আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমিও ভালো আছি। বেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়েই আজকের এই পোস্টে মূলত আলোচনা করা হবে। আশা করি আপনাদের অনেক ভাল লাগবে।
বেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
বেল বা বেল এর শরবত পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া অনেক কষ্টকর। বেল এমন একটি ফল যেট কম বেশি সবাই পছন্দ করে থাকে। বেল খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে যা আমরা অনেকে জানি না। আপনি যদি বেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। বেল হলো খুব একটি সাধারণ ফল। এটির দাম ও তেমন বেশি নয়। কিন্তু অনেকে বেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে না জানার কারণে রেগুলার খায় না।
ক্যান্সারে বেলের উপকারিতা
ক্যান্সারে অ্যান্টি প্রলেফিরেটিভ ও অ্যান্টি মুটাজেন উপাদান খুবই উপকারী যে উপাদান গুলো রয়েছে বেল এর মধ্যে। বেল খাওয়ার ফলে ক্যান্সার জনিত অনেক সমস্যার হাতে মুক্তি পাওয়া যায়। তাছাড়া রেগুলার বেল খাওয়ার ফলে ক্যান্সার এর ঝুঁকি অনেকটা কমে। তাই আপনার যদি ক্যান্সার এর সমস্যা থাকে বা ক্যান্সার থেকে বেঁচে থাকতে চান তাহলে বেল খেতে পারেন। এর ফলে অনেক ভালো ফল পাবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে বেলের ভূমিকা
প্রায় মানুষের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকে। বেল খাওয়ার ফলে পেট পরিষ্কার হয় যা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে। তিন থেকে চার মাস যদি বেল খায় রেগুলার তাহলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই যাদের কৌষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত বেল খেলে এর থেকে বাঁচা সম্ভব।
আলসারের ঔষধ হিসেবে বেল
আলসার রোগটি অনেক বড় ও জটিল রোগ। এই রোগকে অনেকে আবার মরণ ব্যাধি রোগ বলেও দাবি করে। কিন্তু এই জটিল রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে বেলের শাস। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকা বেলের শাঁসে যেই ফাইবার উপস্থিত থাকে সেই ফাইবার আলসার উপসমে সর্বাধিক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই যারা আলসার জনিত সমস্যার মধ্যে রয়েছে তাদের জন্য বেল একটু অনেক বড় উপকারী জিনিস হতে পারে। প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে চার বার বেল বা বেলের শরবত খেতে পারলে আলসার এর সমস্যা অনেক কমে আসে। তাছাড়া বেল পাতা যদি রাতে ভিজিয়ে সকালেও খেতে পারেন তাহলে আলসার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই যারা আলসার রোগে ভোগছে তাদের জন্য বেল নিয়মিত খাওয়া উচিত।
ডায়বেটিস কমাতে বেল
এখন কম বেশি পূর্ণ বয়সের সবার মধ্যে ডায়বেটিস সমস্যায় রয়েছে। ডায়বেটিস এমন একটি রোগ যা সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। পাকা বেলে মেথানল নামে একটি উপাদান রয়েছে। এই উপাদানটি ব্লাড সুগার কমাতে অসামান্য ভুমিকা রাখে। তাই ডায়বেটিস রোগী চাইলে বেল খেতে পারে। তবে যারা শরবত এর মাধ্যমে খাবে এদের কোনো ফল হবে না। কেননা শরবত এর মাধ্যমে খেলে এর কোনো বেনেফিট থাকবে না। তাই খেলে পাকা বেল খেতে হবে।
আর্থ্রারাইটিস কমাতে বেল
আমাদের কম বেশি সবার শরীরের মধ্যে কোনো না কোনো ব্যথা থেকে থাকে। এসব ব্যথাকেই আর্থ্রারাইটিস বলা হয়ে থাকে। এসব ব্যথার কারণে অনেক কাজই ভালো ভাবে করতে পারে না। ফলে জীবন যাপনেও নানসন কষ্ট পোহাতে হয়। যাদের শরীরে নানা রকম ব্যথা রয়েছে তাদের জন্য বেল একটি বড় উপকারী জিনিস। নিয়মিত বেল খেলে এসব ব্যথা অনেক কমে আসে। তাই যাদের এই সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত বেল খাওয়ার মাধ্যমে এসব ব্যথা হতে নিজেকে মুক্ত করতে পারবে।
এনার্জি বাড়াতে বেল
শরীরের এনার্জি অনেক বড় একটা জিনিস। এই এনার্জি না থাকলে মানুষ কিছুই ভালো ভাবে করতে পারে না। আর এই শক্তি বাড়াতে বেলের কোনো জুড়ি নেই। অ্যানার্জি বাড়াতে বেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১০০ গ্রাম বেল ১৪০ ক্যালোরি অ্যানার্জি দেয়। তাহলে বুঝতেই পারছেন বেল খেলে কতটা এনার্জি যোগায় শরীরে।
আমরা ইতিমধ্যে বেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি। কোনো জিনিস এর সাধারণত ভালো খারাপ উভয়ই দিক থাকে। তাই বেলের যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি এর অপকারিতা ও রয়েছে। চলুন বেল খাওয়ার অপকারিতা গুলো জেনে নিই।
বেল খাওয়ার অপকারিতা
সাধারণত কোনো জিনিসের অতিরিক্ত কিছুই শরীরের জন্য ভালো নয়। প্রয়োজন বা নিয়মের বেশি সকল কিছু দেহের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না। ঠিক তেমনি বেল যেমন মানুষ কে নানা রকম উপকারিতা প্রদান করতে পারে তেমনি ক্ষতিও করে। বেল এর মধ্যে অধিকাংশ বেলই মিষ্টি। আর বেল যদি মিষ্টি না হয় তাহলে এতে স্বাদ পাওয়া যায় না এবং কেউ খেতে চায় না। তবে এসব মিষ্টি বেল অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ডায়বেটিস রোগীর জন্য বেশ ক্ষতিকর। ফলে তাদের শরীরে সুগার এর মাত্রা বেড়ে যায়। যার ফলে তাদের ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তাই অতিরিক্ত বা মিষ্টি বেল ডায়বেটিস রোগীর জন্য উপকারিতার পাশাপাশি ক্ষতিও সাধন করে। আবার অতিরিক্ত বেল খাওয়ার ফলে যৌ-ন শক্তি কমে যায়।
যারা অতিরিক্ত বেল খায় তারা তাদের যৌ-ন শক্তি খুব দ্রুত হারিয়ে ফেলে। এছাড়া বেল যদি অতিরিক্ত খায় তাহলে শরীরে অনেক রকমের রোগের দেখা মিলে। ফলে নানান সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই বেল খাওয়ার উপকারিতা গ্রহণ করতে হলে একে পরিমাণ মতো করে খেতে হবে। কখনো প্রয়োজন এর বেশি খাওয়া উচিত নয়। না হলে জটিলতায় পরতে হবে। নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে বেল খাওয়ার অপকারিতা গুলো সম্পর্কে।
বেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।