ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি | কিভাবে লোন নিবেন

আজকের পোস্টে আমরা ব্র‍্যাক এনজিও ও ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে যাচ্ছি। ব্র্যাক কি, কিভাবে ব্র‍্যাক থেকে লোন নিতে হয়, কিভাবে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হয়, তাদের শাখাসমূহের ঠিকানা ইত্যাদি সকল কিছু নিয়ে আজকের পোস্টে আলোচনা করা হবে।

ব্র্যাক কি?

ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি

ব্র্যাক হলো বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এনজিও (নন গভার্নমেন্ট অরগানাইজেশান)। শুধু বাংলাদেশেই নয়, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও সমূহের একটি। ১৯৭২ সালে ব্র‍্যাক প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি একটি নন প্রফিট সংস্থা। বাংলাদেশের সব জেলাতেই বর্তমানে ব্র‍্যাক রয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের তেরোটি দেশে ব্র‍্যাক কাজ করছে। ব্র‍্যাক মূলত অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে কাজ করে থাকে। এছাড়া কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়েও তারা সহায়তা করে থাকে। এটি এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকার দশটিরও বেশি দেশে কাজ করে যাচ্ছে। [গ্রামে বাড়ি করার জন্য ব্যাংক লোন কিভাবে পাবেন?]

ব্র‍্যাক এনজিও থেকে কি কি ধরণের লোন নেওয়া যায়?

ব্র‍্যাক বিভিন্ন ধরণের লোন প্রদান করে থাকে। তার মধ্যে কয়েকটি নিম্নে দেওয়া হলো:

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋণ:

এ ঋণ মূলত যারা ছোটখাটো একটি ব্যবসা চালু করেছে বা চালু করতে চায় এমন ব্যক্তিদের দেওয়া হয়। এমন সব ব্যক্তি যাদেরকে সাধারণত মূলধারার ব্যাংক থেকে লোন দিবে না কিংবা না দেওয়ার সুযোগ বেশি তাদেরকেই এ লোন সাধারণত দেওয়া হয়। এই ঋণ প্রকল্পের আরেক নাম ‘প্রগতি’। এ ঋণ নারী ও পুরুষ উভয়দেরকেই দেওয়া হয়। আপনি ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রগতি থেকে লোন নিতে পারবেন। লোনের পরিমাণ আপনার আর্থিক ও সামাজিক অবস্থার উপর নির্ভর করে। [একটি বাড়ি একটি খামার লোন পদ্ধতি]

নারী ঋণ:

একে ‘ডাবি’ও বলা হয়। মূলত গ্রামীণ দরিদ্র নারীদেরকে এই ঋণ প্রদান করা হয়। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যেই মূলত নারী ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। এই ঋণের জন্য কোনো জামানত রাখতে হয় না। কোনো ব্যবসা বা সম্পদে বিনিয়োগ কররে, উৎপাদনশীল সম্পদ ক্রয়ে এ ঋণ প্রদান করা হয়। ঋণের পরিমাণ ১৩ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

প্রবাসী ঋণ:

একে অভিবাসী কল্যাণ ঋণও বলা হয়। এ লোন আবার দুই ধরণের হয়ে থাকে। যথা: মাইগ্রেশন লোন ও রেমিট্যান্স লোন।

ক. মাইগ্রেশন লোন:

আমাদের অর্থনীতির একটি ভড় অংশ আশে বিদেশে যারা কাজ করে তাদের থেকে। তাই যারা বিদেশে যেতে আগ্রহী তাদেরকে এই লোন প্রদান করা হয়। প্রায় যেকোনো কেউই এই ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। এই ঋণের পরিমাণ আলোচনা সাপেক্ষ। কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। ঋণ প্রদানের পাশাপাশি ব্র‍্যাক থেকে আপনাকে অন্যান্য সহযোগিতাও দেওয়া হবে। যেমন: আপনাকে বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ প্রদান করা হবে, কিভাবে প্রতারকদের হাত থেকে সাবধান থাকবে। এই লোন বিদেশে যাওয়ার পর আয় করা শুরু করার পর থেকে পরিশোধ শুরু করা সম্ভব। [বুরো বাংলাদেশ এনজিও লোন পদ্ধতি]

খ. রেমিট্যান্স লোন:

