আবার টাকাগুলো গুনে নিল আনিস নিয়া। একশ বারো টাকা। ভাংতি পয়সা সহ একশ কুড়ি টাকা। ভাত ঘর ( হোটেল) এর সামনে টাকা গোনা টা বিরক্ত কর। আনিস মিয়া অনেক অনিচ্ছা শর্তে আবার টাকা টা গুননে ভাত ঘরে ডুকার প্রস্তুতি নিয়ে রিক্সাটা কে একপাশে রাখলেন। সকালে বৌয়ের সাথে অশ্লীল ঝগড়া করে কিছু না খেয়েই বের হয়ে যান অনিস মিয়া। তারপর কোন এক ফাকে চা আর দুটো বিস্কুট খেয়ে সকালের ক্ষিধা মিটান। এ সময়ে সে খুব এতো পানি খেতে চান না। কারণ পানি খেলেই তার বার বার বাথরুম পায়। সে তো আর বড় বড় ঠান্ডা ঘরে নরম গদিওয়ালা চেয়ারে বসে কাজ করে না যে যখন তখন টয়লেট সারবেন। সে সামান্য রিক্সাচালক। সে চাইলেই যখন তখন পেসেঞ্জারদের রিক্সায় বসিয়ে কাজ সারতে যেতে পারেন না। ভাত ঘরের বিপরীতে নতুন এক দোকান। অনিস মিয়া অবাক হয়ে লোহার শিকে আটকানো মুরগির ঝলসানো লাল দেহগুলো দেখছেন। অনিস মিয়ার মতে এটা হাস্যকর তার চেয়ে ও বেশি এটা বেয়াদবি। খাবার নিয়ে কাউ এমন করে??! “বড় লোকদের আজব খেয়াল। যতসব ফালতু কাজ কারবার”- বলে এক দলা থু-থু ছুড়ে দেয় পিচ ঢালা রাস্তায়। ঐ খানে ঝুলে থাকা মুরগির একটা যদি সে পেত তাহলে বাসায় চলে যেত। তার বৌ তা রাধতো ঝোল আর আলু বেশি দিয়ে। যাতে তারা একটু বেশি করে খেতে পারে। আজ তার এক মাত্র ছেলে সুরুজ দুটো ভাত বেশি খেত। প্লেট পরিষ্কার করে তার মাকে আবার বলত ” আম্মা আর দুইডা ভাত দেও, লগে একখান মুরগির গুস্ত আর কয়ডা আলু দিবা।” মায়ের মনের দুঃখের সমুদ্রের গর্জন আনিস মিয়া শুনতে পায়। ভাত আর বেশি নাই। তবু কিছু ভাত আর ঝোল গোস্ত পাতে তুলে কৃত্রিম রাগ এনে বলে, “গোস্ত দেখলে আর হুশ থাকে না তোর?” ভাত আর ঝোল মেখে গাল ফুলিয়ে মাথা নিছু করে বসে থাকে সুরুজ। আনিস মিয়া তখন কর্কশ গলায় তার ছেলে কে বলে, “ওই মাগির কথা তুই হুনিস না বাপ আমার। নিজের পোলার লগে সৎ মায়ের মত কথা কয়। লাইথ্যা মাইরা বাফের বাড়ি ফাডাইয়া দিমু। তুই খাইয়া ল বাপ।” সুরুজের মা মানে আনিস মিয়ার বৌ জানে এটা মিথ্যা সান্তনা। তবু ও উনি গাল ফুলিয়ে বলে “আমি চোইল্যা গেলে তোমাগো বান্দী-দাসির কাম গুলা কেডা করব?” এ কথা শুনে বাপ ছেলে একসাথে হেসে ওথে। সেই সাথে সুরুজের মা ও। মিথ্যা বলা নাকি মহা পাপ!!! পাগল আরজ জানাচ্ছে ‘যেই মিথ্যায় ছোট শিশুর মন ভাঙ্গে না, সে মিথ্যা কে সত্যের উপরে স্থান দেয়া হোক।’ ভাবনার পথে হরতাল জানিয়ে আনিস মিয়া হোটেলে ডুকল। এক বয় এসে বলল” আন্নে ভাই খাইবেন নাকি ফানি খাইয়তে আইছেন?” আনিস মিয়া রাগে না। সে জানে এরকম প্রাইশ হয়। বয় বেচারার ও দোষ নেই। কারণ বার বার তাকেই তো পানির জগ গুলো ভর্তি করতে হয়। আনিস মিয়া এক গাল হেসে বলল ” ভাত নেও।” নিজের ইচ্ছা কে চাপিয়ে বলল, “লগে সবজি লইয়ো।” শুধু বিধাতাই জানে তার কি খাওয়ার ইচ্ছা ছিল!! সেই শিকে ঝোলানো মুরগির ঝলসানো লাল গোস্ত নাকি নিজের পরিবারের সাথে বসে তৃপ্তির হাসি কোন এক কাক ডাকা দুপুরে??! “বাস্তবতা নিশ্চুপ, বিধাতার মায়া জালে”।
Related Posts
Paul Mescal is preparing for a high-profile debut on one of the most iconic stages in television. The acclaimed actor,…
Filming a romantic kiss in a Hallmark movie may seem like a fairy tale moment on screen, but behind the…
Fans of the hit CBS drama Tracker are in for a treat next week with an emotional and action-packed episode.…
On a brisk November evening, President-elect Donald Trump made a highly anticipated return to Madison Square Garden, not for a…
CBS is set to debut a new family comedy series titled Shifting Gears on Wednesday, January 8, 2025, at 8/7c.…
10 Comments
Leave a Reply Cancel reply
You must be logged in to post a comment.
Good post
bastobotar proticchobi
Good
thanks
nice
❤️❤️
Oh
nice
Nice
ok