সময় ১৯৭১ সাল। তখন বাংলাদেশের মানুষ তাদের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ, যুদ্ধটা মোটামুটি ভয়ংকর হতে লাগলো। গ্রাম, শহর, রাস্তা-ঘাট, এবং কি গলি গলি যেন এক ভয়াবহ দুরঅবস্থায় ঘিরে আছে। রাস্তাতে রক্তের বন্যা, বাড়ি-ঘর সব পোড়ানো।
এদিকে তখন নোয়াখালী, বাংলাবাজারে একটা লিলিপুট থাকতো, একটি ছোট গাছের ভিতরে। লিলিপুট টি চাঁদ থেকে এসে সে, পৃথিবীতে থেকে গিয়েছিল কারন তার কাছে পৃথিবী অনেক ভালো লেগেছিল। পৃথিবীতে আসার পরে তার জীবন ছিল অনেক মজার। সে ভিন্ন ভিন্ন প্রাণীদের সাথে ঘুরাঘুরি করে বেড়াতো, বিশেষ করে পাখিদের সাথে তার ভালো একটা সম্পর্ক ছিল। সে পাখিদের ডানায় করে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতো। তার জীবনটা অনেক ভালোই যাচ্ছিলো। তার সাথে ভালো বন্ধুত্ব ছিল ইমন নামের একটা ছেলের সঙ্গে। তাদের বন্ধুত্ব ছিল অনেক মজার, তারা অনেক মজা করতো। ইমন তার সাথে তেমন পারতো না কারন সে তো অনেক ছোট, সে ইমনের কানে,মাথায়,পিঠে উঠে যেতো। ইমন স্কুলে যাওয়ার সময় তাকে তার সাথে নিয়ে যেতো।
হঠাৎ তাদের গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণ করে, সবার ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। ঘর-বাড়ি থেকে আগুন আসতে আসতে গাছ-গাছালিতে লেগে যায়, আর ঠিক তখনি ওই ছোট গাছেও আগুন লেগে যায় যেখানে লিলিপুট থাকতো। লিলিপুটি তখন গাছের ভিতরেই ছিল, সে ঘুমিয়ে ছিল এবং ওই আগুনে গাছের সাথে সেও আগুনে পুড়ে মারা যায়। গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার কারনে সবাই ওই গ্রাম থেকে চলে যায় অনেক দূরে এবং গ্রামটি পুরো জন শূন্য হয়ে পড়ে। গ্রামটি যেন পুরো একটা কবরের স্থান হয়ে গেছে, মানুষতো নেই তার সাথে একটাও পশু-পাখি নেই।
সময় রাত ১টা ২০ মিনিট একদল পাকিস্তানী সেনারা ক্যাম্প করে ওই গ্রামের সাথে একটা ছোট গ্রামে।
তারা তাদের সব কাজ শেষ করে সবাই সবার ক্যাম্পের ভিতরে অবস্থান করছে, হঠাৎ সবাই একটা ভয়ানক আওয়াজ শুনতে পায় সবাই বাইরে এসে তো অবাক। আকাশে চাঁদ থেকে আগুনময় কি যেন একটা মাটিতে পড়লো। তখন তারা সবাই ওই জায়গায় যায় তা দেখার জন্য, তারা যাওয়ার পরে দেখে কি একটা আলো জ্বলে, আলোটি দেখে তারা ভেবেছিলো আকাশ থেকে আগুন পড়েছে। এই ভেবে তারা চলে যায় কিন্তু যাওয়ার সময় তারা কিছু অনুভব করে তাদের পিছনে কিছু যেনো হাঁটতেছে। তারপর সবাই সবার ক্যাম্পে চলে যায়।
রাত ২টা ৩০ মিনিট সবাই গভীর ঘুমে আকাশ পুরো মেঘমুক্ত আকাশের তারাগুলো যেনো কোনো একটা ভয়ে রয়েছে, বাতাশটাও যেন বিষাক্ত।
সময় সকাল ৮টা ১২ মিনিট কন্ট্রোল রুম থেকে ক্যাম্পে বার বার এলাট জানানো হচ্ছে কিন্তু ক্যাম্প থেকে কোনো উওর দেওয়া হচ্ছে না। তখনই কন্ট্রোল রুম থেকে আরেক বাহিনীকে পাঠানো হলো, তারা ক্যাম্পে এসে দেখে তাদের বাহিনীর সবাই মৃত, তাদের সবাই অনেক খারাপ ভাবে মারা গিয়েছে।
কারো মুখের মাংস নেই তো কারো চোখ নেই, কারো আবার পুরো শরীর পোঁড়ানো। মনে হয় কোনো ভয়ংকর প্রাণী এই রকম করেছে কিন্তু এই গ্রামেতো কিছুই নেই তাহলে?!
তখন তারা খবর নেওয়ার জন্য একটা রাত খেকে যায় ওই গ্রামে।
সন্ধ্যা ৭টা ৪ মিনিট গ্রামের মধ্যে এক ভয়াবহ শব্দ শুনা যায়, গ্রামটা পুরো আলো হয়ে যায় কিন্তু তারা এটাই বুঝতে পারে নাই শব্দ কিভাবে আসতেছে আলো কিভাবে জ্বলছে? কারন গ্রামে তারা ছাড়া আর কেউ নেই কিন্তু আওয়াজ টা এমন, যেন শত শত মানুষ ভয়ে ছুটাছুটি করছে, কত মানুষ যেন মরতে মরতে চিৎকার করছে।
ভয় যেন তাদেরকে আরো বেশি করে ঘিরে পেলছে, তাদেরকে যেন মাটি,বাতাস, পানি কিছুই মেনে নিচ্ছে না। তাদেরকে ছুড়ে পেলে দিতে চাচ্ছে, বাতাশ যেন বিষাক্ত হয়ে তাদেরকে মেরে ফেলতে চাচ্ছে।
হঠাৎ তারা আকাশের দিকে লক্ষ্য করে দেখে আলোর মতো কি একটা যেন এসে তাদেরকে ছুড়ে পেলে দেয়। তারা কেউই দাঁড়াবার শক্তি পাচ্ছিলো না, গ্রামের এই শব্দে যেন তাদের কান দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে।
তারা আরো লক্ষ্য করে যে ছোট গাছের উপর দিয়ে ছোট একটা (মানুষ) লিলিপুট বেশে আসছে, দেখতে অনেক ভয়ানক চোখ নেই দেখে মনে হয় আগুনে পুঁড়ে গেছে, মাথার একটা অংশ নেই মুখ থেকে আগুন বের হচ্ছে। সে এসে সবার চোখের মধ্যে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় এবং তাদের হৃৎপিন্ড বের করে নেয়।
তারপর থেকে ওই গ্রামে আর কোনো দিন পাকিস্তানী বাহিনী যাওয়ার সাহস পায়নি।
এবং আজও ও গ্রামে কিছু হলে রাতের বেলায় ভয়ানক লিলিপুট টাকে দেখতে পাওয়া যায়।