দার্শনিক
সারারাত তপ্ত আগুনের সামনে যে লোকটি
রাষ্ট্র আর মানবতার গান গাইতো সে লোকটি
সেদিন মরে গ্যাছে,
তাই রাত হলে এখন আর কোথাও আগুন জ্বলে না,
মফস্বলের অলিগলি ঘোর অমানিশায় ঢেকে আছে।পরিচয় নেই বোলে তার সাথে কেউ কখনো,
যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করে নি।
সবাই জানতো তি-নি,
বুকপকেটে এক অলীক স্বপ্ন নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন।
দিন দিন,
প্রেম আর হেমলকের প্রাচুর্যতা কমে যাচ্ছে বলে-
রাতভর বিশুদ্ধ গালমন্দ দিতেন রাষ্ট্রপ্রধানকে।যে রাতে তার মৃত্যু হয়
তার আত্মা মৃত পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ কোরে,
সোজা মধ্য-আকাশে উড়ে যায়;তখন
মহাকাশ থেকে নেমে আসে এক পশলা শীতল বৃষ্টি- অলৌকিকতায়।
এখন ঘুমানোর সময় নেই
এখন ঘুমানোর সময় নেই রাষ্ট্র
গৃহযুদ্ধের দামামা বাঁজছে দেশজুড়ে
রক্তের হ্রদ বহমান শহরে শহরে-
আজো তবুও স্থির হয়ে আছো; জ্যাজের বিষাদ সঙ্গীতে তুমি বাজছো!এখন ঘুমানোর সময় নেই রাষ্ট্র
রাত- ১টা
রাত- ৩টা
ভোর ৬টা
দ্যাখো মদিরার দোকান গিয়েছে খুলে;
যুবকেরা উড়িয়েছে কণ্টকাবৃত ডানা নরকের পানে- পিতৃবৎ ভুলে।
সমাজদর্পণ ক্ষীণ, ক্ষমতার আগুনে আজ সব পথভ্রষ্ট।কল্পিত মেঘে ভেসে ভেসে আর কতদূর যাবে বলো?
ঘুমোতে পারলে আবার কিছুদূর যাওয়া যেতো- কিন্তু, কোথায় বলো?
মানবতা আজ: কোমল আপেলের উপর ছোঁড়ার আঘাত;
অথচ কোন খেদ নেয় রাষ্ট্রের?-
কার দোষ বলো?
দর্শন
পৃথিবীটা ক্রমশ লাল হয়ে উঠেছে
মৃত শালিকের দুর্গন্ধে ভরে উঠছে
– নগর বন্দর
তারা পৃথিবীকে আজো প্রচন্ড ঘৃণা করেন কারণ,
তারা অতি পরিমাণে নেশাগ্রস্ত।
তারা পানশালার কুটিরে কাটিয়ে দেন
নির্ঘুম
রাত- অলীক স্বপ্ন দেখে
দিন- প্রাক্তন স্মৃতি ভেবে
সন্ধ্যা- আগামীর কথা মনে কোরে।
পৃথিবীটাকে তারা শরাবের রঙিন গ্লাসে কোরে দ্যাখে-
ক’টি অর্ধ-গলিত বরফকুঁচি
ক’ফোঁটা তরল আর
কাঁচের গ্লাসের বাইরের বিন্দু বিন্দু জল।মাতাল হলেই তারা লীন হয়ে যাওয়া মৃত খুঁটে ইতিহাস রচনা করে,
তাদের পরিধানকৃত অপরিচ্ছন্ন কোট থেকে
বের হয়ে আসতে থাকে ভবিষ্যৎবাণী।
মদ ফুরোলেই তারা আবার হিসেব কষতে থাকে;
সৃষ্টি হয় সংখ্যামালার,চিত্রকলার, শব্দমালার এবং নক্ষত্রমালার।
টেবিলের উপরের কমলাটা রং বদলাচ্ছে- ক্রমশ লাল হয়ে উঠেছে।
ছবিঃ ভিনসেন্ট ভ্যাগ গগ (১৮৯০), গম ক্ষেতে উড়ন্ত কাকেরা।