শুদ্ধ বাংলা ভাষায় কথা বলার নিয়ম (৪ টি স্টেপ) : শুদ্ধভাবে গুছিয়ে সাবলীলভাবে কথা বলাটাও আজকাল ম্যাচুরিটির মধ্যে পরে। তাই কে না চায় শুদ্ধভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে! অফিস কলিকদের সাথে,রেস্টুরেন্টে খাবার অর্ডারে,বন্ধুদের আড্ডায়,ক্লাসে প্রেজেন্টেশন দিতে,মোবাইল ফোনে কথা বলতে,কোনো অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে এমনকি ,চাকুরীর ইন্টারভিও দিতে গিয়ে কথা বলতে আটকে যাওয়া হচ্ছে?
আবার বন্ধুদের দেখা যায় অহঃরহঃ শুদ্ধভাষায় সাবলীলভাবে সর্বত্র কথা বলতে! সেখানে নিজেকে নার্ভাস মনে করা, কথা বলতে গিয়ে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করে ফেলা হয় বার বার। কিন্তু ইচ্ছে হয় বাকি বন্ধুদের মতো কোনোরুপ আঞ্চলিকতা ব্যতিরেকে শুদ্ধভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে! খুব সহজেই এই জরতা কাটিয়ে উঠতে পারেন। নীচের চারটি স্টেপ ভালোভাবে পরতে থাকুন।
শুদ্ধ বাংলা ভাষায় কথা বলার নিয়ম (৪ টি স্টেপ)
প্রথমতঃ নিজেকে নিজে বিশ্বাস করোন বাকিরা যদি শুদ্ধভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে পারে তবে আপনিও পারবেন। বন্ধুদের সাথে কথা বলতে গেলে বন্ধুদের কে বলে ফেলায় হয়_ বন্ধু তুমি আমার সাথে ঘুরতে যাবা? আচ্ছা তুমি ফুসকা খাবা নাকি ঝালমুড়ি? বন্ধু তোমি আমার কাজটা কিন্তু করে দিলা না?
পরশুদিন তোমারে দেখা আইলাম শপিং মলে, তুমি একাই গেলা আমাকে জানাইলাও না ইত্যাদি নানারকমের ভুল শব্দ আমরা ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু একটু কমন বিষয় পালটে ফেললেই শুদ্ধভাবে কথা বলা যায়। এজন্য শব্দের শেষে আ-কার (া) বাদ দিয়ে এ-কার (ে) ব্যবহার করতে হবে।
যেমনঃ আমরা বলে থাকি_ যাবা, খাবা,করবা,ঘুরবা,ফিরবা,বলবা,দিবা,নিবা,গাইবা, জানাইবা,আইবা ইত্যাদি সকল শব্দ কে এ-কার তথা যাবা কে যাবে, খাবা কে খাবে, করবা কে করবে, ঘুরবা কে ঘুরবে, ফিরবা কে ফিরবে, বলবা কে বলবে, দিবা কে দেবে, নিবা কে নেবে, গাইবা কে গাবে,জানাইবা কে জানাবে, আইবা কে আসবে করে নিতে পারি।
_ এই মামা আমি ঢাকা যাবো তুমি কি যাইবা (অশুদ্ধ)?
এবারে দেখুন যাইবা কে যাবে করলে ভাষাটা কতটা সুন্দর হয়- এই মামা আমি ঢাকা যাবো তুমি কি যাবে। এভাবে_ আমি খাবো তুমি কি খাবে?
