আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ,
আশা করি সবাই অনেক অনেক ভালো আছেন। শত আতংকের মধ্যেও আমাদের মুসলিম জাহানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ফুরফুরে মেজাজে আছেন।
আজ আপনাদের মাঝে যে বিষয়টি নিয়ে হাজির সেটি হয়তো ডিজিটাল যুগে এসে অনেকে হয়তো ভুলেই গেছেন। বিষয়টি হলো কালের বিবর্তনে চিঠি ও খামের ব্যবহার।
বন্ধুগণ,
আপনাদের যাদের ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল বা তার পরেরও বেশ কিছু বছরের কথা মনে আছে তারা হয়তো বলতে পারবেন এর ব্যবহারটা কতটা জনপ্রিয় ছিলো। বিশেষকরে প্রবাসীদের সাথে চিঠি বিনিময়ের কথা। প্রবাসীদের প্রত্যেকটা পরিবার একটা বিদেশী চিঠির অপেক্ষায় দিনকে দিন প্রহর গুনতো। তখন এখনকার মতো এত আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিলোনা। তাই যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিলো চিঠি আদান প্রদান।
যাদের পরিবার থেকে কোন একজন প্রবাসে থাকতো তারা সারাদিন শত কাজ কর্মে ব্যস্ত থাকার পরও রাতকে রাত চিঠি লেখার নিয়ে পড়ে থাকতো তার প্রিয়জনের কাছে। একই রকম করতো বিদেশে থাকা প্রিয় মানুষটিও।
তখনকার মানুষ অতটা পড়া লেখা জানতো না বিদায় আশপাশ ও প্রতিবেশিদের মধ্যে মোটামুটি লেখাপড়া জানা ব্যক্তিটাকে নিয়ে শুরু হতো টানা হেচরা শুধুমাত্র চিঠিটা পড়ে দেয়া ও লিখে দেয়ার জন্য। চিঠি পড়া ও লেখা উভয় ক্ষেত্রেই চারপাশে ভীর জমে যেত চিঠিতে কি লিখেছে তা জানার জন্য।
লেখার সময় সবাই সবার মনের কথাগুলো বলতে থাকতো আর পড়ার সময়তো পরিবারের প্রিয় মানুষগুলোর মধ্যে কারও উল্লেখ না করলে এক প্রকার মন খারাপ করতো। অভিমানে মুখ লুকিয়ে থাকতো। মুখ লুকিয়ে কেঁদেই ফেলতো। ছিলো মন ভরা অনুভূতি ও প্রানের আকুতি প্রিয় মানুষটির প্রতি।
কালের ও জীবনধারার বিবর্তনে আজ আর এমনটা দেখা যাচ্ছেনা। হারাতে বসেছে আমাদের ঐতিহ্য। চিঠি ও তার খাম যা দেখে আমরা আনন্দিত হতাম অপেক্ষার প্রহর শেষ হতো। আর বিবর্তনটি এসেছে মোবাইল ফোন ও পরবর্তীতে ইন্টারনেটের সহজ লভ্যতার কারনে।
কিছু সরকারি কর্মকান্ড ছাড়া সেই চিঠি ও চিঠির খামের ব্যবহার আর চোখে পড়েনা। প্রেমিক প্রেমিক প্রেমের ভাব বিনিময়েও সেই মধুরতা আর দেখা যায় না। প্রিয়জনও মধুর অপেক্ষায় মগ্ন থাকেননা।
হারিয়ে ফেলেছি আমরা আমাদের অনেক প্রেম ময়তা। আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। তবুও প্রযুক্তি ও তার অগ্রসরতা আমাদের একান্ত কাম্য।
সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ….