বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। এই সমুদ্র সৈকতে শীত মৌসুমে পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত থাকে পুরো কুয়াকাটা সমুদ্র সৌকত। খ্রীষ্টান ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উপলক্ষে কুয়াকাটা সমুদ্র সৌকত জুরে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা দিয়েছে।
কুয়াকাটার লেবুবন থেকে ঝাউবন পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ কিলোমিটার এলাকা জুরে পর্যটকদের ভিড়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কুয়াকাটার হোটেল, রেস্তোরা ও মার্কেটসহ বিভিন্ন পর্যটন শিল্পে নিয়োজিত ব্যবসায়ীরা। পর্যটন শিল্পে নিয়োজিত ব্যবসায়িরা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আবাসিক ও অনাবাসিক হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বড়দিনের ছুটিতে পর্যটকরা সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পটুয়াখালীর সাগরকণ্যা কুয়াকাটায় ভ্রমণ করছে। পটুয়াখালীতে লঞ্চ এবং বাস এই দু’টি মাধ্যমে আসা সম্ভব। রাজধানী থেকে যারা বড়দিনে কুয়াকাটা এসেছে তারা লঞ্চ ও বাসের মাধ্যমে পটুয়াখালী আসতে পারে।
তবে লঞ্চের মাধ্যমে আসতে গেলে পটুয়াখালী নেমে বাসে করে সাগরকণ্যা কুয়াকাটায় পৌছানো সম্ভব এবং বাসে করে কোন ভোগান্তি ছাড়াই সরাসরি রাজধানি থেকে কুয়াকাটা যাওয়া সম্ভব। এছাড়াও বরিশাল বাসির স্বপ্নের পায়রা সেতু সম্পূর্ণ হওয়ার কারণে পর্যটকরা দ্রুত বাসে করে কুয়াকাটা সমুদ্র সৌকতে যেতে পারছে। বড়দিনের খুশি ভাগাভাগী করে নিতে পরিবারের সকলে একসঙ্গে কুয়াটাকাটা সমুদ্র সৌকতে সময় কাটাচ্ছে। কুয়াকাটায় ভ্রমণে বিশেষ কয়েকটি স্থান আছে যেখানে পর্যটকদের সবসময়ই ভিড় দেখা যায়। কুয়াকাটার বিশেষ কয়েকটি স্থানের নাম হচ্ছে শুঁটকি পল্লী, ক্রাব আইল্যান্ড, গঙ্গামতির জঙ্গল, ফাতরার বন, কুয়াকাটার কুয়া, সীমা বৌদ্ধ মন্দির, কেরানিপাড়া ও মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির অন্যতম।
পর্যটকরা সাগরকন্যা কুয়াকাটাতে ঘুরতে আসলে অবশ্যই কুয়াকাটা ভ্রমনের স্পটগুলো একবার হলেও ঘুরে আসে। শুঁটকি পল্লী থেকে পর্যটকরা বিভিন্ন প্রকার শুঁটকি কিনে বাড়িতে নিয়ে যায়। এখানে বলতে গেলে জেলেরা বড়সড় শুঁটকির বাজার তৈরী করে রেখেছে পর্যটকদের জন্য। এছাড়াও কুয়াকাটার নাম করণের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পর্যটকরা কুয়াকাটার কুয়া এই স্থানে ভ্রমণ করে থাকে।
কুয়াকাটার স্থানীয় মানুষেরা বসবাসরত সময়ে মৃষ্টি পানি পানের আকাঙ্খা করেন এবং এই আকাঙ্খা পূরণের জন্য কুয়াকাটার মানুষেরা সমুদ্র পারে কুয়া খনন করেন এবং এরপর থেকেই সমুদ্রসৌকতটি কুয়াকাটা নামে পরিচিত। ক্রাব আইল্যান্ড বলতে লাল কাঁকরার দ্বীপকে বোঝানো হয়েছে। এই ক্রাব আউল্যান্ডে লাল কাঁকরার সমোরহ দেখতে পাওয়া যায়। লাাল কাঁকরার আকর্ষনীয় দৃশ্য দেখতে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক সাগরকন্যা কুয়াকাটা ভ্রমণে আসেন।
এছাড়াও সীমা বৌদ্ধ মন্দির ও মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষনীয় একটি ভ্রমণের স্থান যেখানে অষ্টধাতুর বৌদ্ধ মুর্তি দেখতে পাওয়া যায় এবং মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দিরে বাংলাদেশের ভেতর সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মুর্তি দেখতে পাওয়া যায়। তাই বড়দিনের এই বিশেষ মুহুর্তে হাজার হাজার পর্যটক পটুয়াখালীর সাগরকন্যা কুয়াকাটাতে ভিড় জমিয়েছে সাগরের মৃদু হাওয়া ও পরিবেশকে অনুভূত করতে।
সূত্র: জাগোনিউজ২৪.কম