সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকা ভাইবোনেরা। ফিরে এলাম নতুন আরো একটি আর্টিকেল নিয়ে। আজ আমি আপনাদের সামনে মানব জীবনের সেরা অর্জন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য এবং উপাত্ত বিশ্লেষণ পূর্বক পাঠক মহলে প্রাকাশিত করার তীব্র বাসনা ব্যক্ত করছি।
মানুষ সামাজিক জীব। মানুষ হিসেবে একজন ব্যক্তি জন্মের পর থেকেই এই সমাজে বসবাস করে স্বাবলম্বী হয়। জীবনের কোনো এক পর্যায়ে এসে সে অপরের মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী বানাতে বিভিন্ন কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। সেই কর্মপ্রচেষ্টার মাধ্যমে সফলতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন হয় নিজের তীব্র বাসনা, কাজের প্রতি আন্তরিকতা এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা। এভাবে তার অদম্য প্রচেষ্টার মাধ্যমে একজন মানুষ তার জীবনের সকল অর্জনকে সমাজের অন্যান্য মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সচেষ্ট হয়।
সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকা ভাই ও বোনেরা সফলতা আমরা সবাই চাই। কিন্তু যে সফলতা আমাদের জীবনে অর্জিত হয় সেই অর্জিত সফলতার পেছনে আমরা কতটুকু সন্তুষ্ট থাকি সে বিষয়টাই আমাদের বিবেচ্য বিষয়। কোন ব্যক্তি যখন তার স্বীয় কাজকে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে সম্পন্ন করে এবং একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করে সর্বোচ্চ মনোযোগ বিনিয়োগ করে সফলতা অর্জন করে তখন সেই অর্জিত সফলতা আমাদের অফুরন্ত আত্মতৃপ্তি এনে দেয়।
পরনির্ভরশীল কাজ এর মাধ্যমে সফলতা অর্জিত হলে সেই কাজে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায় না অর্থাৎ নিজের কাজ যদি আমরা নিজেরাই করি সে ক্ষেত্রে স্বীয় কাজে আত্মতৃপ্তি খুঁজে পাওয়া যায় এবং নিজেকে ধন্য বলে গণ্য করা যায়। আজকে সমাজে অহরহ অনেক মানুষ রয়েছে যারা নিজের কাজ নিজে করতে চায় না বরং অপরের মাধ্যমে করতে চাই। কাজ সম্পন্ন হলে আবার জয়ের মালাও নিজের গলায় পরে বা পরতে চাই। ক্ষনিকের জন্য জয়ের মালা পরলেও তার মনের ভিতরে যে আত্মতৃপ্তি আসার কথা সেই আত্মতৃপ্তি সে কখনোই উপভোগ করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা, এটাই সত্য কথা।
কষ্ট, পরিশ্রম, আত্মত্যাগ এই তিনটি শব্দের সমন্বয়ে যে অর্জন বাস্তবায়িত হয় সেই অর্জনটি আমার আপনার জীবনে অফুরন্ত আত্মতৃপ্তির সন্ধান দিয়ে থাকে। এই কাজ তিনটির কোন একটি হারিয়ে গেলে স্বীয় সফলতায় আত্মতৃপ্তি খুঁজে পাওয়া যায় না। নিজের মেধা, বিবেক এবং বুদ্ধির সঠিক সমন্বয় ঘটিয়ে কাজের প্রতি আন্তরিকতা দেখিয়ে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় উঠানো সম্ভব।
স্বপ্ন দিয়ে যেমন ফলাফল আশা করা যায় না ঠিক তেমনি পরিশ্রম আত্মত্যাগ এবং আন্তরিকতা ছাড়া কোন কাজে সফলকাম হওয়া যায়না। মানুষ যদি স্বীয় বুদ্ধি এবং বিবেককে কাজে লাগিয়ে কোন কাজকে নিজের কাজ হিসেবে গ্রহণ করে নেয় তাহলে তার বিজয় সুনিশ্চিত। শিক্ষাজীবনে কোন শিক্ষার্থী যদি কষ্ট পরিশ্রম এবং আত্মত্যাগের বিনিময়ে লেখাপড়া করে পরীক্ষা দেয় তাহলে উক্ত পরীক্ষায় অর্জিত ফলাফল যাই হোক না কেন সে সাদর চিত্তে মেনে নেয় এবং আত্মতৃপ্তি অর্জন করে।
পক্ষান্তরে কোন শিক্ষার্থী যদি কষ্ট পরিশ্রম বা আত্মত্যাগ ছাড়া অসদুপায় অবলম্বনের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এবং যদি সে ভালো ফলাফলও করে তবে উক্ত ফলাফলে সে নিজেকে সন্তুষ্ট করতে পারেনা, আত্মতৃপ্তিও অর্জন করতে পারে না। তবে অর্জিত আত্মতৃপ্তি তাকে ক্ষণিকের জন্য সম্মানিত করতে পারে কিন্তু তার এই সম্মান দীর্ঘস্থায়ী হয়না। কোনো না কোনো এক সময়ে তাঁর এই সম্মান অসম্মানের পাণ্ডুলিপিতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়, এটাই বাস্তবতা, এটাই সত্য কথা।
অনুরূপভাবে কোন জাতি বা গোষ্ঠী সাধারণ মানুষের অধিকার হরণ করে যদি সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাহলে তার অর্জনে সে কখনোই সন্তুষ্ট হয় না বরং সেই অর্জিত কথিত সফলতা নিজের জীবনকে বিপদের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে বিফলতার মালা কে বরণ করে নেয়। অর্জন তো গর্জন দিয়ে আদায় করে বা ছিনিয়ে নেওয়া যায়না। অর্জন নিজেকে মানুষের মনে স্থান দিয়েই ছিনিয়ে আনতে হয়। পশু যেমন গর্জন করে, অপরকে ঘায়েল করে, অপরকে হত্যা করে অর্জন ছিনিয়ে এনে আত্মতৃপ্তি লাভ করে ঠিক তেমনি এই সমাজের কতিপয় মানুষ পশুত্বের বৈশিষ্ট্য ধারণ করে মানুষের বাক স্বাধীনতা, মানুষের অধিকার হরণ করে নিজেকে স্বাবলম্বী বা নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচয় করাতে চায়। এটা মানবতার চরম ব্যর্থতা, এটা মানবতার চরম অবমাননা। এটা কখনো কোন জাতি গোষ্ঠী বা কোন সম্প্রদায় আনন্দচিত্তে গ্রহণ করতে পারে না।
তাই আসুন নিজের চেষ্টা পরিশ্রমের মাধ্যমে কোনো কিছু অর্জন করার চেষ্টা করুন। তাহলে সেই কাজে অর্জিত সফলতার অফুরন্ত আত্মতৃপ্তি নিজেকে ধন্য করবে এবং সমাজে নিজেকে গণ্য করতে সচেষ্ট হবে। মনে রাখবে মানুষ চিরদিন বেঁচে থাকে না কিন্তু বেঁচে থাকে তার কর্ম মনে রাখবে মানুষ চিরদিন তোমাকে মনে রাখবে না মনে রাখবে রেখে যাওয়া কর্মের স্বীয় স্মৃতি।
সম্মানিত ভিউয়ার্স, আর্টিকেলটি কেমন লাগলো তা কমেন্ট বক্সে আপনাদের মতামত প্রকাশ করে আমাকে উপকৃত করবেন। সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।।