না বলা কথার গল্প

১২ বছর বয়সে যখন তেমন কোন বুদ্ধি হয়নি আমার। সেই সময় থেকেই তোমার নেশায় আসক্ত। তখন থেকেই তোমাকে খুব বেশি ভালোবাসি। আমার শরীরের প্রতিটা কোষ, রক্তকণিকা, মন সারাক্ষণ তোমার কথা বলে। কিন্তু তোমার অবহেলা আমাকে তা প্রকাশ করতে দেয়নি। তারপর ধীরে ধীরে বড় হচ্ছি আর তোমার জন্য আমার ভালোবাসা আরও গভীর হচ্ছে। যতো বড় হচ্ছি ততোই তোমার জন্য আমার মায়া বাড়ছে । তোমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে শুরু করেছি। জানতাম না কোনটা ঠিক কোনটা ভুল। কিন্তু মোনাজাতে শুধু এটাই বলতাম “আল্লাহ আমি একে খুব ভালোবাসি তুমি একে আমার জীবনসঙ্গী বানাইয়া দিও”।

কিন্তু কখনোই তোমাকে ভালোবাসি কথাটা বলার সাহস পায়নি। বড় হয়ে গেলাম, এখন সব বুঝতে শিখেছি , বুদ্ধিও হয়েছে কিন্তু তোমাকে ভালোবাসি কথাটা বলার সাহস নাই। প্রতিদিন স্কুলে গিয়ে শুধু তোমার দিকেই তাকিয়ে থাকি। প্রতিটা মুহূর্তে তোমাকে খুঁজি। আর তুমি একবার আমার দিকে ভুল করেও তাকালে আল্লাহকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই । SSC exam কয়েকদিন পরে।

স্কুল থেকে বিদায় দিবে। সেই দিনটিও এসে গেল।
আগের রাতে খুব চিন্তা ভাবনা করলাম যে গত ৫ বছর ধরে তো বলতে পারিনি, কাল ও যদি বলতে না পারি তাহলে সারাজীবনের জন্য হয়তো হারিয়ে ফেলবো।

আল্লাহকে অনেক করে বললাম “কাল অন্তত আমাকে সাহসটা পাওয়াইয়া দিও”। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর ভাবতে শুরু করলাম আজ কিভাবে বলবো । অনেক ভেবে ঠিক করলাম “যে রাস্তা দিয়ে গতো ৫ বছর তোমার পিছু পিছু ঘুরেছি কিন্তু কখনো পাশে গিয়ে কথা বলতে পারিনি , সেই রাস্তাতে তোমার সাথে সাথে আসবো …বলবো ভালোবাসি তোমায়, তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ একজন মানুষ। যার নাম শুনলেও আমার মন ভালো হয়ে যায়, যাকে দেখলে আমার অনেক শান্তি লাগে, ভালোলাগে, আমি ভালো হওয়ার একমাত্র কারণ তুমি। আমার জীবন তুমি”…….

💔🥺
ভেঙ্গে গেলো ….. ভেঙ্গে গেলো আমার সব ইচ্ছা, আশা, স্বপ্ন ,,যখন দেখলাম আর শুনলাম;
তুমি অন্য কারো,
সে এসেছে আজ শুধু তোমারই জন্য।

আমার দুনিয়াটাই কেমন কেমন যেন হয়ে গেল। ভিতরটা যেন কেমন কষ্টে ছটফট করছে। চিৎকার দিয়ে কাঁদছে, আর মরে যেতে চাইছে।

<

আমাদের শরীরের ভেতরের হৃদপিণ্ড ক্রমাগত সংকোচন প্রসারণ হচ্ছে নিজের শক্তিতে। কিন্তু শক্তি হারিয়ে ফেলেছি আমি। আমার শরীরের প্রতিটা রক্তকণা ছুটে চলেছে দেহের প্রতিটা অঙ্গে, কিন্তু চলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি আমি নিজে।
খুব করে ইচ্ছে করছিলো গিয়ে সব তাকে বলে দিতে। কিন্তু সেটাও আর সম্ভব হয়নি। নিজেকে কোনোরকমে সামলে নিলাম।
বাসাই ফিরে আসলাম।

এভাবে জীবন্ত একটা লাস হয়ে কোনোরকমে দিন কাটতে লাগলো। পরে আরো কয়েকবার নিজেকে শেষ করে দেওয়ার এক বৃথা চেষ্টা করেছি। মাঝে মাঝে মনে হতো কেন পরিচয় হলো? কেন ভালো লাগলো? আর কেনই বা বলতে পারলাম না? আর কেনই বা আমার কপালেই এমন হলো?

এভাবে দিন চলতে চালগো। আরেকটু বড় হলাম। আস্তে আস্তে সৃতি গুলা মুছে যেতে শুরু করলো। জীবনটাকে একটু গুছিয়ে নিতে শুরু করলাম। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। কিছুদিন পরে খেয়াল করলাম সেও আমার সাথে একই কলেজে ভর্তি হয়েছে।

দিন যায়, মাস যায়। চোখে চোখ পড়ে। কখনো কথা বলার সাহস হয়নি। পুরোনো কথা মনে পড়তে লাগলো। যে সেই পুরোনো সৃতিগুলো আমাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। শতো চেষ্টার পরেও সেই সৃতি হত্যা করতে ব্যার্থ হলাম। পারলাম না ভুলে থাকতে। আবার পড়ে গেলাম তার প্রেমে। তাকে দেখার জন্য এখনো মনটা উতলা হয়ে থাকে।

মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে গিয়ে সব মন খুলে বলে ফেলি। কিন্তু সেটা শুধুমাত্রই ইচ্ছো।
এখনো রাস্তার কোনে দাড়িয়ে থাকি তাকে দেখবো বলে। জানি সে আমার ছিলো না আমার হবেও না। তবে যতোদিন আছি তার সৃতি বুকে জড়িয়েই বেঁচে থাকবো।

Related Posts

8 Comments

মন্তব্য করুন