বাংলাদেশে এর আগেও আমরা শুনেছি এটিএম বুথ জালিয়াতির কথা। এবারও এমন কিছুর আশঙ্কার ঘটনাকে একেবারেই উড়িয়ে দেয়া যায় না।
দেশের বেসরকারি ব্যাংক গুলোতে সাইবার হামলার যে সতর্কতা বাংলাদেশ ব্যাংক জারি করেছে তার নির্দেশনা মতেই এসব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের অনলাইন সেবা সহ এটিএম সেবা রাত ১২টা থেকে সকাল অব্দি বন্ধ রাখবে বলে জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলোকে নোটিশের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে ইতিমধ্যে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২৭শে অগাস্ট এ বিষয়ে সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়ে নোটিশ দিয়েছে সকল ব্যাংক গুলোকে।
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড-ইবিএল, ব্র্যাক ব্যাংক, সাউথ-ইস্ট ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক-ইউসিবিসহ আরো কিছু ব্যাংক তাদের এটিএম সেবা বন্ধ করে রেখেছে।
বাংলাদেশ সরকারের সাইবার সিকিউরিটির যে ইউনিটগুলো আছে, তারা এক চিঠিতে হ্যাকিংয়ের মতো একটা আশঙ্কার কথা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়েছে। এর প্রেক্ষিতেই বাংলাদেশ ব্যাংক অন্য ব্যাংক গুলোকে সতর্ক থাকার কথা বলেছে।
সতর্কতায় বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোকে তাদের নিজেদের ডিভাইসের কোন দুর্বলতার কারণে যেন হ্যাকিং এর স্বিকার না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
উত্তর কোরিয়া থেকে বিগলসবয়েজ নামে একটা গ্রুপ হ্যাকিংয়ের চেষ্টা করছে বলে তারা জানিয়েছেন। সেটা বাংলাদেশ এর গোয়েন্দা সংস্থা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে এসব জানানো হয়েছে।
ক্রেডিট কার্ড ও সুইফট নিরাপত্তা পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুতর। এই দুটি মাধ্যম যদি হ্যাক করতে পারে তাহলে হ্যাকারদের বাংলাদেশে আসার দরকার নেই। তারা বাইরের সে দেশে বসেই হ্যাক করতে পারবে।
প্রথমত, রাতের বেলা ট্রানজাকশন খুবই কম হয় আর ২য়ত, ওই সময়টাতে ব্যাংকের ফাস্ট ট্রাক বুথগুলোতে কোন কর্মকর্তা থাকে না। তার ফলে কেউ যদি নকল কার্ড ব্যবহার করার চেষ্টা করে তাহলে তা রোধ করাটা কঠিন তাই রাতের বেলা এটিএম সেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকগুলো। ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে যে, ব্যাংকগুলো যদি এ ধরণের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তাহলে তা খুবই সাময়িক সিদ্ধান্ত, খুব শিঘ্রয় তা আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।
এর কারণে অনেক মানুষ অনলাইন ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বে। তাই কোন ব্যাংকই এটাকে দীর্ঘমেয়াদি করতে চাইবে না বলেই মনে হয়।
এসব সাইবার হামলা যেকোন সময় হতে পারে। সতর্ক থাকা দরকার সব সময়। তাই একই সাথে ই-মেইল ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গ্রাহকদের কি করা উচিৎ?
এটিএম বুথ এবং অনলাইন বন্ধ থাকার সময়ে কোন গ্রাহককে যদি জরুরী ভিত্তিতে এ ধরণের সেবা দরকার হয় তাহলেও সেটি তিনি নিতে পারবেন।
মনে করেন যদি কারো হাসপাতাল বিল দেয়ার মতো জরুরী ভিত্তিতে টাকার দরকার হয় তাহলে সে মেশিনের মাধ্যমে কার্ড দিয়ে অফলাইন লাইন মুডেও সরাসরি বিল পরিশোধ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে তার এটিএম এর দরকার হবে না।
প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব ব্যাংককেই বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সম্পর্কিত সার্কুলার পূরণের নির্দেশ দেয়া থাকে। ব্যাংক গুলো সেগুলো করেও।
সুতরাং খুব বেশি ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা আশা করি সাইবার এটাকিং মোবাবিলা করার সক্ষমতা আমাদের আছে।