পৃথিবীতে ছোট বড় অনেক দ্বীপ ওই রয়েছে যা আমরা অনেকেই জানি, কিন্তু এমন ও কিছু দ্বীপ রয়েছে যা ভাসমান অর্থাৎ পানির উপরে ভাসে অনেকেই হয়তো এ বিষয়ে জানেন আবার হয়তো অনেকেই জানেন না, তাহলে চলুন জেনে নেই পৃথিবীর কয়েকটি ভাসমান দ্বীপ সম্পর্কে এবং এর কারণ সম্পর্কে । প্রথমেই জেনে নেই দ্বীপ কি।
দ্বীপ কাকে বলে?
যার স্থলভাগের চতুর্দিকে জল অর্থাৎ চারিদিকেই জল শুধু মধ্যে স্থল রয়েছে তাকেই দ্বীপ বলা হয়।
এসব দ্বীপ পানির উপরে ভাসে কেন?
অনেক গবেষণায় উটে এসেছে যে লাইট স্পঞ্জি টিস্যু এর কারণে এসব দ্বীপ পানির উপরে ভাসছে অর্থাৎ পচা গাছপালা আর বিভিন্ন গ্যাস মিশে ভাসমান এক ছোট স্থলভাগে পরিনত হয় এবং ওই জায়গায় আবারও গাছপালা লতাপাতা জন্মে, আবারও বিভিন্ন ধূলিকণা জমতে থাকে। তবে এর মূল কারণ হচ্ছে গ্যাস, এসব পচা গাছপালা গ্যাস সরবরাহ হয়ে মাটিতে পরিনত হয়। আরো ভেসে আসা বিভিন্ন জিনিস একানে জমা হতে থাকে আর চাঁপা পরে মাটিতে এভাবেই ধীরে ধীরে পরিনত হয় বড় দ্বীপে।
আমরা জানি যে পৃথিবীটাই শূন্যে ভেসে আছে, আর এ ও জানি যে পৃথিবীর উপরিভাগ সম্পুর্ণ সমতল নয় কোথায়ও সমতল আবার বড় বড় পাহাড়, ঠিক তেমনি এসব দ্বীপর তলদেশের অবস্থান যার কারণে এর তলদেশে বাতাসের সাথে বিভিন্ন প্রকারের গ্যাস রয়েছে, যার কারণে এসব দ্বীপে বড়বড় গাছপালা থাকা সত্ত্বেও এসব দ্বীপ ডুবছেনা। তবে অনেক ঝড়, সাইক্লোন এর জন্য এর পাশ্বগুলো ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
Lok tak lake (লোক টাক হ্রদ ভারত )
এটি ভারতের মনিপুর রাজ্যে অবস্থান। এখানে গাছপালসহ বিভিন্ন উপপ্রজাতির বসবাস রয়েছে, এর আয়তন প্রায় ৪০ কিমি হবে। এখানে এই দ্বীপের উপরে কাইবোল লামজাও ন্যাশনাল পার্ক নামে একটি পার্ক রয়েছে।
lik lik aislens
লিক লিক আইসলেন্স এটিও একটি ভাসমান দ্বীপ, যার অবস্থান আফ্রিকার কংগুতে, আফ্রিকার একটি নদী থেকে প্রায় ২০০ কি.মি.
lake District England
লেক ডিস্টিক যা ইংল্যান্ড এর একটি বিশেষ ভাসমান দ্বীপ, সাধারণত গ্রীষ্মের সময় একই স্পটে দেখা যায়। এতেও আটকে পড়া অনেক গ্যাস পাওয়া যায়।
এবং অনেক প্রজাতির প্রাণী গাছপালা ও লক্ষ করা যায়।
ভাসমান দ্বীপ সম্পর্কে পুরাতন লেখকরা খুবই আকর্ষণীয়ভাবে বর্ননা করেছেন, ততকালীন রোমান লেখক প্লিনি দ্যা ইওংগার, রোমানের এক ভাসমান দ্বীপ lacus Vadimonis ( লাকাস ভাদিমনিস) বর্তমানে( marshy pond) মারশি পন্ড নামে পরিচিত রোমের টিইবার নদীর তীর থেকে প্রায় ৬০ কি.মি দূরে যার অবস্থান। তিনি লেখেন যে ওখানে কোনো নৌকা এলাও ছিল না, এবং দ্বীপের হ্রদের পানি খুবই অদ্ভুত, মাটি খুবই উর্বর এবং বিভিন্নরকমের প্রজাতির প্রাণী গাছপালা ও লক্ষ করা যায়।
Lake titicaca
Lake titicaca (লেক টিটিকাকা) যা পৃথিবীর একটা আশ্চর্যময়, রহস্যময় প্রাচীন দ্বীপ। এটি পেরু এবং ভলিবিয়া সিমান্তের একটি অংশ, পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যজনক তালিকায় যদিও এটি নেই তবে থাকাটা উচিত ছিল। এই হ্রদের পানি অনেক রুপকথা ধারণ করে, অনেকে একে অর্থাৎ এই হ্রদের পানিকে পৃথিবীর আয়নাও বলে থাকে, এর অর্ধেক পেরু সীমান্তে আর অর্ধেক ভলিবিয়া সিমান্তে। এর আয়তন প্রায় ৮৬৭২ কি.মি.। পেরুর পেনু উপসাগরে এর অবস্থান। এই দ্বীপে পাঁচ থেকে দশ পরিবার বসবার করে, যাদের পেশা হচ্ছে জেলে। শুধু এই দ্বীপ কেন পৃথিবীতে ছোট বড় যত দ্বীপ ভাসমান কিংবা সাধারণ সব দ্বীপের মানুষেরাই প্রথমে জেলে পেশায় জরিত। এই দ্বীপ ভাসমান হলেও এটি কিন্তু প্রাকৃতিক নয়,
মালদ্বীপের ভাসমান দ্বীপ।
মালদ্বীপ সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানেন তবে এটা ভাসমান দ্বীপ নয়। এটি দ্বীপ বটে কিন্তু একটা রাষ্ট্র। মালদ্বীপে হ্রদেও কৃত্রিম ভাসমান দ্বীপ রয়েছে। তাছাড়া আর অনেক কৃত্রিম ভাসমান দ্বীপ রয়েছে যা আমরা সবাই এতবেশী জানি না। কৃত্রিম দ্বীপের আকার কিন্তু এতবেশি বড় হয় না।
দ্বীপের সৌন্দর্য!
দ্বীপের সৌন্দর্য কিন্তু অপরিসীম, এর সৌন্দর্যের মূলে রয়েছে বিশাল সাগর, গাছপালা, বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ । বিশেষ করে যেসব দ্বীপে পর্যটকদের আনাগোনা কম। কিছু কিছু দ্বীপে রয়েছে বিচিত্র ধরনের উদ্ভিদ যা আমরা আগে কখনো দেখিনি