আসসালামু আলাইকুম,
সবাই কেমন আছেন,
আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন,
তো আজকে আমি আপনাদের মধ্য বিত্ত বাবাদের জীবন কাহিনী বলব আশা করি ভালো লাগবে
গল্প: মধ্যবিও বাবা
ছেলেটি তখন এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।অবসর সময়,তাই সময় কাটানোর জন্য ছেলেটি ভাবলো তার বাবার কাছে একটি আই প্যাড চাইবে,বাবা ছিলেন ছোটখাটো একজন চাকুরে।ছেলেটি জানত, এতে যদিও উনার কষ্ট হবে কিন্ত উনি মানা করবে না।তাই ছেলেটি কাকুতি মিনতি করে একদিন বলেই ফেললো,”বাবা আমার আইপ্যাড লাগবে” বাবা জিজ্ঞাস করল,”তার দাম কত?” ছেলেটি উত্তর দিল,এই ৫০ হাজার থেকো ৬০ হাজারের মধ্যেই হবে।বাবার তো শুনে মাথায় বাজ পরলো।এ কথা ছেলেকে বুঝতে না দিয়ে ছেলেটিকে বললেন,আচ্ছা বাবা দিব।মধ্যবিও বাবারা আসলে চমৎকার।অতি আকস্মিক নিজের জীবনটা উৎসর্গ করে দেয় তার পরিবারের জন্য।কিন্ত এর বিনিময়ে উনারা কিছুই চায় না।আসলে বাবারা গাছের মতো।গাছ যেমন গরমে অতিষ্ঠ মানুষাে রোদ থেকে বাঁচার জন্য ছায়া দেয়,খাবার জন্য ফলমূল দেয় কিন্ত বিনময়ে আমাদের কাছে কখনো মুখটি খুলে কিছুটা চায় না,ঠিক তেমননি মধ্যবিও বাবারাও সারাটা জীবন কিছুই চায় না।মধ্যবিও বাবারা সাধারণত চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।তাদের জুতো জোড়া জাে রেখে দেয়ার মতো।কারণ পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে তাদের চাহিদা আর পূরণ হয় না।তারা প্রতিদিন চাকরিতে যাওয়ার সময় রাস্তা বাটার দোকানের সামনে দিয়ে যেতেই চোখ পরে নিজের পায়ের দিকে।ঠিক কত বছর হয়ে গেছে এই বুড়ো জুতোগুলোর ঠিক নেই
চলবে……….
আগের মাসে জুতোটি ছিঁড়ে যাওয়ার মনে করেছিলো এই মাসে একটি নতুন জুতো কিনবেন।কিন্তু ছেলের আই প্যাডের আব্দারের সামনে,তার জুতো কিনা আর হলো না।জুতো জাদুঘরে না গিয়ে গেলো মুচির কাছে।মুচি দেখেই ভ্রু কুঁচকে বলল,”এই জুতো আর কতবার ঠিক করাবেন সাহেব।এবার একটু পকেট টা খুলেন।” মধ্যবিও বাবা কথা বলে চুপচাপ শুনে যায়।যেমনটি শুনেন বাসায় স্ত্রীর কাছে,বাজার হয়নি,শপিং করে দেয়নি সহ আরো কতো অভিযোগ।এভাবেই চলতে চলতে ব্যথা গুঞ্জন দেয় বুকের বাম পাশে।ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার কিছু পরীক্ষা করে বলেন,কি সব ব্লক নাকি হয়েছে।বাসে করে জ্যাম ঠেলে যেতে যেতে এখন বলে বুকেও জ্যাম হয়েছে।এতে নাকি বুকেও রিং পরাতে হবে।বুকের রিং পরানোর কথা শুনে বাবার মনে পরে মেয়েকে রিং পরানোর কথা।তার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে তার মেয়েকে কার কাছে রেখে যাবেন?তখন ভালো ছেলে খুঁজে বের করে বিয়ে দেয়ার সময় ছেলের বিশাল আব্দার।ছেলেকে নাকি ২১ কেরেটের ডায়মন্ডের আংটি দিতে হবে।এতোদিন যখন পরিবারের সকলের আব্দার মেটাতে মেটাতে সামান্য একটি জুতো কেনেননি উনি,তাহলে কি এখন মেয়েকে রিং না পড়িয়ে সে রিং পড়বে?কথাই আসে না।তাই সব সময়ের মতো এবারেও নিজের চাহিদাকে বিসর্জন দিয়ে পরিবারের চাহিদা পূরণ করলেন।তিনি জানতেন এই ভয়ানক সিন্ধান্ত নেয়ার জন্য তাকে একদিন ভয়ানক বিপদে পরতে হবে এবং সেই বিপদে পরতে তার বেশি দিন ও লাগলো না।মেয়ের বিয়ের কিছু দিন পরই রাতে আবার কাল হয়ে আসলো সেই ব্যাথা।এবারের ব্যাথা খুবই ভয়ানক,তাকে আইসিইউ ও আইসিইউ থেকে কোমাতে নিয়ে ছাড়লো।এভাবেই সেই গাছটি যে গাছ ফলমূল দিয়ে আমাদের মাথার উপর ছায়া হয়ে থাকে একদিন আমাদের একা ফেলে দিয়ে চলে যায় সূদূরে।এভাবেই মধ্যবিও বাবাদের যে কিভাবে হয় অন্ত,কেউ তা জানে না আজ পর্যন্ত।
অবশেষে আমি বলতে চাই প্রতিটি মধ্যবিও পরিবারে যেমন দুঃখ কষ্ট লেগে থাকে তেমনি সুখ ও থাকে।সে সুখ কখনো টাকা দিয়ে কিনা যায় না।তো মধ্যবিও পরিবারে ছেলেদের খুব শখ থাকে কিন্ত শখ গুলা অনেক পূরণ হয় আবার অনেকের পূরণ হয় না।আর মধ্যবিও পরিবারে ছেলেদের সব কিছু সাথে মানিয়ে নিতে শিখতে হয়। কারণ তারা মধ্য বিত্ত পরিবারের ছেলে।
আর আমি মধ্যবিও পরিবারের ছেলেদের উদ্দেশে বলতে চাই তোমার বাবার সামার্ত তাকলে তোমার শখের কথা বলবে না হলে তোমার শখ কে তুমি বির্সজন দাও।কারণ তুমি মধ্যবিও।
তো পরিশেষে আমি বলতে চাই মধ্যবিও পরিবারে দুঃখ কষ্ট থাকলে সুখ থাকে যা বড়লোক দের ঘরে থাকে আর মধ্যবিত্ত বাবারাই সেরা
যদি কোনো খারাপ কিছু বলে থাকি তাহলে ক্ষমা করবেন