আসসালামু আলাইকুম
সাইকোলজি কি! সাইকোলজি এর আভিধানিক অর্থ হল মনোবিজ্ঞান।স্বাস্থ্য বিজ্ঞান, মানুষের সামাজিক আচরণগত বৈশিষ্ট্য, মস্তিষ্কের কার্যকলাপ এসব কিছু নিয়ে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণই হচ্ছে সাইকোলজি। মানুষের আচরণ, চিন্তাধারা, স্মৃতির কার্যকলাম, অনুভূতি, স্বাভাবিক কাজ থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা এসব বিষয়ই সাইকোলজি বিশ্লেষণের অন্তর্ভুক্ত।
মনোবিজ্ঞানের উদ্দেশ্যঃ
সাইকোলজি বা মনোবিজ্ঞানের আসল উদ্দেশ্য হল মানুষের কাজ বা বৈশিষ্ট্যগুলোকে বর্ণনা করা, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা, মানুষ কি করতে পারে তার ধারণ করা, আর এসব জ্ঞানের মধ্য দিয়ে মানুষকে পরিবর্তন করা। মানুষের জীবনের বিভিন্ন পর্যায় রয়েছে,তাই সাইকোলজির ও বিভিন্ন ভাগ বা ধাপ রয়েছে, যেমন-
-মানুষের আচরণগত সাইকোলজি
-শিশু সাইকোলজি
-মানবতাবাদী বিষয়ের সাইকোলজি
-বিবর্তনীয় সাকিকোলজি
-জৈবিক, অস্বাভাবিক বিষয়ের সাইকোলজি প্রভৃতি।
সাইকোলজির প্রয়োজনীয়তাঃ সাইকোলজির জ্ঞান মানুষের জীবনে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখে, কারণ, সাইকোলজি চর্চার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে কেন আমরা কি করি, যে কোন কাজ বা অনুভূতি বা উপলব্ধির কারণ আমরা জানতে পারি। আর এই ধরণের পেশাদার জ্ঞানের মাধ্যমে একজন মনোবিজ্ঞানী মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে, বিভিন্ন মানুসিক চাপ থেকে নিজেকে বাঁচাতে, এবং বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তিযুক্ত ধারণ গ্রহণে সাহায্য করতে পারে। আমরা যখন আমাদের অসুখের কারণ জানতে পারব, তখন তার প্রতিকার করতে বা সে হিসেবে পদক্ষেরপ নেয়াটা অনেক সহজ হবে। এ কারণেই আমাদের নিজেদের মনের খবর রাখা জরুরি।
সুন্দর শরীরের জন্য সুন্দর মনের খুব প্রয়োজন। একটা অর্থপুর্ণ জীবনযাপনের জন্য আপনা আমার সামাজিক মেলামেশা, ভাল কাজ করা, মানুষকে সাহায্য করা, নিজেকে হিংসা, খারাপ কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে, নিজের দুশ্চিন্তা, হতাশা থেকে দূরে থাকতে আমাদের মানুসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজড় রাখতে হবে। মনোবিজ্ঞান আমাদের দৈনন্দিন জিবনে চলাচল, অন্য মানুষের সাথে মেলামেশা, সামাজিক জীবনযাপনের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য খুব প্রয়োজনীয়। আপনার সামনের মানুষটা কি ভাবছে, কিভাবে তার সাথে সুন্দর একটা সম্পর্ক তৈরি করবেন, সেটা মনোবিজ্ঞান চর্চা আপনার জন্য সহজ করে তোলে। কিভাবে নিজের খারাপগুলো থেকে নিজেকে বাঁচাবেন তার উপায় তৈরি করে।
মনোবিজ্ঞানের ব্যবহারঃ মনোবিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে আমরা –
-জীবনের বিভিন্নধাপে অনুপ্রেরণা পেতে পারি
-যে কোন পরিস্থিতি সামলে হাসিখুশি থাকতে পারি
-নিজেকে শক্তিশালী তৈরি করতে পারি
-জীবনের লক্ষ্যে অটুট থাকতে পারি
-যে কোন সম্পর্ক আরো মজবুত করতে পারি।
কখন আপনার মনোবিজ্ঞানীর সাহাযা নেয়া উচিতঃ
মনোবিজ্ঞানীরা আপনাকে সাহাযের লক্ষ্যে আপনার ভাবনা, চিন্তাধারা, অনুভূতি, আচরণগত সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ ও চিহ্নিত করতে পারে। আর তার প্রক্ষিতে আপনাকে পরামর্শ দিতে পারে কিভাবে কি করলে আপনার মন শান্ত হবে। সাধারণত নিচের বিষয়গুলো যদি আপনার স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত করে, তাহলে আপনার একজন মনোবিজ্ঞানীর সাহাযে নেয়া উচিত।
-প্রচন্ড মানুসিক চিন্তা(কারণ বা অকারণে)
– অধিক হতাশা
-কোন ঘটনার কারণ পাওয়া ভয় যা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না
-পারিবারিক বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে তৈরি সমস্যা
-খারাপ অভ্যাস বা আসক্তি যা কোনভাবেই ছাড়তে পারছেন না মূলত আপনার যে কোন মানুসিম সমস্যা যেটা আপনি নিজের আওতায় আনতে পারছেন না,
এসব ক্ষেত্রে একজন মনোবিজ্ঞানী আপনাকে সাহায্য করতে পারে। বা আপনি নিজেও সাধারণ বিষয়গুলো চর্চার মাধ্যমে নিজেকে নিজেই সাহায্য করতে পারেন।
ধন্যবাদ।