমেই ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি বিবাহের হলফনামা করতে হবে । এরপর উক্ত হলফনামাটিকে অবশ্যই নোটারি করাতে হবে । এখানে বিবাহের একটি নোটারিকৃত হলফনামার নমুনা দেয়া হল ।
এই কাজগুলো শেষ করে তাদের যেতে হবে একজন কাজীর কাছে । সেখানে গিয়ে তারা কাবিন করে ধর্মীয় রীতিনীতি গুলো সম্পাদন করে তাদের বিবাহ কার্য সম্পাদন করবে । সাধারনত কোর্টের কাছেই অনেক কাজী অফিস থাকে বিধায় ৩-৪ ঘন্টার মধ্যেই এই কাজগুল সম্পাদন করা যায় । কাজির কাছে গিয়ে কাজগুলো সম্পাদন করলে তারা বাংলাদেশের আইনত স্বামী-স্ত্রী বলে বিবেচিত হবেন । এভাবেই সাথারনত কোর্টে গিয়ে কোর্ট ম্যারিজ সম্পাদন করতে হয় ।