স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আলোচনায় আজ একটি রোগ নিয়ে আর্টিকেল লিখব।আশা করি আজকের আর্টিকেলটি হতে কিছু হলেও জানতে পারবেন।অর্থাৎ একটি রোগ সম্পর্কে জানতে পারবেন। তো চলুন, শুরু করা যাক আজকের আলোচনা।
আজ যে রোগটি নিয়ে আলোচনা করব,সেই রোগটির নাম হচ্ছে গ্রেভস’ রোগ।তো কী এই গ্রেভস’ রোগ?
গ্রেভস’ রোগ হলো এমন একটি রোগ যা বিষাক্ত বিকীর্ণ গলগন্ড হিসাবেও পরিচিত, একটি স্বপ্রতিরক্ষিত অসুখ যা থাইরয়েডকে প্রভাবিত করে।এটি হাইপারথাইরয়েডিজমের সবচেয়ে স্বাভাবিক কারণ এবং প্রায়শই পরবর্তীকালে হাইপারথাইরয়েডিজমে গিয়ে দাঁড়ায়। এটির ফলে প্রায়ই বর্ধিত থাইরয়েড দেখা যায়।হাইপারথাইরয়েডিজম এর লক্ষণ এবং উপসর্গগুলির মধ্যে হলোঃ-
– উদ্বেগ
-পেশী দুর্বলতা
-ঘুমের সমস্যা
_দ্রুত হৃৎস্পন্দন বা হার্টবিট বেড়ে যাওয়া
– তাপের সহ্য করার ক্ষমতা কমে যাওয়া
-পেট খারাপ হওয়া
_অনিচ্ছাকৃতভাবে কোন কারণ ছাড়াই ওজন হ্রাস
– চোখ ফুলে যাওয়া,এই অবস্থাটি প্রায় ২৫ থেকে ৮০% মানুষের চোখের সমস্যা সৃষ্টি করে।
কিন্তু গ্রেভস’ রোগের লক্ষণ কী?অর্থাৎ কী কী ধরণের সমস্যা হলে বুঝবেন যে,আপনার গ্রেভস’ রোগ হয়েছে?
-গলগণ্ড হওয়া
-অনিদ্রা
-হাত কাঁপা
-চুল পড়া
-অত্যাধিক ঘাম
-খিটখিটে মেজাজ
-তাপ অসহিষ্ণুতা
-পেটের অসুখ
-ঘন ঘন মলত্যাগ
– বুক ধড়ফড় করা
-আংশিক পেশী দুর্বলতা
এই গ্রেভস’ রোগের কারণ কী?
এই রোগ সাধারণত বংশগত এবং পরিবেশগত কারণগুলির সমন্বয়ে হয় বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ যদি রোগীর পরিবারের কোন সদস্যের এই অসুবিধা থাকলে, সেই পরিবারের আর একজন ব্যক্তির এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।তাই বলা যায় আপনার বংশের বা আপনার পরিবারের যদি কারো এই গ্রেভস’ রোগ হয়ে থাকে তাহলে দুর্ভাগ্যবশত আপনার ও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু রয়ে যায়।আবার যদি যমজের একজন এই রোগ দ্বারা প্রভাবিত হয়, তাহলে অন্তত ৩০% সম্ভাবনা বিদ্যমান যে অন্য যমজটিও এই রোগে আক্রান্ত হবে বা হতে পারে। এছাড়াও কিছু কারণ আছে,যেমন
-অত্যাধিক ভাবনা চিন্তা, সংক্রমণ বা সংক্রামণজনিত রোগে এই গ্রেভস’ রোগের সূত্রপাত দ্রুত হতে পারে
– Type-1 ডায়াবেটিস এবং রিউমাটয়েড আর্থারাইটিসের মত অন্যান্য রোগের দ্বারা আক্রান্ত রোগী বেশি প্রভাবিত হতে পারে।
-ধূমপান রোগটির ঝুঁকি বাড়ায় এবং যার ফলে চোখের সমস্যা আরও খারাপ হতে পারে
-থাইরয়েড-উদ্দীপক ইমিউনোগ্লোবুলিন (টিএসআই) নামে একটি অ্যান্টিবডি যেটি এই অসুবিধার প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচ্য, সেটির থাইরয়েড উদ্দীপক হরমোনে (টিএসএইচ) অনুরূপ প্রভাব রয়েছে।এই টিএসআই অ্যান্টিবডি, থাইরয়েড গ্রন্থিকে অতিরিক্ত থাইরয়েড হরমোন উৎপন্ন করায়।
রোগটি লক্ষণগুলির উপর ভিত্তি করে আন্দাজ করা যেতে পারে এবং রক্ত পরীক্ষা এবং রেডিওআয়োডিন গ্রহণের সাথে নির্ণয় নিশ্চিত করা যেতে পারে।এছাড়াও আরও কিছু উপায়ে এই রোগটি নিশ্চিত করা যায়,তাই শুধু লক্ষণ থাকলেই যে এই রোগই হয়েছে সেটি কিন্তু বলা যাচ্ছে না।এর জন্য অবশ্যই হেল্থ ক্লিনিকে পরীক্ষা করা জরুরী।
রেডিওআয়োডিন চিকিৎসার মাধ্যমে, ওষুধপত্র গ্রহণের মাধ্যমে এই রোগ নির্মূল করা সম্ভব।
আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে গ্রেভস’ রোগ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।কোথাও ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।
-ধন্যবাদ