লকডাউন এর এই সময়ে আমরা একটি সুস্থ ও নীরোগ শরীরের গুরুত্ব খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পারছি। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি তাদেরকে করোনা একেবারে দুর্বল করতে পারছে না। অথচ যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, অস্বাস্থ্যকর, ভাজা- পোড়া, ফাস্টফুড খাবারের অভ্যাস বেশি তারা খুব সহজেই করোনার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। তাই আজ থেকে প্রতিজ্ঞা করুন আপনার বদভ্যাসগুলোকে ত্যাগ করে একটি সুন্দর অভ্যাস করে তোলার। তাই আজ চলুন জেনে নেব কিভাবে করোনার এই সময়ে একটি সুন্দর স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলবেন।
১) খাবারে বৈচিত্র্য রাখুনঃ সুস্বাস্থ্যের জন্য আমাদের চল্লিশটিরও বেশি আলাদা পুষ্টি দরকার এবং কোনও একক খাদ্যই সবগুলো একসাথে সরবরাহ করতে পারে না। তাই খাবারে শর্করা, আমিষ ও চর্বির ভারসাম্য বজায় রাখুন।
২) প্রচুর ফল ও সবজি গ্রহণ করুনঃ আমাদের পর্যাপ্ত ভিটামিন, খনিজের চাহিদা পূরণ করার জন্য ফল এবং শাকসব্জি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবারগুলির মধ্যে একটি। আমাদের প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ ধরনের ফল ও সবজি খাওয়ার চেষ্টা করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, প্রাতঃরাশে এক গ্লাস তাজা ফলের রস, একটি আপেল খেতে পারেন। বিকেলে স্ন্যাকস হিসাবে একটি তরমুজের থেকে এক টুকরো এবং সবুজ চা। আর প্রতিটি খাবারের পর বিভিন্ন ফল ও সবজির একটি সালাদ হতে পারে যেকোনো মিষ্টিজাতীয় ডেজার্টের বিকল্প। সাথে রাখতে পারেন বিভিন্ন ধরনের বাদাম, কিসমিস ।
৩) লবণ ও চিনি খাওয়া কমানঃ উচ্চ মাত্রায় লবণ গ্রহণের ফলে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।চিনি মিষ্টি এবং একটি আকর্ষণীয় স্বাদের। অথচ চিনি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে এটা আমরা সবাই জানি। বরং আমরা চিনির পরিবর্তে ফল ব্যবহার করতে পারি আমাদের খাবার এবং পানীয়গুলো মিষ্টি করতে।
৪) পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃ বড়দের দিনে কমপক্ষে ১.৫ লিটার তরল পান করা দরকার। পানির পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর ডাবের পানি বা কোন ফলের রস খেতে পারেন। পানি শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তবে চা-কফি বা এ ধরনের ক্যাফেইনযুক্ত কোন তরল, অ্যালকোহল জাতীয় তরল কিংবা চিনিযুক্ত শরবত খেয়ে পানির চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করবেন না। এতে হিতে বিপরীত হবে।
৫) স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুনঃ আমাদের প্রত্যেকের জন্য সঠিক ওজন আমাদের লিঙ্গ, উচ্চতা, বয়স এর উপর নির্ভর করে। স্থূলত্ব এবং অতিরিক্ত ওজন দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ফলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ধরণের রোগের ঝুঁকি বাড়ে। আমাদের শরীরের অতিরিক্ত মেদ আমাদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাবার থেকে আসে। আবার যারা বেশিরভাগ সময় অলস জীবনযাপন করেন এবং শারীরিক পরিশ্রম কম করেন তারাও অতিরিক্ত ওজন জনিত সমস্যায় ভোগেন। বিষয়টি অনেকটা একে অপরের পরিপূরক। যাদের শরীরের মেদ বেশি তাদেরই শারীরিক পরিশ্রমের অভ্যাস কম এবং খাওয়ার পরিমাণ বেশি। তাই আজ থেকেই এই অভ্যাস ত্যাগ করুন পর্যাপ্ত পরিমাণে শারীরিক পরিশ্রমের দ্বারা শরীরকে সচল রাখুন এবং খাবার গ্রহণে সচেতনতা অবলম্বন করুন।