আমাকে কি বলবা ঠিক কি হয়েছে তোমার ( অশুদ্ধ)? এবারে শুদ্ধভাবে বলবা কে বলবে বললেই ভাষা পুরোপুরিভাবে শুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে _ আমাকে কি বলবে ঠিক কি হয়ছে তোমার ( শুদ্ধ)।
বন্ধু শুনো আমি না তোমার বার্থডে পার্টিতে যাইতে পারবো না (অশুদ্ধ)! যাইতে কে যাবে বল্লে দাঁড়ায়_ বন্ধু শুনো আমি না তোমার বার্থডে পার্টিতে যেতে পারবো না (শুদ্ধ)। এভাবে যেসব শব্দ ব্যবহারে এমন আ-কার ব্যবহার করা হয় বলার ক্ষেত্রে সেগুলোকে খুব সহজেই এ-কার এ রুপান্তর করে শুদ্ধভাবে কথা বলতে পারি।
তাহলে আজ থেকে বাদ দিয়ে দিবা কি আ-কার। উপস্ দিবা নয় দেবে হবে। তাহলে আজ থেকে বাদ দিয়ে দেবে কি শব্ধের শেষে আ-কার।
দ্বিতীয়তঃ আমরা অধিকাংশ সময় ই মনে মনে নিজের সাথে নিজেই কথা বলি। কোন কথা বলার, কোন কাজ করার আগে আমরা তা নিয়ে চিন্তা করতে থাকি। যেমন আপনি কাল শপিং এ যাবেন এখন ভাবছেন আর মনে মনে কথা আওরাচ্ছেন _কাল আমি কোন জামা পইরা শপিং করতে যামু।
এই যে আপনি নিজের সাথে নিজেই কথা বলার সময় অশুদ্ধ শব্দ ব্যবহার করছেন এই অভ্যেস ত্যাগ করোন। যখন আপনি মন থেকে কিছু বলবেন সেটা যদি শুদ্ধভাবে বলতে পারেন তবেই আপনি প্রকাশেও শুদ্ধভাষায় কথা বলতে পারবেন। আপনি নিজের মনে মনেও এভাবে বলবেন যেমন_ আচ্ছা আমি কাল শপিং এ কি জামা পরে যাবো। এভাবে যত বেশি আপনি মনে মনে নিজের সাথে নিজেই শুদ্ধভাষায় কথা বলতে থাকবেন ততই আপনার চর্চা সবচেয়ে বেশি হবে।
তৃতীয়তঃ মনে মনে নিজের সাথে নিজেই যখন শুদ্ধভাষায় কথা বলতে থাকবেন তখন আপনি ভরষা পাবেন এবার প্রকাশ্যে বন্ধুদের সাথে, পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলতে। প্রথমে হয়ত আপনার শুদ্ধভাষায় শুদ্ধভাবে কথা বলা দেখে অনেক হাসবে, আপনি ইতোস্থ বোধ করবেন কিন্তু ধিরে ধিরে যখন আপনি বলতে বলতে সম্পূর্ণভাবে বলতে পারবেন তখন দেখবেন অস্বস্থিবোধ আর হচ্ছেনা।
ধিরে ধিরে জরতা কাটিয়ে বন্ধুবান্ধব, ক্লাসমেইট,পরিবারে,আত্নীয়স্বজন,প্রেজেন্টেশন,এমনি চাকুরীর ক্ষেত্রেও শুদ্ধভাবে সাবলীলভাবে কথা বলতে পারছেন।
চতুর্থতমঃ আপনাকে অধ্যবসায়ী হতে হবে । কিছুদিন চেষ্টা করলেন আবার ছেড়ে দিলেন এমন করলে কখনোই শেখা যাবেনা। আর আজকাল পরিপাটিভাবে গুছিয়ে কথা বলাটাও ম্যাচিউরিটির মধ্যে পরে। সুতরাং লেগে থাকুন,হাল ছাড়বেন না।
মনে রাখবেন, কোনো কাজই একদিনে পারা যায় না আর শুদ্ধভাবে কথা বলাটা একটি অভ্যেস। দীর্ঘসময় ধরে বলতে বলতেই পারবেন, শুদ্ধভাবে কথা বলাটা আহামরি তেমন কিছুই নয়।
খুব সহজেই এরকম হ্যাকস জানতে পাশে থাকুন, সাথেই থাকুন, আর পড়তে থাকুন Grathor । আর যুক্ত থাকুন গ্রাথোর ফেসবুক Group এ।