ব্র্যাক এনজিও রেমিট্যান্স লোন

অভিবাসী পরিবারগুলোর খরচ চালানোর জন্য ও বড় কোনো খরচে সহায়তা করতে এ লোন প্রদান করা হয়। বিদেশে পাঠানো ব্যক্তি রেমিট্যান্স পাঠানো পর্যন্ত অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করতে এ লোন প্রদান করা হয়।

কৃষি ঋণ:

আমাদের দেশের প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করে। আর গ্রামীণ ব্যক্তিদের প্রায় ৮৭ শতাংশ পরিবার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভর করে। কৃষিভিত্তিক কাজে বর্গা ও যাদের নিজের জমি আছে এ দুই ধরণের কৃষকদেরই এই ঋণ মাধ্যমে সহায়তা করা হয়। ঋণের পরিমাণ ১৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। [আশা এনজিও লোন পদ্ধতি]

নির্ভরতা ঋণ:

এ ঋণ মূলত নিম্ন থেকে মাঝারি আয়ের চাকুরীজীবিদের প্রদান করা হয় যাদের মূলধারার ব্যাংক ও এনজিও থেকে সাধারণত ঋণ দেওয়া হয় না। এ ঋণ পেতে কোনো জামানত কিংবা ক্রেডিট প্রোফাইলের প্রয়োজন নেই। ঋণের নির্দিষ্ট কোনো সীমা উল্লেখিত নেই।

ব্র‍্যাক এনজিও থেকে কারা লোন পাবেন?

ব্র‍্যাক এনজিও থেকে কারা লোন পাবেন

ব্র‍্যাক এনজিও এর বেশিরভাগ ঋণ প্রকল্প থেকে দেশের যেকোনো নাগরিকই ঋণ পেতে পারেন। কিন্তু কিছু কিছু ঋণ আছে যা শুধু নারীরাই নিতে পারবে যেমন ধরুন ডাবি বা নারী ঋণ। আবার প্রবাসী ঋণ কেবল যারা অভিবাসন প্রত্যাশী তারাই নিতে পারবেন। আবার বাংলাদেশের বাহিরে যে যে দেশে লোন প্রদান করা হয় সেসকল স্থানে আবার আলাদা কিছু শর্ত থাকতে পারে।

ঋণ নেওয়ার জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন?

ঋণ নেওয়ার জন্য আপনার ভোটার আইডি কার্ড কিংবা পাসপোর্টের ফটোকপি প্রয়োজন। সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি। ব্যবসার কিছু ডিটেইলসও প্রয়োজনও হতে পারে। ৬ মাসের ব্যাংকিং স্টেটমেন্ট (সবক্ষেত্রে প্রয়োজন নয়)। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অফিস আইডি কার্ডের ফটোকপি কিংবা সেলারি সার্টিফিকেটের ফটোকপি দিতে হবে।

ব্র‍্যাক এনজিও প্রধান কার্যালয়:

ব্র‍্যাক এনজিও প্রধান কার্যালয়

ব্র‍্যাক সেন্টার, ৭৫, মহাখালী, ঢাকা – ১২১২।

ব্র‍্যাক বিভাগীয় অফিসের ঠিকানা:

চট্টগ্রাম: ১, জামাল খান,চারাগী পাহাড় মোড়, কোতয়ালী, চট্টগ্রাম।

খুলনা: রোড নং-১৭, বাড়ি নং- ৯, খালিশপুর আবাসিক এলাকা, খালিশপুর, খুলনা।

রাজশাহী: বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মরণী, রাজশাহী।

রংপুর: সিটি মার্কেট, সিটি কর্পোরেশনের পার্শ্বে, সিটি বাজার রোড বাজার শাখা, পৌর বাজার রোড, রংপুর।

সিলেট: মাদানি কমপ্লেক্স, রোড – ২, আখালিয়া ঘাট, সিলেট।

ময়মনসিংহ: ব্র‍্যাক আর্বান, ১৯, উমাদ আলী রোড, ব্লক ১৪, ময়মনসিংহ সদর ময়মনসিংহ।

বরিশাল: ব্র‍্যাক অফিস, ভাঙ্গা – বরিশাল হাইওয়ে, দারাজ বরিশাল শাখার পার্শ্ববর্তী।

এই ছিলো আজকের মতো (মার্কেটিং অফিসারের কাজ কি)। পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts

মন্তব্য করুন