ছোট্ট গল্প | অভাগার প্রেম 💔 – আজ থেকে প্রায় ৬ আগে তিন্নিই আমাকে প্রোপজ করে। আমি কোনো কিছু না ভেবে হাঁ বলে দিয়েছিলাম। না বলার কোনো তো কারণ ছিল না। তিন্নি ছিল খুবই ভালো স্বভাব চরিত্রের মেয়ে ও ছিল বেশ ভালই চেহেরার অধিকারী। বিশেষ করে ভালো মনের মানুষ।
এজন্য হয়তো আমি তাকে নিজের থেকে বেশি ভালোবাসি। আমরা একই সাথে কলেজে পড়তাম। সব কিছুই তখন স্বপ্নের মতো সাজানো ছিল।
আমি আর তিন্নি একদিন কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার সময় হিরার (আমার বান্ধবী) সাথে দেখা হয়। হিরা আমাদের কাছে এসে আমার হাতে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে, কেমন আছিস তুই,, আমি একটু করুন কন্ঠে বলি ভালোই রে। তার পর তিন্নির দিকে তাকিয়ে বলে ভাবি নাকি আবিদ, কেমন আছেন ভাবি আপনার নাম কি।
তিন্নি বলে,, আমি তিন্নি। হিরা বলে,, নিশ্চয় ভালো আছেন, কারণ আবিদ ভালো ছেলে ও আপনাকে ভালো রাখবে।
তিন্নি কিছু না বলে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে বিরক্তির ছাপ নিয়ে। আমি আর কিছু না বলে হিরাকে বিদায় দিয়ে তিন্নিকে নিয়ে বাড়ির দিকে হাটা শুরু করি।
পথিমধ্যে তিন্নি আমাকে বলে আমি যতদুর দেখছি তুমি কলেজে কোনো মেয়ের সাথে কথা বলতে না। তাছাড়া তুমি মেয়েদের সাথে কথা বলতে গিয়ে জড়িয়ে ফেল।
এমনকি প্রথম প্রথম তুমি আমার সাথে কথা বলতে পারতে না। তবে তোমার এই বান্ধবী কোথা থেকে এলো।
আমি বলি,, ছোট বেলায় হিরা ওর নানার বাড়ি থাকতো। যা আমাদের বাড়ির পাসে, ছোট বেলায় একসাথে খেলাধুলা পোড়াশুনা করতাম সেইসুত্রে আমার বান্ধবী হয়, এখন ও ওদের বাড়িতে থাকে।
তিন্নি বলে,,ওওও এজন্য.….৷ কিছুক্ষণ পর তিন্নির বাড়ি চলে আসে এবং ও হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে বান্ধবী হয়ে যদি ধরতে পারে তবে আমি কেন পারবো না। আমি তখন বলি তোমার মা আসছে। ও আমাকে ছেড়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি যেতে গিয়ে পড়ে যায় এবং পায়ে ব্যাঁথা লাগে।
পর দিন কলেজে গিয়ে দেখি তিন্নি একটা ছেলের সাথে হেঁসে হেঁসে কথা বলছে। আমার খুব খারাপ লাগে,আমি ওখান থেকে চলে আসি। কিছু সময় পর তিন্নি এসে আমার পাশে বসে। আমি তখনও মন খারাপ করে বসেছিলাম। আমাকে এভাবে দেখে তিন্নি বলে,, আজ আমি অন্য ছেলের সাথে কথা বলছি তোমার মন খারাপ।
আমি শুধু মাথা নাড়িয়ে হাঁ সুচক উত্তর দেই। তিন্নি বলে তুমি আমাকে যতোটা ভালোবাসো,, আমিও তোমাকে ততোটাই ভালোবাসি। আমি তখন বলি কালকের ঘটনার জন্য sorry আর এমন হবে না। তিন্নি আমার চোখের পানি মুছে দিয় বলে I LOVE YOU. আমি কিছু না বলে ওকে জড়িয়ে ধরি।
তখন ও বলে স্যার আসছে। আমি ওকে ছেড়ে দিয়ে দেখি কোনো স্যার নেই। মিথ্যা বললে যে। তিন্নি বলে,, কালকের কথা মনে নাই,প্রতিশোধ নিলাম। তখন আমাদের সময়গুলো ভালোই কাটছিলো।
আজ সেই সব দিনগুলোকে খুব মিস করি। আগের দিনগুলার মতো তিন্নি আজও আমার সাথে আছে। কিন্তু আগের মতো সময়টা আর আমাদের দখলে নেই।
পুরানো সৃতি ভাবছিলাম এমন সময় ফোনের আওয়াজের কারণে বর্তমানে ফিরে এসে দেখি তিন্নির ফোন দিয়েছে। আমি ফোন রিসিভ করার পর,,,,,তিন্নি…. কোথায় তুমি। আমি… আমি পথে আছি আসছি। তিন্নি…শেষ বারের মতো একটু সময় মতো আসো।আমি… ,,
আমি রেষ্টুরেন্টে গিয়ে দেখি ও বসে আছে, কিন্তু কেমন জানি মন মরা। আমি গিয়ে বসে পড়ি সমনে থাকা চেয়ারটাতে। আমাকে দেখে তিন্নি চোখের কোণে পানি চলে আশে। আমার দিকে একটা রঙিন খাম দিয়ে বলে আমার বিয়ের কার্ড। আমি আর বাবা থামিয়ে রাখতে পারলাম না।
আমি কি বলবো ভেবে পাচ্ছিনা। পাথরে মতো থমকে গিয়েছি।
তিন্নি…. আমি তোমাকে অনেক সময় দিয়েছি, তুমি একটা ভালো চাকুরী জোগাড় করতে পারলে না আবিদ। আমার কিছুই করার নাই। তুমি ক্ষমা করে দিও।
আমি…তুমি তো দোষ করনি তবে ক্ষমা কোথা থেকে আসলো। দোষ তো আমার কারণ, আমি তোমার যোগ্য ছিলাম না।
যে ছেলেটা তোমাকে অন্য ছেলের সাথে কথা বলতে দেখলে কেঁদে দেয়, সেই ছেলেটা তোমাকে অন্যের বউ হতে দেখলে কি করবে একবার ভেবে দেখেছো।
তিন্নি… (কান্না করে বলে) আবিদ ,,
আমি…. যদি কলেজের সেই দিনগুলো ফিরে পেতাম তিন্নি।
তিন্নি…. ওসব কথা বাদ দাও। (একটি গিফট বক্স দিয়ে বলে) এটা তোমার জন্য। যদিও বিয়েটা আমার গিফট তুমি আমাকে দিবে, তার পরও আমি তোমাকে দিলাম যতনে রেখো, আমার দেওয়া শেষ চিহ্ন।
আমি…. (চোখ ভরা পানি নিয়ে) আমি কতটা অভাগা তোমার বিয়েতে গিফট দেওয়ার মতো সমার্থ আমার নাই।
আমি আমার হাতের রিং টা খুলে তিন্নির হাতে পরিয়ে দিয়ে চলে আসি।
আমি….ভালো থেকো নতুন কারো সাথে,, ‘আমি নাহয় ভালো থাকার অভিনয় করে যাবো।
###ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।### (ধন্যবাদ)