যুগ পাল্টেছে। বাচ্ছারাও এখন অনলাইন থেকে যেকোনো বিষয়ে প্রচুর তথ্য পাচ্ছে। হোক সেটা ভালো কি মন্দ, তাতে কি যায় আসে। যেমনটি, আপনি অভিভাবক হয়েও সারাদিন ঘাটাঘাটি করছেন নেটে। বাচ্ছাটিও অনুকরন প্রিয়। সর্বদাই অনুকরন করে যাচ্ছে আপনাকে। আপনি মোবাইলটি হাত থেকে রাখা মাত্রই চোখের পলকে চলে যাচ্ছে তাদের হাতে।
পিতা বা মাতা বা একজন অভিভাবক হিসাবে নিজের অজান্তেই আপনি আপনার চেয়ে বেশি আপনার বাচ্চাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন আধুনিক সময়ের আধুনিকতা। বাচ্চারা খুব ছোট থেকেই আপনার নিত্য ভাল এবং খারাপ অভ্যাস উভয়ই গ্রহণ করে। শিষ্টাচারসহ বিভিন্ন সময়ের খাদ্যাভাস অনুসরণ করে এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বজায় রেখে আপনি আপনার সন্তানকে অনুপ্রাণিত করতে পারেন। যে সকল স্বাস্থ্যকর অভ্যাস ছোটদের ছোট থেকেই শেখানো হয় এক পর্যায়ে সেগুলোই তার জীবনযাত্রার রুটিনের অংশ হয়ে যায়। যার ফলে সে একটি সুখী, স্বাস্থ্যকর এবং রোগমুক্ত জীবন নিশ্চিত করতে পারে। যেমনঃ
দিনের শুরুতে অর্থাৎ সকালের নাস্তাটি সর্বাধিক পুষ্টিকর হওয়াঃ
দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবারটি হলো সকালের খাবার। অভিভাবকদের এ বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্বারুপ করতে হবে। একটি ভালো নাস্তা কেবলমাত্র শিশুর শরীরের শক্তির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেনা বরং তাকে নিয়মিত সকালের নাস্তা খেতে উৎসাহীও করে। তাই বাচ্ছাদের খাবারের একটি রুটিন থাকার গুরুত্ব অনেক। বাচ্চারা রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানো এবং সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।
পর্যাপ্ত শরীরচর্চা করাঃ
যদিও মহামারীর সময়টাতে বাচ্চারা ঘরে অবস্থান করছে তবুও যতটুকু সম্ভব তাদেরকে ঘরের ভেতরের শরীরচর্চা করার সুযোগ দেয়া উচিত। কারন, তাদের জন্য পর্যাপ্ত অনুশীলন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বাচ্চাদের প্রতিদিন অন্তত এক ঘন্টার জন্য কোনও না কোনও উপায়ে অনুশীলন করার সুযোগ দিন। শিশুরা যখন অনুশীলন করে তখন তাদের একাডেমিক স্ট্রেস এবং মানসিক সঙ্কট কেটে যায়। খেলাধুলা বাচ্চাদের অল্প বয়স থেকেই জীবন কীভাবে মোকাবেলা করতে হয় তা শেখায়।
বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুনঃ
আপনার বাচ্চাকে ঘুমোতে যাওয়ার আগে কিছু সময়ের জন্য শিক্ষনীয় কোনো বই পড়তে দিন। তারা যা পড়তে চায় তা ই দিন। একটি ভাল দক্ষ শব্দভাণ্ডার তৈরি করার জন্য তাকে বই পড়ান। শক্তিশালী পাঠ্য দক্ষতা অপরিহার্য। কারণ বইগুলি সবসময় বাচ্চাদের শিখতে এবং তাদের জ্ঞানের স্পৃহা বাড়াতে সহায়তা করে।
পারিবারিকভাবে তাকে সময় দিনঃ
আপনার সন্তানের সাথে একটি বন্ধুসুলব বন্ধন তৈরি করুন। তাকে এটা বুঝান যে যাতে আপনার মধ্যে আস্থা রাখে। পারিবারিক খাবার একসাথে খাওয়া হিসাবে রাতের খাবার নির্ধারণ করুন। সকলে মিলে পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছে তা নিশ্চিত করুন। আপনার বাচ্চাদের সাথে ভালে ছায়াছবি, সাহিত্য, রাজনীতি বা যা কিছু কল্যানকর তা নিয়ে আলোচনা করুন। তাদেরকে উজ্জীবিত করে রাখুন। এটি নিশ্চিত করুন যে, তাদের যখন সাহায্যের প্রয়োজন হয় তখন তারা যেন আপনার কাছে পৌঁছাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।
ভাল ঘুমঃ
আপনার বাচ্চাদের রুটিন করে দৈনিক আট ঘন্টা একটানা ঘুমের ব্যবস্থা করুন। ভালো স্বাস্থ্যের জন্য এর চেয়ে ভাল আর কিছুই নেই। ঘুম কম হলে শরীরের হরমোন, কোষ এবং টিস্যুর বিকাশকে প্রভাবিত করে। এমন একটি প্রতিদিনের ঘুমের রুটিন আপনার বাচ্চাকে দীর্ঘমেয়াদে ভাল করতে পারে।
স্বাস্থ্যকর অভ্যাস সুস্বাস্থ্যের দুই-তৃতীয়াংশঃ
অল্প বয়স থেকেই আপনার বাচ্চাদের বেসিক হাইজিন শেখান। দিনে অন্তত দু’বার ব্রাশ করা, দাঁত ফ্লাশ করা, প্রতিবার খাবারের আগে এবং পরে হাত ধোয়ার মতো অভ্যাস করা। এসকল নিয়ম অসুস্থতা কমায়। এটি বাচ্চাদের পরিষ্কার এবং সুসজ্জিত হওয়ার গুরুত্বও শেখায়। শৈশব থেকে এই অভ্যাসগুলি থাকলে বাচ্চারা একটি স্বাস্থ্যকর জীবন পাবে।