প্রথম কবিতা : বাংলার বর্ষা
_____________________
বর্ষা মানে গ্রীষ্মের কঠিন তপস্যা শেষ
বর্ষা মানে বৃষ্টি ভেজা সজল বাংলাদেশ
বর্ষা মানে গাছে গাছে পাখির নতুন বাসা
বর্ষা মানে কৃষকের চোখে নতুন ফসলের আশা
বর্ষা মানে ময়ূরীর মন করছে আনচান
বর্ষা মানে মাছেরা যেন ফিরে পায় প্রাণ
বর্ষা মানে নদ-নদী কানায় কানায় পূর্ণ
বর্ষা মানে দিনমজুরের ভাতের হাড়ি শূন্য
বর্ষা মানে কাঁদছে কেউ আবার হাসছে কেউ
বর্ষা মানে বাঙালির জীবনে নানা আবেগের ঢেউ
বাংলার বর্ষা বাংলার বর্ষা।।
বর্ষা মানে ঘরে ঘরে ইলিশ-খিচুড়ি রাঁধা
বর্ষা মানে যাত্রা পথে পদে পদে বাঁধা
বর্ষা মানে কৃষক বউয়ের কাজকর্ম কম
বর্ষা মানে নকশী কাঁথার সেলাই ঝমাঝম
বর্ষা মানে হঠাৎ করেই গগন বিদারী আওয়াজ
বর্ষা মানে স্বজন-বিয়োগে কান্না কন্ঠে রেওয়াজ
বর্ষা মানে বাসার ছাদে স্বচ্ছ জমা নির
বর্ষা মানে যেখানে-সেখানে এডিস মশকীর ভিড়
বর্ষা মানে কাঁদছে কেউ আবার হাসছে কেউ
বর্ষা মানে বাঙালির জীবনে নানা আবেগের ঢেউ
বাংলার বর্ষা বাংলার বর্ষা ।।
বর্ষামারে কবিগুরুর ” মন মোর মেঘের সঙ্গী ”
বর্ষা মানে “ওগো বাদলের পরী” বিদ্রোহীর প্রেমিক ভঙ্গি
বর্ষা মানে চিত্রশিল্পীর রং-তুলি নিয়ে বসা
বর্ষা মানে প্রকৃতির প্রতি কবির ভালোবাসা
বর্ষা মানে মুসলিমেরা দুহাত তুলে চায়
বর্ষা মানে কেয়া,কদমের মালা গাঁথবি আয়
বর্ষা মানে রাজধানী যেন নদীমাতৃক দেশ
বর্ষা মানে বন্যার্তদের নেই দুঃখের শেষ
বর্ষা মানে কাঁদছে কেউ আবার হাসছে কেউ
বর্ষা মানে বাঙালির জীবনে নানা আবেগের ঢেউ
বাংলার বর্ষা বাংলার বর্ষা ।।
দ্বিতীয় কবিতা :
আমি বনাম সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
_______________________________
ছন্দের জাদুকর সত্যেন্দ্রনাথের ভাষ্যমতে,
কুকুর পায়ে কামড় দিয়েছে দিক
তাই বলে অনুরূপ তোমার করাও কি ঠিক?
আমি বলি উত্তরে
এ মহান কবিরে-
মানছি ঠিক নয়
ধৈর্যেরও তো সীমা আছে
কতক্ষণ মানবে সয়?
কুকুরের পায়ে কামড় দেব না
নিজের গাল তাতে নোংরা হবে
যদি ঢিল নাহি ধরি এ হস্তে
সমাজে কুকুর বেড়ে যাবে।
এমন শাস্তি দাও কুকুরকে
যেন বাকি কুকুর পায় ভয়
একটা কুকুরও আর কামড়াবেনা
ঘটবে জালিমের পরাজয়।
পাকিস্তানি কুকুর রুখতে
বাঙালি যদি না নিত ঢিল সেদিন
জালিমের আয়ত্তে মজলুম হয়ে
আজও থাকতাম মোরা পরাধীন।
( সমাপ্ত )
কবির নাম : তাসরিন ইসলাম রিতু
সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘উত্তম ও অধম’ কবিতার মূলভাব এর বিপরীত হচ্ছে আমার এই কবিতাটা। আমি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত কে অমান্য করছি না । তার লেখা এই কবিতার শিক্ষা অবশ্যই এই সমাজের জন্য প্রয়োজনীয়। তবে কিছু কিছু সময় উল্টোটাও করতে হয়। এটাই বোঝাতে চেয়েছি আমি।
কেমন হলো মন্তব্য করে জানাবেন।