ব্যাক্তির চেয়ে পোশাক বড় সামাজিক চাহিদা !

ভালো থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু সামাজ আমাকে ভালো থাকতে দিলো না । ভালই ছিলাম ১০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে । ভাঙ্গা ঘড়, সাধারন খাবার, সাধারন চলাফেরা, সাধারন পোশাকাদি ব্যবহার করে সাধারন জীবন জাপনে । কিন্তু ভদ্র সমাজে এগুলোর কোন মূল্যই যে নেই, সাথে এগুলো যে মানুষটি ব্যবহার করে তাঁর দামটাও যে সমাজের কাছে অতি নগন্য হয়ে পরে তা হারে হারে টের পাচ্ছিলাম । তাইতো এক পর্যায়ে আমি টাকার নেশায় পাগল হয়ে যাই । নিজের নতুন লক্ষ ঠিক করি যেসব সাধারন জিনিষ একজন মানুষের দাম ঠিক করে দেয় সেগুলো আমি পরিবর্তন করবো যে কোন মূল্যে । তাইতো আজ আমি টাকার নেশায় পাগল হয়ে গেছি । এখন আর সব কিছুতেই সাধারন খুজি না । অসাধারন কিছু খুজে বেরাই । সেই খুজে বেরানোর এক পর্যায়ে আমি পেয়েও যাই আমার কাংক্ষিত সাফল্য । এখব আমার ভাঙ্গা ঘড় হয়ে গেছে ৫ তলা দালান । এখন আর সাধারন খাবার খাই না, বাজারের সবথেকে দামি মাছটা দুকান্দার আমার জন্য রেখে দেয়, ক্লাস এইট পাস করলে কি হবে শরিলে কোট টাই ছাড়া অন্য কিছু পরি না । দামি একটা গাড়িও আছে । চলাফেরাও এখন আর আগের মত সাধারন নেই, এতেও এসেছে কিছু ভিন্নতা এখন যাকে তাকে মারপিট করি, যেখানে সেখানে দূর্নিতি করি, যারতার সম্পদ লুটে নেই, এগুলোই বর্তমানে আমার কাজ এখন কারও অধীনে ১০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করি না । অন্য অনেক লোককে চাকরি দেই । অবশ্য সেটা টাকার বিনিময়ে । আর আমার অধীনে যারা চাকরি করে তাদের বেতন দিতে হয় না । অনেকেই আমার অধীনে চাকরি করে আমার নাম বেঁচে হাজার হাজার টাকা কামিয়ে নিচ্ছে । এ কাজগুলোর চাহিদা অনেক বর্তমান ভদ্র সমাজে । মন থেকে এই সমাজটাকে মেনে নিতে না পারলেও উপরে উপরে ভক্তি দেখাতে হয় । যতই হোক আমি একটা সামাজিক জীব সমাজ ছাড়া চলতে পারবো না তাই । আমার মনে হয় আমি যা করি বা করছি তা ভালো না, ভালো করছি না । তবুও এগুলোই যে সমাজে চাহিদা সম্পূর্ণ কাজ তা কি করে অবহেলা করি । এখন সমাজে আমার একটা অবস্থান তৈরী হয়েছে । বড়-ছোটু যে কোন সামাজিক কাজে আমার মতামতের আশা করে সবাই । সবাই সম্মান করে চলে আমাকে । অনেক শিক্ষিত ব্যাক্তিরাও আমাকে সম্মান করে অথচ দেখুন আমি কিন্তু এইট পাস  একটা সাধারন ছাত্র । মনে মনে ভাবি টাকা মানুষকে কত সম্মান দেয় । বর্তমান সমাজে মানুষের ব্যবহার কিছুই না সব হল টাকা । আমি বুঝতে পারি আমার ব্যবহার ভালো না আমি তো ইচ্ছে করে করি না সমাজ আমাকে দিয়ে এসব করতে বাদ্ধ করছে ।

এখন কথা উঠতে পারে কি করে ? সমাজের কেও কি আপনাকে বলেছে এগুলো করতে । আমি বলবো হে সরাসরি না বললেও সমাজের অধিকাংশু মানুষ আমাকে বলেছে এগুলো করতে । কিছুদিন আগেও যখন আমার টাকা ছিল না । তখন আমার ব্যবহার ছিল সুন্দর সবইকে সম্মান করতাম । কারো সাথে ঝগড়া করতামনা, কোন অন্যায় করতামনা, কারও কোন ক্ষতি করতে চেষ্টাও করতাম না তখন সমাজের প্রতিটা লোক আমাকে কেনো এত ছোট করে দেখেছে ? কিন্তু এখন যখন আমি সব অপকর্ম করছি তা সর্তেও সমাজের প্রতিটা লোক আমাকে কেনো এটো সম্মান করছে ?

এই কথার ভিত্তিতেই বলতে হচ্ছে!

সমাজে এমন অনেক কাজ আছে যেগুলো বলে করাতে হয় না, তা সমাজে বসবাসরত সামাজিক জীব হয়ে প্রাকৃতিক ভাবেই শিখে নেয় । এর মধ্যে চাহিদা হচ্ছে একটি । আমিও তাই অনুসরণ করেছি, সমাজ চায় আমার যা চাহিদা আমি যেন তাঁর চাইতে অধিক ব্যবহার করি । যেখানে ১০০ টাকার শার্ট পরলেই আমার শরিল ঢাকার কাজ হয়ে যাবে সেখানে একটু স্মার্ট হওয়ার জন্য ৫০০ কিংবা ৫০০০ টাকার শার্ট পর । প্রয়োজন হোক আর না হোক অর্থ মজুদ করে রাখ । তুমি সামাজিক অনুষ্ঠানে যত বড়া অংকের অর্থ দান করতে পারবে সমাজে তুমি তত বেশি সম্মানিত ব্যাক্তি । সম্পদ বাড়াও যত পারো তুমার যত সম্পদ বেশি সম্মানও তত বেশি । ব্যবহার দিয়ে করুনা পাওয়া যায় সম্মান নয় ।

আর যেহেতু আমি সামাজিক জীব সেহেতু সমাজ কে অনুসরণ করেই আমাকে বেঁচে থাকতে হব । যদিওবা পরপারে এর ফল ভোগ করতে হবে কিন্তু কিছুই করার নেই । তখন যদি আমার এই জ্ঞানটা থাকে আমি সৃষ্টি কর্তাকে বলবো । হে সৃষ্টিকর্তা আমি সামাজীক জীব সমাজকে অনুসরণ করেই আমাকে চলতে হয়েছিল । আমি সমাজের চাহিদাগুলো পূরন করার চেষ্টা করেছি মাত্র । সাধারন ভাবে চলে সমাজের চাহিদাগুলো পূরন করা সম্ভব না । তাঁর আমি অসাধারন ভবে চলেছি । যদি পারেন আমাকে ক্ষমা করবেন । ধন্যবাদ সকলকে ।

<

Related Posts

9 Comments

মন্তব্য করুন