ভারতের কেরালার বাসিন্দা রাজেশ্বরী তার মা-বাবাকে হারিয়েছিলেন মাত্র ৮ বছর বয়সেই।তার মা-বাবাকে ফিরে না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন। তারপর থেকেই কোন একটি মুসলিম পরিবার তাকে আশ্রয় দেয় এবং সেখান থেকেই মুসলিম পরিবারের মধ্যে তার বড় হয়ে ওঠা। তার পালক পিতা মাতা নিজের সন্তানের মতন একদিনের জন্য পরিবারের অভাব বুঝতে দেননি। পরম যত্ন ও ভালোবাসা দিয়ে তাকে লালনপালন করেছেন।
রাজেশ্বরী বর্তমান বয়স ২২ বছর। তার বিয়ে দিতে উদ্যোগী ওই মুসলিম পরিবার। তবে কোন ধর্মীয় রীতিনীতি না মেনেই মুসলিম রীতি হিন্দু রীতি ত্যাগ করে বরং মন্দিরে হিন্দু আদব-কায়দা মেনেই রাজেশ্বরী বিয়ে হয়েছে। আর কন্যা দান করলেন পালক পিতা আব্দুল্লাহ। তাদের এ কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
ছোটবেলায় তার মা বাবাকে হারায় রাজেশ্বরী। তার বাবা কাছাড় গর ও মেল পারামবু এলাকার সামান্য কুলির কাজ করতেন। আর সেই সূত্র ধরেই আব্দুল্লাহ বাড়ি ও চাষের জমিতে প্রায় প্রতিদিন তার যাতায়াত হতো। সেই ছোটবেলা থেকেই রাজেশ্বরী আব্দুল্লাহ ও তার স্ত্রী খাদিজার ভীষণ প্রিয় ছিল সবাই তাকে ভালোবাসতো। কিন্তু এই অভাবের সংসারে হঠাৎ একদিন তার বাবা মারা যান। তারপর থেকেই রাজেশ্বরী আব্দুল্লাহ পরিবারে কাছেই থাকে। তখন থেকে আর তিনি নিজ বাড়িতে ফিরে আসেননি বরং আব্দুল্লাহ খাদিজা তিন ছেলে নাজির,সেরেফের ও শামীম এর সঙ্গে নিজের আরেক কন্যা সন্তানের মত সবার কাছে বড় হয়েছিলেন।বয়স বাড়তি বিয়ে দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগেন আব্দুল্লাহ এবং খাদেজা যেন দেখে মনে হয় ওদের পালিত কন্যা নন সং গর্ভধারণের কন্যা।
ঠিক সে সময় রাজেশ্বরী কে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দেন বিষ্ণু নামের এক তরুণ। সেই ছেলেটির প্রস্তাবে রাজেশ্বরী সম্মতি ছিল এরপর রাজেশ্বরী পরিবার বিষ্ণুর বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে আছে। জানা যায় ওদের বিয়ে কোন বাড়িতে কিংবা মসজিদে নয় মুসলিম পরিবারে বড় হলেও তাকে অবশেষে মন্দিরে বিয়ে দেয়া হয়। এতে আব্দুল্লাহ খাদিজা দুজনেই রাজি হয়ে যায় এবং বিষ্ণুর পরিবার রাজি। এরপর গত ১৭ ই ফেব্রুয়ারি তাদের এলাকার মন্দিরে দুজনের মিলন হয় এবং সেখানে উপস্থিত ছিলেন দুই পরিবারের সদস্যরা।
এই বিয়ের মাধ্যমে তারা আবারও প্রমাণ করে দিলেন প্রেম,ভালোবাসা কোন ধর্মীয় রীতি নীতি মানে না এবং দুই পরিবারের সদস্যরা সব জায়গা থেকেই প্রশংসা কুড়িয়েছেন।